অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হোক-পীরগাছায় এসিড-সন্ত্রাস

সারা দেশে এসিড-সন্ত্রাসের শিকার হওয়া মানুষের বেশির ভাগই নারী। সমাজে বিদ্যমান পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার সবচেয়ে ঘৃণ্য প্রকাশ এসিড নিক্ষেপ। এসিড-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আইন এবং সচেতনতা সৃষ্টির নানা উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও এ অপরাধ অব্যাহত রয়েছে। নারীর প্রতি নিপীড়নের এ ধরন নিয়ে জনমনে উদ্বেগ কোনোভাবেই কমছে না।


রংপুরের পীরগাছায় এসিড-সন্ত্রাসের সর্বশেষ শিকার হয়েছেন মনোয়ারা বেগম। পূর্বশত্রুতার জের ধরে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে তাঁকে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। পুরুষে পুরুষে বিবাদেও নারীকে শিকারে পরিণত করার মাধ্যমে পুরুষতান্ত্রিক বাহাদুরি জাহির করার এই এক নমুনা। এমন ‘কাপুরুষোচিত’ ঘটনা প্রতিরোধে সমাজে পুরুষতান্ত্রিক মতাদর্শের আধিপত্য খর্ব করা ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।
তবে এ মুহূর্তে প্রয়োজন দোষীদের বিচার করে শাস্তি প্রদান এবং এসিডদগ্ধ নারী যেন এসিডদগ্ধ হওয়ার কারণে কোনো সামাজিক বাধার সম্মুখীন না হন, তা নিশ্চিত করা। জরুরি ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ বিচার করতে হবে। সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, মামলা গ্রহণে পুলিশের গড়িমসি, অভিযোগপত্র সঠিকভাবে না দেওয়া, সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া, নানামুখী তদবির প্রভৃতি কারণে মামলার প্রায়ই নিষ্পত্তি হয় না। এসিড-সন্ত্রাস রোধে সন্ত্রাসীদের বিচার অবশ্যই দ্রুততম সময়ে শেষ করতে হবে। এ ছাড়া এসিড-সন্ত্রাস অব্যাহত থাকার আরেক কারণ এসিডের সহজলভ্যতা। এসিড অপরাধ দমন আইন অনুযায়ী এসিড আমদানি, উত্পাদন, মজুদ, পরিবহন, বিক্রি ও ব্যবহার করতে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। তাই এসিড-সন্ত্রাস রোধ করতে অবৈধভাবে এসিড বিক্রি বন্ধ করার বিকল্প নেই।
দেশজুড়ে এসিড-সন্ত্রাসবিরোধী প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো দরকার। সমাজ থেকে এসিড-সন্ত্রাসের মতো নৃশংস ঘৃণ্য অপরাধ নির্মূল করতে হবে। আমরা আর একটিও এসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা দেখতে চাই না।

No comments

Powered by Blogger.