রাশিয়াতেই আছেন স্নোডেন

মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেন রাশিয়ার শেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দরেই অবস্থান করছেন। গতকাল বুধবার ছিল তাঁর মস্কোর এ বিমানবন্দরে অবস্থানের চতুর্থ দিন।
জানা গেছে, অন্তত আগামী তিন দিনের মধ্যে তিনি কোনো দেশে যাওয়ার জন্য টিকিট সংগ্রহ করেননি।
এদিকে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো বলেছেন, স্নোডেন চাইলে কারাকাস তাঁর রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ওপর প্রশাসনের নজরদারির তথ্য ফাঁস করে হইচই ফেলে দেওয়া স্নোডেন গত রোববার হংকং থেকে রাশিয়ায় পৌঁছান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও স্নোডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন।
মস্কো থেকে স্নোডেনের সোমবার কিউবার উদ্দেশে বিমানে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু সারা দিন তাঁকে বিমানে উঠতে দেখা যায়নি। গতকাল শেরেমেতিয়েভো থেকে কিউবার উদ্দেশে কোনো ফ্লাইট ছিল না। স্নোডেন বিমানবন্দরের ট্র্যানজিট এলাকার একটি হোটেলে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁর মার্কিন পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।
সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছে, স্নোডেনের পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় তাঁকে রাশিয়াতেই থাকতে হতে পারে। মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো তাঁকে সম্ভবত রাশিয়াতেই রাখতে চায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, স্নোডেন এই মুহূর্তে মূলত ইকুয়েডর সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে করা তাঁর আবেদনের উত্তর পাওয়ার অপেক্ষা করছেন। এরপর তাঁর গন্তব্য চূড়ান্ত করবেন।
শেরেমেতিয়োভো বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কমর্কতারা জানান, বুধবার স্নোডেন এই বিমানবন্দর ত্যাগ করছেন না। আগামী তিন দিনের কোনো ফ্লাইটের টিকিটও সংগ্রহ করেননি তিনি।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো আগামী সপ্তাহে জ্বালানিবিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়া যাচ্ছেন। মাদুরো বলেছেন, স্নোডেন চাইলে তাঁরা রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন।
এদিকে স্নোডেনকে নিয়ে রাশিয়ার অবস্থানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা স্নোডেনকে রাশিয়া থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের মুখপাত্র কেইটলিন হেইডেন বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তা সত্ত্বেও স্নোডেনকে বহিষ্কারের জন্য মস্কোর হাতে পর্যাপ্ত আইনি ভিত্তি রয়েছে।’ তিনি বলেন, স্নোডেনের ভ্রমণের কাগজ না থাকা এবং তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর বিষয় বিবেচনায় নিলেই মস্কো তাঁকে বহিষ্কার করতে পারে।
রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় আইনপ্রণেতা অ্যালেক্সি পুসকভ অভিযোগ করেছেন, স্নোডেনকে বহিষ্কারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘হঠকারীভাবে’ রাশিয়া ও চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তিনি ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই ধরনের চাপ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কোনো ফল বয়ে আনবে না।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক কমিটির প্রধান পুসকভ আরও বলেন, ওয়াশিংটন একদিকে হঠকারীর মতো চাপ প্রয়োগ করছে, অন্যদিকে সিরিয়া প্রশ্নে মতৈক্যে পৌঁছার পথ খুঁজছে। এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.