চালকের মোবাইল ফোনালাপ-আর কত মৃত্যু হলে থামবে এ চক্র?

মিরসরাই ট্র্যাজেডির মাস না পেরোতেই আবারও চালকের মোবাইল ফোনালাপের শিকার হলেন সাত তাজা প্রাণ। এবার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান উপজেলার নিমতলা এলাকায় যাত্রীবোঝাই বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে চালকের অবহেলার কারণে।


জানা যায়, বাসের চালক বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। ফলে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার চালক, আরোহী ও পথচারী নিহত হন। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে চালকের কথা বলা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে একের পর এক এ রকম ঘটনা ঘটছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বললে চালকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২০ জুলাই থেকে এ পদক্ষেপ কার্যকর হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু গাড়িচালকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। কিন্তু এ অভিযানের পরও থামছে না চলন্ত অবস্থায় গাড়িচালকের কথা বলা। আমরা মনে করি, আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি অন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে চালকের লাইসেন্স যাচাইও জরুরি। কেবল মোবাইল ফোন জব্দ নয়, বড় অঙ্কের জরিমানার পাশাপাশি ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিলের শাস্তি বিধান করা যেতে পারে। পুলিশের অভিযান এখনও পর্যন্ত রাজধানী শহরেই চলছে। কিন্তু ঢাকার বাইরের রাস্তাগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় চালকরা ইচ্ছামতো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ১৯৮৩ সালের মোটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া কেউ গাড়ি চালাতে পারবে না। অথচ আমাদের দেশে চালকের পরিবর্তে হেলপারের গাড়ি চালানোর খবর জানা যাচ্ছে পত্রিকার মাধ্যমে। এ অধ্যাদেশে দুর্ঘটনার যে শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে, তা যথাযথ নয়। অধ্যাদেশটি ১৯৯০ সালে সংশোধন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ আইনের কোনো সংশোধনী হচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনি বলয় শক্তিশালী করতে এ আইনের সংশোধন জরুরি বলে মনে করছি আমরা।
 

No comments

Powered by Blogger.