জমে উঠেছে প্রচারণা- বিএমএ নির্বাচনে জাতীয় রাজনীতির আঁচ by প্রণব বল



বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে জমে উঠেছে প্রচারণা। সরকারের শেষ সময়ে এই নির্বাচন হওয়ায় এতে জাতীয় রাজনীতির আঁচও লেগেছে। প্রচার-প্রচারণায় চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ অভিযোগ।
২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বিএমএ নির্বাচনে চিকিৎসকেরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি চট্টগ্রাম শাখার নেতাদেরও নির্বাচিত করবেন। সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগ-সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বিএনপি-জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে।
চট্টগ্রামে স্বাচিপের সমর্থক চিকিৎসকেরা মুজিবল হক খান-মোহাম্মদ শরীফ পরিষদ এবং বিএনপি ও জামায়াত-সমর্থিত চিকিৎসকেরা খুরশিদ জামিল-আবদুল মোত্তালিব পরিষদের ব্যানারে নির্বাচন করছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে দুজন চিকিৎসক স্বাচিপের সমর্থক হওয়ায় এবার এই পদে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এই পদে স্বাচিপ ঘোষিত প্রার্থী হলেন মোহাম্মদ শরিফ। তবে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন স্বাচিপ নেতা আ ম ম মিনহাজুর রহমান। নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
ইতিমধ্যে দুই প্রধান পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা চট্টগ্রামে প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। বিএনপি ও জামায়াত-সমর্থিত চিকিৎসকদের পরিষদ গত সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গণসংযোগ শেষে নগরের একটি সামাজিককেন্দ্রে (কমিউনিটি সেন্টারে) সভা করেছেন। এ সময় কেন্দ্রীয় পরিষদের পাশাপাশি চট্টগ্রামের পরিষদকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে সরকারের মন্ত্রী ও সিভিল সার্জন নির্বাচনকে প্রভাবিত করছেন বলে অভিযোগ বিএনপি জামায়াত-সমর্থিত চিকিৎসকদের। স্বাচিপের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকেও ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন তাঁরা। বিএনপি-জামায়াত-সমর্থিত চট্টগ্রামের সভাপতি প্রার্থী খুরশিদ জামিল বলেন, ‘আমাদের ব্যানার খুলে ফেলা হয়েছে। ভয়ভীতি দেখানোর জন্য ছাত্রলীগ মিছিল বের করেছে। স্বাচিপ ছাত্রলীগকে ইন্ধন যোগাচ্ছে। মন্ত্রী প্রভাব খাটাচ্ছেন। সিভিল সার্জন স্বাচিপ প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার করছেন।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্বাচিপের কেন্দ্রীয় নেতারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শাহ আলম বীরউত্তম মঞ্চে প্যানেল পরিচিতি সভা করেন। এই সভায় সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে বিভক্তির প্রসঙ্গটি বিভিন্নজনের বক্তব্যে উঠে আসে।
বিএনপি-সমর্থিত চিকিৎসকদের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাচিপের সভাপতি প্রার্থী মুজিবুল হক খান বলেন, ‘বিএনপি-সমর্থিত চিকিৎসকেরা যেসব অভিযোগ করেছেন তার ভিত্তি নেই। আমরা কারও ব্যানার ছিঁড়িনি আর ছাত্রলীগকেও ব্যবহার করিনি। যেসব অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছি তাঁর জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। এ পদে আর যে-ই প্রার্থী হোক তা নিয়ে আমাদের ভাবনা নেই।’
এদিকে, বিদ্রোহী প্রার্থী মিনহাজুর রহমান তাঁর সমর্থকদের বদলিসহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সমর্থন দেখে স্বাচিপ ভয় পাচ্ছে। যার কারণে চিকিৎসক বদলি থেকে শুরু করে নানা হয়রানি করে যাচ্ছে। নির্বাচনের রায়কে জোরপূর্বক নিজেদের পক্ষে নেওয়ার জন্য তাঁরা উঠেপড়ে লেগেছেন। এসব করে রায় পরিবর্তন করা যাবে না।’

No comments

Powered by Blogger.