সঙ্কুচিত হয়ে আসছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা

বাংলাদেশের অব্যাহতভাবে অবনতি ঘটছে মানবাধিকার পরিস্থিতির। সঙ্কুচিত হয়ে আসছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। বেড়ে চলেছে রাজনৈতিক সহিংসতা। অব্যাহত রয়েছে গণমাধ্যম সম্পাদক আর নির্বাহীদের হয়রানি। তাদের ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি করেছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, বোমা বহনে সন্দেহভাজন যে কাউকে সরাসরি গুলি চালানো হবে। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে। বিবৃতিতে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে সরকারের প্রতি ৪ দফা আহ্বান জানিয়েছে তারা। ওই চারটি দফা হলো- এক. সকল অগ্নিসংযোগ-হামলার পূর্ণাঙ্গ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করুন ও সুষ্ঠু বিচারের মধ্য দিয়ে দোষীদের ন্যায়বিচারের আওতায় আনুন। দুই. শুধু মত প্রকাশ বা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কারণে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে মুক্ত করুন। তিন. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যেন অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় বল প্রয়োগ না করেন এবং তা যেন আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী হয়, সেটা নিশ্চিত করুন। চার. রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান যেন মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলে, সেটা নিশ্চিত করুন। এটা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ। এতে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট বর্ণনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মধ্যকার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কারণে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ৯০-এর দশকের শুরু থেকে এ দু’নেতার মধ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। রাজপথে চলমান বিএনপির প্রতিবাদ গত বছর ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে, যা তারা বর্জন করেছিল। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানায় তারা। সংবিধান থেকে সে বিধান সংশোধন করে সরকার এর জবাব দেয়। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মধ্যবর্তী সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তাব দেয়। বিএনপি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়। অর্ধেকের বেশি আসন ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন। এ বছর ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের বছরপূর্তিতে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। সরকারকে পদত্যাগ এবং নতুন নির্বাচনের দাবি জানায়। এদিকে পাল্টা সমাবেশের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে সরকার সমর্থকরা। পুলিশ সকল প্রকার সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। সরকার ও বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা প্রতিহত করতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে তারা জানায়। এর জবাবে বিএনপি অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশব্যাপী অবরোধ পালনে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানায়। এ ছাড়াও পুলিশ ৩রা জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
অগ্নিসংযোগ হামলার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বিরোধী দল অবরোধ ডাকার পর এ পর্যন্ত শতাধিক যানবাহন ও বাসে অগ্নিসংযোগ হয়েছে। আর এজন্য সরকার আর বিরোধী দল একে অপরকে দোষারোপ করেছে। এতে আহত হয়েছে অসংখ্য, প্রাণহানি ঘটেছে এক ডজনেরও বেশি। বেশির ভাগ অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিরোধীদের প্রতিবাদের সঙ্গে যোগসূত্র আছে বলে মনে হলেও কমপক্ষে এমন দুটি ঘটনায় টার্গেট হয়েছেন বিরোধী দলের রাজনীতিকরা। ১০ই জানুয়ারি অজ্ঞাত হামলাকারীরা বিএনপি নেত্রীর উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১৩ই জানুয়ারি অজ্ঞাত তিন ব্যক্তি বিএনপি নেত্রীর আরেক উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানের গাড়িতে হামলা করে। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন। কর্তৃপক্ষ এসব হামলার বিষয়ে নিরপেক্ষ ও পূর্ণ কোন তদন্ত শুরু করেনি। এর পরিবর্তে তারা শুধু বিরোধী নেতা এবং সমর্থকদের দোষারোপ করেছে।
অব্যাহত হত্যাকান্ডের বিষয়ে বলা হয়, দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাত বা নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। প্রতিবাদ চলাকালে এসব হত্যাকান্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। চলমান অস্থিরতার মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোতায়েন করা হয়। তারা পেট্রলবোমা বহনকারী যে কারও ওপর সরাসরি গুলি চালানোর অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের শুধুমাত্র সর্বশেষ অবলম্বন হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার কথা বলা আছে। এছাড়া শুধু নিজেদের বা অন্যদের জীবন রক্ষার্থে তা ব্যবহার করা যাবে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতির মতো ক্ষেত্রেও বলপ্রয়োগ অবশ্যই হতে হবে প্রয়োজনীয়তার নীতির ওপর ভিত্তি করে। সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা বল প্রয়োগ সুনির্দিষ্টভাবে জাতিসংঘ প্রণীত মানদ- অনুসরণ করে হতে হবে, যেমনটা বলা হয়েছে ইউএন কোড অব কনডাক্ট ফর ল’ এনফোর্সমেন্ট অফিসিয়ালস (১৯৭৯) এবং ইউএন বেসিক প্রিন্সিপালস অন দ্য ইউজ অব ফোর্স অ্যান্ড ফায়ার আর্মস বাই ল’ এনফোর্সমেন্ট অফিসিয়ালস (১৯৯০) শীর্ষক আচরণ বিধিতে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি বলেছে, আইন প্রয়োগকারী সদস্যরা যেন অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় বল প্রয়োগ না করেন এবং তেমনটা করা হলেও যেন তা আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী হয়। সন্দেহভাজন বেআইনি হত্যাকা- এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে মৃত্যু অথবা আহতের সকল ঘটনা পূর্ণাঙ্গ এবং স্বতন্ত্র তদন্ত করতেও সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। মত প্রকাশের স্বাধীনতা অব্যাহত হামলার মুখে উল্লেখ করে বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সঙ্কুচিত হচ্ছে। পর্নোগ্রাফি মামলায় একুশে টিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ ও প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বলা হয়, চ্যানেলটি বিরোধী বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মকা-ের ব্যাপক ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করছিল। