অন্তহীন যাত্রা- চারুকলায় মানবেন্দ্র ঘোষের একক ভাস্কর্য প্রদর্শনী- সংস্কৃতি সংবাদ

 গতানুগতিক মাধ্যমের বাইরে চারপাশের জীবন প্রবাহের মাঝে ছড়িয়ে থাকা নানান মাধ্যমের দ্বারা তৈরি মানুষের মূর্তি প্রাণবন্ত শিল্প হয়ে ধরা দিয়েছে ভাষ্কর মানবেন্দ্র ঘোষের ভাষ্কর্যে।
যেখানে খড়ের বা রশির ব্যবহার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যাপিত জীবন। খড়-কুটো আর সুতনীর মতো সামান্য জিনিসকে নিজস্ব মাধ্যম হিসেবে অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করে একটা নিজস্ব আঙ্গিক তৈরি করেছে যা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মানবেন্দ্র ঘোষের প্রথম একক ভাষ্কর্য প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারি ২ তে। বুধবার বিকেলে ‘অন্তহীন যাত্রা’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের রুচিবোধের ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমনকি জাতীয় সংসদেও অনেক সময় অশালীন ও রুচিহীন বক্তব্য শোনা যাচ্ছে, যেটা একটা সভ্য জাতির কাম্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অতীত ঐতিহ্য রয়েছে। এখান থেকে যে সব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী পাস করে বেরিয়েছে, তারা অনেক ক্ষেত্রেই সমাজে অবদান রেখেছে। আমি আশা করব ভবিষ্যতে যারা এখান থেকে সুনামের সঙ্গে পাস করে বেরুবে তারাও অসামান্য অবদান রাখবে। ভাষ্কর্য বিভাগের কৃতী শিক্ষার্থী মানবেন্দ্রও এগিয়ে যাবে তার শিল্পবোধ ও রুচিবোধ নিয়ে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক সৈয়দ আবুল র্বাক আলভী, প্রখ্যাত ভাষ্কর অধ্যাপক মোঃ হামিদুজ্জামান খান ও চারুকলা অনুষদের ভাষ্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লালারুখ সেলিম। প্রদর্শনীতে ব্রোঞ্জ, পিতল, কাঠ, ফাইবার গ্লাস, সিমেন্ট, প্লাস্টার অব প্যারিস এবং যন্ত্রাংশ দ্বারা নির্মিত ছোট-বড় ১৬টি ভাষ্কর্য হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে দ্য এন্ডলেস জার্নি, রি লেসন অব এমটি থিয়োরি, আওয়ার ট্রেডিশন ইনট্রাবল, স্টাডি, সিড, মোশন, ফ্লেকশন ও কম্পোজিশন। প্রদর্শনী চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত এবং প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
নাটম-লে ১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে যাত্রাপালা সোহরাব রুস্তম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটম-লে আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে মহাকবি ফেরদৌসী রচিত শাহানামা কাব্য অবলম্বনে যাত্রাপালা ‘সোহরাব রুস্তম’। চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ। পালাটি রচনা করেছেন ব্রজেন্দ্র কুমার দে এমএ বিটি। পরিচালনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীন। নাটম-লে বুধবার যাত্রাপালাটির চূড়ান্ত কারিগরি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। পালাটিকে যাত্রার আঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যৌথভাবে যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে, হাবিব সারওয়ার, রিক্তা সুলতানা, সুলতান সেলিম। পালাটির বিবেক চরিত্রটির নির্দেশনা দিয়েছেন গৌরাঙ্গ আদিত্য এবং সুর ও সঙ্গীতায়ন করেছেন স্বনামধন্য যাত্রাশিল্পী জ্যোৎস্না বিশ্বাস। পারস্য সম্রাটের পটভূমিতে পালাটির গল্প আবর্তিত। এর কাহিনীতে দেখা যায় ইরান-তুরানের যুদ্ধের ময়দানে পিতা রুস্তম না জেনে হত্যা করে তার পুত্রকে। যাত্রাপালাটিতে অভিনয় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায়।
শিল্পকলায় রাজা হিমাদ্রি মঞ্চস্থ ॥ শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় দৃষ্টিপাতের প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘রাজা হিমাদ্রি’। গ্রিক ট্রাজিক নাট্যকার সফোক্লিসের অনন্য সৃষ্টি নাটক ‘ইডিপাস’। নাটকটির মূল অনুবাদ করেছেন শম্ভু মিত্র। নাটকটি রূপান্তর, নির্দেশনা এবং কেন্দ্রীয় চরিত্র রাজা হিমাদ্রির চরিত্রে অভিনয়ে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন ড. খন্দকার তাজমি নূর। দৃষ্টিপাত প্রযোজনায় নাটকটির এক বছর পূর্ণ হওয়ায় বিশেষ মঞ্চায়নের আয়োজন করে দলটি। নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়, অশুভ ঝড়ের আগমনে ভীষণ এক সঙ্কটের সম্মুখীন হিমালয় পুত্র রাজা হিমাদ্রি। সে চায় তাঁর জন্মের নেপথ্য ইতিহাসকে অন্ধকার থেকে আলোতে উদ্ভাসিত করতে। একজন নিষ্ঠাবান সৎচরিত্রের অধিকারী এই হিমালয়ের রাজাকে তাই জানতেই হবে তাঁর জন্ম নির্মাণের নেপথ্য ইতিহাস, কেননা এখানেই নিহিত তার সকল যোগ্যতা তার মনের গতি, রাজ্য পরিচালনা পদ্ধতি, তার জন্ম এবং কর্মের সফলতা। নিয়তি নয়ত সমাজ অথবা সংস্কার যেটা আমাদের অবশ্যই পালনীয় এবং ইতিহাসে যার কোন বিকল্প নেই, এমন কিছু সত্যের অনুসন্ধান করতেই চরম সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে আস্তে আস্তে আবিষ্কার হয় হিমালয় পুত্র রাজা হিমাদ্রির জন্মের নেপথ্য ইতিহাস।

No comments

Powered by Blogger.