বেসিক ব্যাংকে বড় জালিয়াতি by মনজুর আহমেদ

রাষ্ট্র খাতের বেসিক ব্যাংকে লুটপাট চলছে। কোনো নিয়মনীতি, বিধিবিধানের তোয়াক্কা করছে না ব্যাংকটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অন্তত সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা এই ব্যাংক থেকে জাল-জালিয়াতি, অনিয়ম করে বের করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এসব কাজে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনার যোগসাজশের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনেও একাধিকবার উঠে এসেছে। যেমন গ্রাহক সম্পর্কে শাখা থেকে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘তাদের ঋণ বা ক্রেডিট কমিটি ঋণ দিতে সম্মত নয়।’ তার পরও পরিচালনা পর্ষদ ঋণ অনুমোদন করেছে।
আবার ঋণ প্রস্তাব শাখা থেকে পাঠানোর আগেই ঋণের অনুমোদন দেওয়ারও উদাহরণ রয়েছে। এমনকি অনেক অস্তিত্বহীন, ভুয়া অর্থাৎ কাগুজে বা বেনামি প্রতিষ্ঠানকেও ঋণ দিয়েছে ব্যাংকের পর্ষদ। জাতীয় পার্টির নেতা শেখ আবদুল হাই বাচ্চু এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক দফা নিজস্ব পরিদর্শন শেষে গুরুতর অনিয়ম-জালিয়াতি আবিষ্কারের পর দফায় দফায় নির্দেশ দিলেও মানেনি বেসিক ব্যাংক। আবার বিশেষ কোনো কারণে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্নেহসুলভ’ আচরণও করেছে। এসব ক্ষেত্রে বিশেষ রাজনৈতিক বিবেচনা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বছর পাঁচেক আগেও বেসিক ব্যাংক ছিল দেশের অন্যতম ভালো মানের ব্যাংক। কিন্তু নানা ধরনের অনিয়মের কারণে এখন ব্যাংকটির পরিস্থিতি নাজুক। বেসিক ব্যাংকের পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আলোচনা চলছিল সেখানে প্রশাসক নিয়োগের। কিন্তু শীর্ষ পর্যায় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। এখন ব্যাংকটির সঙ্গে একধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক সমঝোতায় যেতে চাইছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য কিছু নিয়মনীতিগত শর্ত দিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি চিঠি পাঠানো হয়। বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের আজকের (বৃহস্পতিবার) সভায় সম্মতি দেওয়া হলে এই স্মারকে স্বাক্ষর করবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
তবে এই সমঝোতা মূলত ব্যাংকটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে ‘দায়মুক্তি’ দেওয়ার একধরনের কৌশল বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই। এতে ব্যাংকের অনিয়মের দায় থেকে জড়িতদের রক্ষা করা যাবে। ১০ বছর আগে রাষ্ট্র খাতের সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে দিয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসিক ব্যাংকের সঙ্গেই প্রথম এমওইউ করছে, বিষয়টা এমন নয়। অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গেও এমওইউ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যাংক বিপদে পড়লে তার অবস্থা উন্নয়নে বা শোধরাতে এমওইউ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।’ আর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এমওইউ করা হলেও কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বেসিক ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চে তা দাঁড়িয়েছে নয় হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার বছর তিন মাসে ব্যাংকটি ছয় হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে, যার প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকাই নিয়ম ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে। এর মধ্যে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার অনিয়ম তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ গেছে প্রায় এক বছর আগে। কমিশন তদন্ত শুরু করলেও অগ্রগতি হয়নি। এ ক্ষেত্রেও তদন্ত থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ফখরুল ইসলাম তাঁদের ব্যাংকের পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে ভালো হচ্ছে বলে মত দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঋণ-আমানতের অনুপাত ৯০ শতাংশ থেকে কমে ৮১ শতাংশে চলে এসেছে। অন্য ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪০ শতাংশ, সেখানে বেসিক ব্যাংকে ৮-৯ শতাংশ।’ ভুয়া বা বেনামি ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁদের ব্যাংকে এমন কোনো ঋণ নেই। সব ঋণেরই মালিক আছেন, শিল্প বা কোম্পানি আছে। কিছু সমস্যা ছিল, সেগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুসারে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হচ্ছে।
