তত্ত্বাবধায়ক ও অন্তর্বর্তী নিয়ে সংসদে প্রাণবন্ত বিতর্ক- তারেক প্রশ্নে বিরোধী দলের পাঁচ মিনিটের ওয়াকআউট

 জাতীয় সংসদে ‘তত্ত্বাবধায়ক ও অন্তর্বর্তী’ নির্বাচনকালীন এই দুই সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে প্রাণবন্ত বিতর্ক হয়েছে। দু’পক্ষই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে পাল্টাপাল্টি জোরালো যুক্তির মাধ্যমে একে অপরের অভিযোগ খ-ন করেছেন।
সরকার পক্ষ বলেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই সরকারে বিরোধী দল অংশীদারিত্ব চাইলে তা দিতেও আমরা রাজি। তবে কোন অসাংবিধানিক বা অনির্বাচিত সরকার মেনে নেয়া হবে না। বিরোধী দলের দাবি, জনগণের রায় বিপক্ষে যাবে বলেই বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহালে ভয় পাচ্ছে। তবে দেশের জনগণ আন্দোলন করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি আদায় করে ছাড়বে।
বাজেটের ওপর বুধবার দীর্ঘ আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে উত্তপ্ত-প্রাণবন্ত বিতর্ক হলেও ছিল না অশ্লীল, কদর্য ও অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার। বরং উভয়পক্ষেরই তরুণ ও প্রবীণ সংসদ সদস্যরা পবিত্র জাতীয় সংসদে এমন ভাষার ব্যবহারের কঠোর সমালোচনা করে ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন অশ্লীল শব্দের প্রয়োগ করতে না পারে সেজন্য স্পীকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তবে আলোচনাকালে সরকারী দলের সংসদ সদস্য নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর একজন বিদেশী সাংবাদিকদের লেখা বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে লন্ডনে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের এক সহযোগীর সঙ্গে একটি পাবে (বারে) তারেক রহমানের সখ্যতার বিষয়টি তুলে ধরলে প্রতিবাদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সংসদ থেকে ৫ মিনিটের জন্য প্রতীকী ওয়াকআউট করেন।
স্পীকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকাল সাড়ে দশটায় অধিবেশন শুরু হয়ে দু’দফায় রাত অবধি চলা বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, আবদুল মান্নান, আতিউর রহমান আতিক, ইকবালুর রহীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী, সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন, হুইপ শেখ আবদুল ওহাব, জয়নাল আবেদীন, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ, মকবুল আহমেদ, কবিরুল হক মুক্তি, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, এলডিপির কর্নেল (অব) অলি আহমদ, বিএনপির এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নিয়ে অগ্নিকন্যাখ্যাত কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিরোধী দল কোন সৃষ্টি বা জনকল্যাণে কিছু করতে পারে না, পারে শুধু লুণ্ঠন, অর্থপাচার, ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ও রাষ্ট্রের সম্পদ বিনষ্ট করতে। ঋণনির্ভর অর্থনীতির ধারক-বাহকরা দেশ আত্মনির্ভর হোক এটা চায় না। তিনি বলেন, দেশের কিছু টাকা-পয়সার মালিক আছেন যারা সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভোলপাল্টিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে সুপার গ্লু’র মতো আটকে থাকার চেষ্টা করে- এটা এদেশের নিদারুণ বাস্তবতা।
তিনি বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকেই নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে। বর্তমান নির্বাচিত সরকার আরেকটি নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। মিথ্যা কথা বলে কখনও ইসলাম কায়েম হয় না, সাময়িকভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয়। কিন্তু সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবেই। তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসকে উৎসাহিত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এরা ’৭৫-পরবর্তী অসাংবিধানিক ধারাকে উৎসাহিত করতে চায়। হেফাজত কেন ৫ মে’র সমাবেশের নামে তা-বলীলা চালালেন? এম কে আনোয়ারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিবেকহীন ব্যক্তিদের নিয়েই বিএনপির সৃষ্টি। ধর্মের নামে মানুষ হত্যা ও দেশের সম্পদ লুণ্ঠন ছাড়া বিএনপি-জামায়াত আর দেশের মানুষকে আর কিছুই দিতে পারেনি।
