বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড-পলাতক খুনিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করবে সরকার

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে গঠিত টাস্কফোর্সের সভায় গতকাল বুধবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের ভিসা ও পাসপোর্ট না দেওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি তাঁদের ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে নিয়োগ করা ল ফার্মগুলোর কাজ ত্বরান্বিত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাচ্ছেন না।
ফৌজদারি মামলার কোনো আসামি আইনকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে থাকলে তার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারে সরকার। তাই বিদেশে পলাতক খুনিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী আরো বলেন, এরই মধ্যে এসব আসামির সম্পদের খোঁজ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনের শাসনে বিশ্বাসী সব সরকারের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা। আইনের শাসনে বিশ্বাসী সব সরকারই এ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। বিদেশে পলাতক অন্যদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারা বিভিন্ন সময় পাকিস্তান, ভারত, লিবিয়া, কেনিয়ায় অবস্থান করে বলে জানা যায়।
আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে টাস্কফোর্সের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মুসতাক আহমেদ, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক, আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অন্যান্য পলাতক আসামির মতোই তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের সম্পদ ভোগ করতে দিতে পারি না।' তিনি বলেন, যারা ওই খুনিদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ করছে, যারা তাদের রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে বা পলাতকদের পরিচিতি গোপন করার সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয় বলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে দাবি করেছেন সে ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তারেক রহমানের মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় এফবিআইয়ের তদন্তদল বাংলাদেশে এসে দলিল-দস্তাবেজ আদালতে উপস্থাপন করেছে। এর পরও বেগম জিয়া যদি সে কথা বলে থাকেন, তা সর্বৈব মিথ্যা।'

No comments

Powered by Blogger.