খালেদাকে গ্রেপ্তারের দাবি সরকারি ও বিরোধী সাংসদদের

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চলমান সহিংসতার জন্য গ্রেপ্তার করার দাবি তুলেছেন সাংসদেরা। জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার অনির্ধারিত আলোচনায় সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলের সাংসদেরাও এই দাবি তোলেন। এই আলোচনায় স্বতন্ত্র সাংসদ হাজি মো. সেলিম ২০ দলের হরতাল অবরোধ কর্মসূচিতে সংঘটিত সহিংসতায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পরিবারকে সাংসদদের এক মাসের বেতন দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তাঁকে সমর্থন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে অনির্ধারিত এই আলোচনা শুরু করেন সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশটাকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান। দেশ বাঁচাতে হলে তাঁকে আইনের আওতায় নিতে হবে। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, অপরাধীর স্থান ওই অফিসে নয়। অপরাধীর স্থান জেলখানায়, অন্য কোথাও নয়। সংসদ চায় অবিলম্বে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হোক। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসে গেছে। কারণ, মানুষ শান্তি চায়, সন্ত্রাস চায় না। সংসদকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সন্ত্রাস ও নাশকতার সঙ্গে কোনো আপস নয়। সরকার কোনো দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্র নয়। এখানে দয়ার কোনো স্থান নেই। নাশকতাকে প্রশ্রয় দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা যাবে না। জনগণের জানমাল রক্ষায় কঠোর হতে হবে। সাত দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘তাঁর (খালেদা জিয়া) বিচারের দাবি উঠেছে। উনি আরামে থেকে অরাজকতার নির্দেশ দিচ্ছেন। আউটসোর্সিং করে মানুষ মারা হচ্ছে। তাই তাঁকে জবাব দিতে হবে। সন্ত্রাস করে যদি দাবি আদায় করা যেত, তাহলে বিশ্বে রাজনীতি থাকত না। আশির দশকে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগপৎ আন্দোলন ভুল ছিল। আওয়ামী লীগ তখন ভুল না করলে আজ তাদের অস্তিত্ব থাকত না। ’ আওয়ামী লীগের শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এসব বন্ধ না করলে বিএনপি অফিস থেকে জনগণ আপনাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে প্রকাশ্য দিবালোকে বিচার করতে বাধ্য হবে। অনেকে বলছেন, দেশে রাজনৈতিক সংকট চলছে। কিসের সংকট! কোনো রাজনীতির সংকট নেই। যেটা হচ্ছে সেটা জঙ্গি সংকট।’
আমির হোসেন আমু বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণকে পাশে না পেয়ে খালেদা জিয়া জনগণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। পাশে পাননি বলেই মানুষকে হত্যা করছেন। গণমাধ্যমকে হরতাল অবরোধের সংবাদ প্রচার না করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের আবদুল মতিন খসরু বলেন, গণমাধ্যমে প্রচার বন্ধ হলে কালই হরতাল অবরোধ বন্ধ হয়ে যাবে। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, একজন মানুষ পোড়াবেন, আরেকজন তাঁদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন। এই ইঁদুর বিড়াল খেলা কত দিন চলবে? সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি না পারে ইতিহাসের কাছে দায়ী থাকতে হবে সরকারকে। বিরোধী দল কোনো দায় নেবে না। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু বলেন, উনি অবরুদ্ধ নন। বরং তিনিই ১৬ কোটি মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা সরকারকেই দিতে হবে। অনির্ধারিত আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর কবির নানক। অনির্ধারিত আলোচনা শেষে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।

No comments

Powered by Blogger.