সরকারী দলের আরেক সিনিয়র সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বিরোধী দলের সমালোচনা করে বলেন, গত ৪ মে বিএনপির মহাসমাবেশ এবং পরদিন হেফাজতের কর্মসূচীর নামে সরকার উৎখাতের গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে, রাজনীতিকে সন্ত্রাস দিয়ে কেউ মোকাবেলা করতে চাইলে তাদের পতন অবশ্যম্ভাবী। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, হেফাজতকে উৎখাতে একটি গুলিও খরচ করতে হয়নি। এ অভিযানে একটি মানুষও মারা যায়নি। নিহত একটি মানুষের নাম দিতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। মিথ্যার একটা শেষ আছে। দেশের মানুষ এই মিথ্যাবাদীদের দাতভাঙ্গা জবাব দেবে।
বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক আসলে রাজনীতিবিদসহ দেশের মানুষ নির্যাতিত হবে না তার গ্যারান্ট্রি কী? আগামী নির্বাচন সাংবিধানিক অনুযায়ীই হবে। পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হবে শেখ হাসিনা, সেই সরকারে বিরোধী দল অংশীদারিত্ব চাইলে তা দিতে আমরা রাজি। কথা দিচ্ছি- অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। নির্বাচনে কারচুপির কোন সুযোগ নেই। জনগণ যে রায় দেবে তা আমরা মাথা পেতে নেবে। তবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে বিরোধী দল যদি কোন অপশক্তিকে আনার ষড়যন্ত্র থাকে, দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না। বর্তমান সরকার মাগুরা বা ফালু মার্কা কোন নির্বাচন করেনি। কোন অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়ার আর চেষ্টা করবেন না।
মহাজোটে শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বিরোধী দল রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে তারা বাজেট বাস্তবায়নকে রুখে দিতে চায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ব্যর্থ হয়ে সারাদেশে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালাচ্ছে। আশা করেছিলাম, এই তা-বলীলার বিরোধিতা করবেন। কিন্তু সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে এসে উল্টো ধ্বংসাত্মক কর্মকা-কে প্রকাশ্য সমর্থন দিলেন। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে এখন হেফাজতে জামায়াতে ইসলাম যোগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, হেফাজতকে কোন প্রশ্রয় দেয়ার অর্থই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিভূমিকে নস্যাত করে দেয়া। চারটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছে তারা ক্ষমতায় এসে গেছে। আগামী নির্বাচনে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকবে, জনগণ এ পক্ষেই ভোট দেবে। বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ঐক্যের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক শক্তিকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচন কমিশনের হাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় তুলে দিয়ে শক্তিশালী করি। তত্ত্বাবধায়ক নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারকে আবারও বিজয়ী করতে হবে।
এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ১০ লাখ বিনিয়োগকারী তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ তুলে নিয়ে বিদেশে চলে গেছে। যে অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজার বুঝেন না, লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ- তাঁর ওই পদে থাকার কোন সুযোগ নেই। দেশের অর্থনীতি ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখোমুখি। সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে মানুষ অতিষ্ঠ। দুদকে সরকারী হস্তক্ষেপে দন্তহীন বাঘে পরিণত করা হয়েছে। দলীয়করণের কারণে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। তবে মনে রাখতে হবে ক্ষমতা কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়। এককেন্দ্রিক সরকার বাংলাদেশে অকার্যকর তা প্রমাণিত হয়েছে। তাই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে গুলি করে হেফাজতের প্রায় আড়াই হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় সরকারী দলের সদস্যরা চৈ-চৈ করে ওঠেন।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবির বিএনপির নেতৃত্বে সারাদেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, শুধুমাত্র রেলওয়েরই ২৫ কোটি টাকা ক্ষতি করেছে। জনগণের সম্পদ নষ্টের ক্ষতিপূরণ বিএনপি-জামায়াতকেই দিতে হবে। পবিত্র ইসলামের ধর্মের অপব্যাখ্যা করে চরম মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে এরা বিভ্রান্ত করে। পবিত্র কোরান শরিফের কোথাও নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল বা দাঁড়িপাল্লা নেই। অথচ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের সময় অপপ্রচার চালায় যে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে বেহেস্তে নাকি যাওয়া যাবে। এরা মিথ্যাবাদী ধর্ম ব্যবসায়ী। জামায়াতীরা নারীর স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, এরা যুদ্ধাপরাধী। জনগণ আগামী নির্বাচনেও ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।
