স্বপ্ন দেখতে মানা নেই ঝিরিনা মুন্ডার

এখন আর স্বপ্ন দেখতে মানা নেই ঝিরিনা মুন্ডার। উচ্চশিক্ষিত হয়ে তিনি পরিবার ও নিজের জাতিগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে পারবেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক দিপেন্দ্রনাথ সরকার গত বুধবার মুঠোফোনে এই খবর জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল মহিলা কলেজ থেকে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া আদিবাসী মেয়ে ঝিরিনা মুন্ডাকে নিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘স্বপ্ন দেখতে মানা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দিপেন্দ্রনাথ সরকার নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউপির প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রাম বনগাঁ গিয়ে ঝিরিনাকে খুঁজে বের করেন। তিনি রাজশাহীতে এসে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তিনি রাজশাহী শহরে একটি মেসে ঝিরিনার থাকার ব্যবস্থা করেন। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির বই-খাতা কিনে দেন ও থাকা-খাওয়ার খরচের ব্যবস্থাও করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ঝিরিনা মুন্ডা। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে। ফলাফলের খবরে মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। মা-মেয়ে মিলে এমন সুখের কান্না কখনো কাঁদিনি। আমি এখন স্বপ্ন দেখি পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষক হব। আর শিক্ষক হতে পারলে পিছিয়ে পড়া আদিবাসীদের জন্যও কাজ করব।’
ছোটবেলায় ঝিরিনা মুন্ডার খেতমজুর বাবার মৃত্যু হয়। মা ও বোনের সঙ্গে জমিতে কৃষিকাজ করে লেখাপড়া করেছেন ঝিরিনা মুন্ডা।

No comments

Powered by Blogger.