ঘটনা-১: বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের ভিত্তিতে বেসিক ব্যাংকে একটা বিশদ পরিদর্শন চালায়। সে সময় ব্যাংকের শান্তিনগর শাখায় ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঋণ হিসাব পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের কম্পোজিট ঋণসীমা ১৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার সহায়ক জামানত খুবই অপ্রতুল। লেনদেন অসন্তোষজনক হওয়া সত্ত্বেও অল্প সময়ের মধ্যে গ্রাহকের অনুকূলে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল ঋণ ছাড় করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ ঋণ (এলটিআর) পুনঃপুন মেয়াদ বৃদ্ধির পরও অনাদায়ে মেয়াদি ঋণে পরিণত করা হয়েছে (৫০ কোটি টাকা), যার সন্তোষজনক মালামাল মজুত নেই। ইতিমধ্যে মেয়াদি ঋণের কিস্তিও খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে।’ ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের মালিক ওয়াহিদুর রহমান।
পরবর্তী সময়ে জানা যায়, একই মালিকের অটো ডিফাইনের ঋণসীমা ১৬৩ কোটি টাকা। এই কোম্পানির ঋণ যেদিন (২০১০ সালের ২ নভেম্বর) অনুমোদন করা হয়, তার পরদিনই (৩ নভেম্বর) মালিকানা পরিবর্তন করা হয়। নতুন মালিক হন জনৈক আসমা খাতুন। এর কারণ হলো, দুই কোম্পানির মালিক একই ব্যক্তি হলে তাঁদের ঋণসীমা একক ব্যক্তি বা গ্রুপ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে। ফলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা কৌশল শিখিয়ে এভাবে ঋণ দেন ওয়াহিদুর রহমানকে। দুটি ঋণই এখন খেলাপি।
পরে আবার গুলশান শাখা থেকেও ওয়াহিদুর রহমানকে ঋণ দেওয়া হয়েছে নানা অনিয়ম করে। ওয়াহিদুর রহমানের বেনামি প্রতিষ্ঠান এবি ট্রেড লিংককে শাখা থেকে প্রস্তাব পাঠানোর আগেই প্রধান কার্যালয় থেকে ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়। শাখা থেকে এবি ট্রেডের ঋণ প্রস্তাব পাঠানো হয় ২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। আর পরিচালনা পর্ষদ ঋণটি অনুমোদন দেয় ৬ সেপ্টেম্বর।
ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংকের খাতায় এবি ট্রেড লিংকের ঠিকানা হচ্ছে: বাসা নম্বর ৭৫/এ, রোড নম্বর ৫/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা। তবে সরজমিনে এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এবি ট্রেডের কাগুজে স্বত্বাধিকারী এ বি এম রাসেল ব্যাংকের কাছে জানিয়েছেন, এই কার্যালয়টি এখন ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের প্রধান কার্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে। ব্যাংক সূত্রটি আরও বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলকে এ বি এম রাসেল লিখিতভাবে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মালিক ওয়াহিদুর রহমান। ঋণের বিপরীতে নেওয়া অর্থ ওয়াহিদুর রহমান জমি ও গাড়ি আমদানির জন্য ব্যবহার করেছেন। সেই জমিও ব্যাংকের কাছে জামানত হিসেবে গচ্ছিত আছে।
ঘটনা-২: গুলশান শাখায় মা টেক্স, এসপিএন ও ইএফএস এন্টারপ্রাইজের নামে মঞ্জুর করা ঋণের পরিমাণ ১৭২ কোটি টাকা। কাগুজে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী হচ্ছেন জনৈক শামীম চিশতি।
ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানগুলো ও তাদের হিসাব খুলতে যাঁরা পরিচয়কারী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে। এক ব্যক্তির ছবি একাধিক নাম দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক বানানো হয়েছে। যেমন একই ব্যক্তির ছবি রয়েছে রেজকা শিপিং লাইনসের মালিক জনৈক আবদুর রহমান ও এসপিএন এন্টারপ্রাইজের মালিক আবদুর রবের নামে। এঁরাই আবার একে অপরের পরিচয়কারী। এই প্রতিষ্ঠান তিনটিকে ঋণ দিতে ব্যাংকের গুলশান শাখা কোনো সুপারিশ করেনি। শুধু প্রস্তাবটি পাঠিয়ে দিলেই পরদিন পর্ষদ ঋণ অনুমোদন করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত: বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের শুরুতে ব্যাংকটির শান্তিনগর, দিলকুশা, গুলশান ও রাজশাহী শাখায় বিশেষ পরিদর্শন চালিয়েছিল। তারও আগে প্রধান কার্যালয়ে পরিদর্শন হয়েছে। আর নিয়মিত বিশদ পরিদর্শন চলেছে বছর বছর। সব ক্ষেত্রেই বড় বড় অনিয়ম ধরা পড়েছে। ব্যাংকটির অনিয়ম-দুর্নীতির পরিস্থিতি শুরুতেই সামাল দিতে না পেরে বছর তিনেক আগে তৎকালীন এমডি এ কে এম সাজেদুর রহমান ব্যক্তিগত ও শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা, শান্তিনগর ও গুলশান শাখায় অনিয়মের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কয়েকটি ঋণ শ্রেণীকৃত করাসহ বিভিন্ন নির্দেশ দিলেও সময়মতো তা পালন করা হয়নি। দিলকুশা শাখা থেকে এক হাজার ৪০০ কোটি, গুলশান শাখা থেকে এক হাজার ৫০০ কোটি এবং শান্তিনগর শাখা থেকে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে নানা অনিয়ম করে।