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোর রিপোর্ট থেকে ইঙ্গিত মেলে বিরোধী দলের কর্মকা- সম্প্রচারে নিরুৎসাহিত করতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকোচনের বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রায়ই গুরুত্বারোপ করেছে। সংবাদপ্রত্র আর টিভি সম্পাদকরা সরকার সমালোচকদের অভিমত প্রকাশ বা সম্প্রচার না করতে প্রচ- চাপে রয়েছেন। বিরোধী দলের প্রতি ঝোঁক এমন ব্যক্তিদের প্রায়ই টকশোতে অংশগ্রহণ থেকে বাধা দেয়া হয়েছে। আবদুস সালামের গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য হয়েছে বলে বিবেচনা করে অ্যামনেস্টি। আর অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বিরোধী নেতাদের ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সমাবেশ করার স্বাধীনতা প্রয়োগের কারণেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। ৬ই জানুয়ারি প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এক পুলিশ সদস্য বলেন, কয়েকদিনে একাধিক বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসব হামলা বিরোধীরা করেছে বলে অভিযোগ আনা হয়। এ অভিযোগের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে অতীতে তার বিরুদ্ধে আনা পুলিশি অভিযোগের। সেখানে বলা হয়েছিল, দলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে বিএনপি সমর্থকদের করা যে কোন সহিংসতার দায় তার বহন করা উচিত। পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন তথ্যপ্রমাণ আনেনি আর ওই অভিযোগের এখনও কোন সমাধা হয় নি। ৮ই জানুয়ারি একই রকম অভিযোগের ভিত্তিতে নিজ বাসা থেকে আটক করা হয় আরেক বিএনপি নেতা শমসের মবিন চৌধুরীকে। এ দুজনের কেউই এসব সহিংস ঘটনার পক্ষ নিয়েছেন বা সম্পৃক্ত ছিলেন এমনটা জানা নেই। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতীয়মান হয়। তাদেরকে আটক রাখা এবং দলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে কর্তৃপক্ষের জন্য এটা একটা অজুহাত। শুধু দলে তাদের অবস্থানের কারণেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। অ্যামনেস্টি তাদের উভয়ের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করতে হবে। মতপ্রকাশ বা সমাবেশের অধিকার প্রয়োগের জন্য ঢালাওভাবে কাউকে যেন গ্রেপ্তার, হয়রানি বা হুমকি ধমকি দেয়া না হয় তা নিশ্চিত করে সরকারকে এটা করতে হবে।
আদালত অবমাননা সংক্রান্ত রায়ের প্রসঙ্গে বলা হয়, পৃথক আরেকটি প্রসঙ্গে খর্ব হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি) সমালোচনা বন্ধ করতে আদালত অবমাননা ব্যবহার করছে বলে মনে হচ্ছে। আদালতের আইনি প্রতিক্রিয়া নিয়ে ব্লগপোস্টে মন্তব্য করার জন্য ২রা ডিসেম্বর বৃটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে ৫০০০ টাকা জরিমানা করে আদালত। ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে রায় নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ব্যাপক উদ্বেগ এসেছে। ডিসেম্বরে যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্ট। এতে, যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মত প্রকাশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসছে বলে মন্তব্য করে ওই তিন সংস্থা। দৈনিক ‘প্রথম আলো’তে ৫০ বাংলাদেশীর স্বাক্ষর করা একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। সেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করতে আদালত অবমাননাকে ব্যবহার করা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। উদ্বেগ জানানো হয়, ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আদালতের রায় নিয়ে। ওই চিঠি প্রকাশের জবাবে আইসিটির রেজিস্ট্রার সাংবাদিকদের বলেন, ডেভিড বার্গম্যানের আদালত অবমাননার রায় নিয়ে যারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাদেরকে ২৭শে জানুয়ারির মধ্যে তাদের বিবৃতির ব্যাখ্যা দিতে হবে। আইসিটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সম্পাদক ওই বিবৃতির একটি কপি আদালতে দাখিল করেছেন। ওই বিবৃতির ওপরে উল্লেখ ছিল ড. শাহদিন মালিকের নাম আর প্রথম আলোতে বিবৃতিটি ই-মেইল করেছিলেন হেনা শামস আহমেদ। তাদের দুজনকে বাকি স্বাক্ষরকারীদের ঠিকানা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বিবৃতির শেষে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এ ঘটনায় সংস্থাটি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, কেননা এটা অন্যায়ভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করে। ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অব সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আইসিসিপিআর)-এর সদস্য বিচারব্যবস্থা সহ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করতে হবে। যে কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞাকে সুনির্দিষ্টভাবে অবশ্যই জাতীয় নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা, জনসাস্থ্য, মূল্যবোধ বা অন্যের অধিকারের বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় এবং যথাযথ হতে হবে। বার্গম্যানের ব্লগে এগুলোর কোনটাই হুমকির মুখে ছিল না।

No comments

Powered by Blogger.