সরকারী দলের সিনিয়র সদস্য আবদুল মান্নান প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে নিয়ে বিরোধীদলীয় সদস্য শাম্মী আক্তারের মন্তব্য প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, খালেদা জিয়ার বাসায় ওয়াজেদ মিয়া অবশ্যই তাঁর সম্মতি নিয়ে গিয়েছিলেন। তাহলে কি অনেক ষড়যন্ত্রের মতো শেখ হাসিনার সংসার ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত হয়েছিলেন বিরোধীদলীয় নেত্রী? বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, জেনারেল জিয়া জীবদ্দশায় কোনদিন কখনও নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেননি। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারেন তবে সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করব।
বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সংসদে অশ্লীল, কুৎসিত বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, প্রথমবারের মতো সংসদে এসে দেখলাম সংসদ যেন পরস্পরকে গালিগালাজ দেয়ার স্থান। এসব দৃশ্য দেখে দেশের শিক্ষিত প্রজন্ম জাতীয় সংসদকে নিন্দা করছে, আমাদের সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তারেক রহমানের ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যতীত দেশে-বিদেশে কোথাও কোন সম্পদ নেই। বিদেশেও কোন ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নেই। এ সময় সরকারদলীয় সদস্যরা হৈচৈ করে উঠলে তিনি বলেন, সাহস থাকলে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ আজ জেগে উঠেছে। কোথাও আর এই সরকার নেই। চার সিটি নির্বাচনেই সরকারের ভরাডুবি ঘটছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণ ইনশাল্লাহ আওয়ামী লীগ থেকে দেশকে মুক্ত করবে। জনগণকে ভয় পায় বলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে চাচ্ছে না। জনগণ সরকারের কাছ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদায় করে ছাড়বে। তিনি বলেন, বিদায়ী চেয়ারম্যানই নিজেই বলেছেন দুদক দন্তহীন বাঘ। আমরা ক্ষমতায় আসলে দুদকের নতুন দাঁত উঠবে, বর্তমান সরকারের সব দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার হবে। তিনি বলেন, তারেক রহমান নয়, প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। আর প্যারোলের শর্ত যদি ভঙ্গ করে থাকেন তাহলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই করেছেন, অন্য কেউ করেনি।
জাতীয় পার্টির ছয়বারের নির্বাচিত সিনিয়র সংসদ সদস্য ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী দেশকে কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত করার দাবি জানিয়ে বলেন, জনপ্রশাসনে অপরিসীম দুর্নীতি, অদক্ষতা, অপরিক্বতা ও সমন্বয়হীনতা বিরাজ করছে। বন্যার সময় বাঁধে যেমন ফাটল হয়, তেমনই মহাজোটে আজ ফাটল দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টি মহাজোটের বৃহত্তম শরিক, কিন্তু মূল্যহীন। আজ জাপা মহাজোটে না থাকলে কি হবে তা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। মহাজোটকে সব সময় অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। দেশ আজ দুই নেত্রীর হাতে জিম্মি। জনগণ যেমন ক্ষমতায় বসাতে পারে তেমনি প্রয়োজনে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে। সরকারকে বলছি, একলা চলার পথ পরিহার করতে হবে, মহাজোট শরিকদের মূল্যায়ন করতে হবে।
সরকারী দলের নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর একজন বিদেশী সাংবাদিককের লেখার উদ্ধৃতি দিয়ে বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, তারেক রহমান কী এখন নিঃসঙ্গ? একজন বিদেশী সাংবাদিক লিখেছেন যে, তারেক রহমানকে লন্ডনের একটি পাবে (বারে) মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের এক সহযোগীর সঙ্গে দেখা গেছে। অর্থাৎ তিনি সেখানে বেশ ব্যয়বহুল জীবনযাপন করছেন। তিনি যদি একটি বড় দলের দায়িত্বশীল নেতা হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কেন বিদেশে পালিয়ে আছেন?’ তারেক রহমান রাজনীতি করতে চান তাহলে দেশে ফিরে এসে কেন রাজনীতি করছেন না? তারেক রহমান দেশে ফিরে গণতান্ত্রিক রাজনীতি করুক আমরা স্বাগত জানাব, তবে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি যেন না করেন। তারেক রহমানের সম্পর্কে এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে বিরোধী দল প্রতীকী ওয়াকআউট করে।

No comments

Powered by Blogger.