কূটনীতিকদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো

দেশের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় যে কোন কার্যক্রম পরিচালনায় বিদেশী সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধিদের সরকার নির্দেশিত নীতিমালা পুরোপুরি অনুসরণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ক্যাম্পে থাকা নিবন্ধিত রোহিঙ্গা এবং কক্সবাজার সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিকদের যে কোন সহায়তা দেয়ার আগে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ‘অনুমতি গ্রহণ’ এবং কোথায় কার মাধ্যমে কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে তার ‘স্বচ্ছতা’ নিশ্চিত করতে দাতা দেশ ও আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল পররাষ্ট্র দপ্তরে এক কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে ওই নির্দেশনা দেয়া হয়। পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশে থাকা জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ঢাকাস্থ ইইউ জোটভুক্ত মিশনগুলোর প্রধানগণ, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার সহ ২০’র অধিক কূটনীতিক ও প্রতিনিধি ওই ব্রিফিংয়ে অংশ নেন। পররাষ্ট্র সচিবের দপ্তর সংলগ্ন সভাকক্ষে গতকাল বিকালে প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় স্থায়ী হয় ওই ব্রিফিং। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন ধরে থাকা রোহিঙ্গা এবং অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিকদের বিষয়ে সরকার যে জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে এবং ওই নির্দেশনার আলোকে গত এক বছর ধরে চলা সরকারি কার্যক্রমের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় বিশেষ করে দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের অবহিত করতে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্র সচিব সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে তাদের বিস্তারিত অবহিত করেন। রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশীদের তরফে যে মানবিক সহায়তা দেয়া হয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রতিনিধি এটি অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। তবে সেখানে মানবিক সহায়তার নামে কতিপয় সংস্থা-সংগঠন সরকার নির্দেশিত নীতিমালার বাইরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে- এমন অভিযোগও তুলেন পররাষ্ট্র সচিব। এমন কার্যক্রম বন্ধে উপস্থিত রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনীতিক প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চান পররাষ্ট্র সচিব। বৈঠকের পর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক মানবজমিনকে বলেন, রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়নের পর থেকে গত এক বছরে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সে সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে অবহিত করা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট দাতা দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সরকার নির্দেশিত নীতিমালা পুরোপুরি অনুসরণ করে স্বচ্ছতার সঙ্গে অর্থ ব্যয়সহ যে কোন কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সমস্যা মিয়ানমার থেকে সৃষ্ট এবং এটির সমাধান মিয়ানমারে খুঁজতে উপস্থিত প্রতিনিধিদের অনুরোধ করেছেন বলেও জানান শহীদুল হক। সচিব জানান, ব্রিফিংয়ে দুটি ভাগ ছিল। তিনি সরকারের কৌশলপত্রের বিষয়টি উপস্থিত প্রতিনিধিদের অবহিত করেছেন। দ্বিতীয় পর্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে থাকা কয়েক লাখ অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিকদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম’র সঙ্গে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে সে সম্পর্কে আইওএম’র প্রতিনিধি ব্রিফ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.