‘বঞ্চিত’ শিশুদের তুলিতে স্বপ্নের বিদ্যালয়

(খেলার মাঠ, ভবন এমনকি পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই ওদের। ওরা স্বপ্ন দেখে, একদিন ভবন, মাঠ সবই হবে। সেই স্বপ্নটাই তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছিল গতকাল। পিরোজপুরের কাউখালী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো) বহুতল বিদ্যালয় ভবনের সামনে বিশাল খেলার মাঠ। বিদ্যালয় চত্বরে ফুলের বাগান। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে সারি সারি চেয়ার-টেবিল। না, এটা সত্যিকারের কোনো বিদ্যালয় নয়। শিশুরা স্বপ্ন দেখে এমন বিদ্যালয়ে পড়ার। খুদে শিশুরা ছবি এঁকে বুঝিয়েছে, তাদের এমন বিদ্যালয় চাই। গতকাল রোববার পিরোজপুরের কাউখালী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে ৫০ জন শিক্ষার্থী ‘আমার স্বপ্নের বিদ্যালয়’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। কাঙ্ক্ষিত বিদ্যালয়টি কেমন হওয়া উচিত তা রং-তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তোলে খুদে আঁকিয়েরা। কাউখালী তথ্য সংগ্রহশালা ও কাউখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আহসান কবির বিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষার্থীদের হাতে কাগজ ও রং-পেনসিল তুলে দিয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ পাঠদানের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। খেলার মাঠ নেই।’
প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া তাসনিম। তাসফিয়া এঁকেছে বহুতল বিদ্যালয় ভবনের সামনে বিশাল খেলার মাঠ। বিদ্যালয় চত্বরে ফুলের বাগান। তাসফিয়া বলে, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। ঠাসাঠাসি করে বসে ক্লাস করতে হয়। মাঠ না থাকায় আমরা খেলতে পারি না।’
ইউএনও শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি মডেল বিদ্যালয়ে যে ধরনের অবকাঠামো প্রয়োজন, তা বিদ্যালয়টিতে নেই। আমরা বিদ্যালয়টির ভবন ও খেলার মাঠের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠাব।’
কাউখালী উপজেলা সদরে ১৯৬৭ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষায় ২০১০ সালে বিদ্যালয়টি বরিশাল বিভাগে শ্রেষ্ঠ এবং সারা দেশে ষষ্ঠ হয়। ১০ বছর ধরে ফলাফলে বিদ্যালয়টি উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.