সম্প্রতি ব্যাংকের পর্ষদের এক সভায় কয়েকটি ঋণ অনুমোদন করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তা আটকে দেয়। ১৩ জন গ্রাহকের অনুকূলে ৩২৩ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পর্ষদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন অনুযায়ী, এসব ঋণের বিপরীতে তেমন কোনো জামানত নেই। যেসব জামানত দেখানো হয়েছে, তার বেশির ভাগেরই অস্তিত্ব নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে বড় অঙ্কের আটকে যাওয়া ঋণগুলো হচ্ছে গুলশান শাখার সিলভার কম ফ্রেডিংয়ের ৩৫ কোটি টাকা, প্রফিউশন টেক্সটাইলের ১৫ কোটি টাকা, এসপিএন এন্টারপ্রাইজের ৫২ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখার হাসিব এন্টারপ্রাইজের ৩৬ কোটি টাকা, এসওএস ব্রাদার্সের ৪৫ কোটি টাকা, প্রধান শাখার আনোয়ার গ্রুপের ৬৫ কোটি টাকা, মৌলভীবাজারের চৌমোহনী শাখার ইমপেরিয়াল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের ২৫ কোটি টাকা।
অস্বাভাবিক গতিতে ঋণ বিতরণ: বেসিক ব্যাংকের সংঘ স্মারকের ৪(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে ৫০ শতাংশ ঋণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে বিতরণের কথা। কিন্তু বেশির ভাগ ঋণই হচ্ছে বড় অঙ্কের।
বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখা সূত্র জানায়, অনেকগুলো কোম্পানির চলতি হিসাব খোলার পর অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে ঋণ অনুমোদন করে পরিচালনা পর্ষদ। যেমন ২০১২ সালের ২ এপ্রিল শিফান শিপিং লাইনস শাখায় চলতি হিসাব খোলে, ৪ এপ্রিল ঋণ প্রস্তাব দিলে পর্ষদ ৫ এপ্রিল তা অনুমোদন করে। শিফান শিপিং লাইনসের ডিসেম্বরভিত্তিক স্থিতি ছিল ৫৮ কোটি দুই লাখ টাকা। এস সুহি শিপিং লাইনস, ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজ, দিয়াজ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ও এসজিএফ শিপিং লাইনসের ঋণ প্রস্তাব যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ দেওয়া হয়নি। শাখা সূত্রটি বলছে, তারা আসলে প্রধান কার্যালয়ের চাহিদা অনুসারে ঋণগুলোর প্রস্তাব তৈরি করে পাঠিয়ে দিয়েছে।
সূত্রটি আরও বলছে, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ঋণ প্রস্তাব তারা বিরূপ মন্তব্য করে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তাতে লেখা হয়েছিল, ‘শাখা ঋণ মূল্যায়ন কমিটি এই প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে সম্মত হয়নি।’ কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ তাকেও ঋণ দিয়েছে। গ্রাহক এই ঋণ নিয়ে গিয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে স্থানান্তর করেছে। শাখা থেকে এআরএসএস এন্টারপ্রাইজ, ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজের ঋণ প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও এমন বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছিল। সবাইকে পর্ষদ ঋণ অনুমোদন করেছে।
ঋণ নিয়ে অন্য ব্যাংকের দায় পরিশোধ করার আরও অনেক উদাহরণ আছে। যেমন দিলকুশা শাখার গ্রাহক আদিব ডায়িং মিলসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান দি ওয়েল টেক্সের নামে ঋণ অনুমোদন হয় ৩২ কোটি টাকা। এর থেকে ২২ কোটি টাকা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায় মেটাতে প্রিমিয়ার ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। আবার ইব্রাহিম নিটের ঋণদায় বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কিনেছে ইউসিবিএল ও ওয়ান ব্যাংক থেকে। কোনো কোনো ঋণে হালনাগাদ সিআইবি প্রতিবেদনও সংগ্রহ করা হয়নি।
ব্যাংক সূত্র বলছে, ঋণের এক টাকাও আদায় হয় না, কিন্তু আয় দেখিয়ে ব্যাংকের মুনাফা বাড়ানো হয়েছে। আবার মেয়াদি ঋণের একটি কিস্তিও পরিশোধ হয়নি। তার পরও পুনঃতফসিল না করে চাতুরি বিন্যাসের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরূপ শ্রেণীবিন্যাস না দেখানো।

No comments

Powered by Blogger.