চিত্র-বিচিত্র by আশীষ-উর-রহমান

কনকনে শীত শীত জেঁকে বসেছে রাজধানীতে। এত দিন বেশ খানিকটা তফাত ছিল সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার অবস্থা। গায়ে কয়েক প্রস্থ কাপড় চাপিয়েও যখন প্রান্তবর্তী এলাকার মানুষ শীতে কেঁপেছে, তখন দিনের বেলা দিব্যি হাওয়াই শার্ট গায়ে দিয়ে ঘুরেছে ঢাকাবাসী।


সে অবস্থা সপ্তাহখানেক বদলেছে। সারা দেশেই এখন প্রায় সমানে সমান অবস্থা। ঘন কুয়াশা, কনকনে শীত।
শীতের পোশাকের কাটতি বেড়েছে। স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষ সামর্থ্যের মধ্যে গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছে হকার্স মার্কেট ও ফুটপাতের পসরায়। ফুলবাড়িয়ায় বঙ্গবাজার, রাজধানী সুপার মার্কেট, এনেক্সো মার্কেট, মহানগর মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি মার্কেটে শীতের কাপড়ের কেনাবেচা এখন জমজমাট। বিক্রেতারা জানালেন, নতুন-পুরোনো সব ধরনের কাপড়ই এখানে পাওয়া যায়। নতুন লং জ্যাকেট ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা। এ ছাড়া সাধারণ জ্যাকেট ২০০ টাকায়ও পাওয়া যায়। সোয়েটার কার্ডিগান ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, জিপিও এলাকায় পুরোনো কোট, চাদর, সোয়েটারও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। সবে তো পৌষ মাস। মাঘের শীত সামনে। তার জন্য প্রস্তুত হতে গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকবেই।

ভূমি ও কুসুম
প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের ছিটমহল। দহগ্রাম আঙ্গরপোতাসহ ছিটমহলের বাসিন্দারা অনেকটাই যেন নিজভূমে পরবাসীর মতো জীবন যাপন করছে। তাদের জীবনযাত্রার চিত্রই তুলে ধরেছেন দেশের প্রথিতযশা কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন তাঁর নতুন উপন্যাস ভূমি ও কুসুম-এ। লেখা শেষ। ছাপার কাজ চলছে। প্রুফ দেখছেন নিজেই। এবারের একুশের বইমেলায় উপন্যাসটি বের হবে ইত্যাদি প্রকাশন থেকে।
নতুন লেখালেখি নিয়ে আলাপচারিতায় সেলিনা হোসেন জানালেন, এ বছর মূলত এই উপন্যাসটি নিয়েই কাজ করেছেন। বড়দের জন্য লিখতে গিয়ে ভোলেননি ছোটদের কথাও। শিশু-কিশোরদের জন্য একটি উপন্যাস লিখেছেন পুটুস পাটুসের জন্মদিন। এটিও একুশের বইমেলায় প্রকাশিত হবে জনতা প্রকাশন থেকে। নতুন বই এ দুটিই। এ ছাড়া উপন্যাস সমগ্র-এর চতুর্থ খণ্ড বের হবে অন্যপ্রকাশ থেকে, সময় প্রকাশনী থেকে গল্প সমগ্র। কয়েকটি পুরোনো উপন্যাসের নতুন সংস্করণও হতে পারে।
সেলিনা হোসেনের প্রথম উপন্যাস জলোচ্ছ্বাস প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। সেটি ১৯৭০ সালের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস নিয়ে লেখা। সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে ইতিহাসচেতনার সঙ্গে সমাজবাস্তবতা ও মানুষের জীবনসংগ্রামের চিত্র রূপায়িত হয়েছে। উপন্যাসের সংখ্যা ৩০, গ্রন্থ ৭০ ছাড়িয়ে গেছে। উপন্যাস, গল্প, শিশুতোষ রচনার পাশাপাশি তিনি মননশীল প্রবন্ধ, বিশেষ করে সম্পত্তি, জেন্ডার ও নারী উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন।
বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ফিলিপস পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ও একুশে পদক, দিল্লি থেকে দক্ষিণ এশিয়ার লেখকদের দেওয়া ‘রামকৃষ্ণ দয়াল হারমনি অ্যাওয়ার্ড’সহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এই অগ্রগণ্য কথাশিল্পী। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে নিরন্তর ঘণ্টা ধ্বনি, পোকামাকড়ের ঘরবসতি, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, গায়ত্রী সন্ধ্যা প্রভৃতি।
সেলিনা হোসেন জানালেন, সদ্য একটি বড় কাজ শেষ হলো, এখনো নতুন করে লেখালেখি শুরু করেননি। অচিরেই নতুন একটি উপন্যাসে হাত দেবেন তিনি। এটিও একটি বড় কাজ হবে, নামও ঠিক করেছেন—সংখ্যালঘু। ভারত ভাগের পর ১৯৪৭ সাল থেকে কাহিনি শুরু। অর্পিত সম্পত্তি আইনের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া কীভাবে পড়েছে আমাদের জনজীবনে, সে বিষয়টিই উঠে আসবে এই উপন্যাসে।

স্বদেশে-বিদেশে
জার্মানিতে এখন মুসলমানের সংখ্যা ৩৫ লাখ। দেশটিতে মসজিদ তথা ইসলামিক স্থাপত্যের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার ৬০০। স্টুটগার্ডের বিখ্যাত আলোকচিত্রী ভিলফ্রে ডেশাউ সারা দেশ ঘুরে এসব মসজিদের ছবি তুলেছেন। তাতে যেমন মুসলিম স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য উঠে এসেছে, তেমনি সেখানকার মুসলমানদের জীবনযাত্রার নানা অনুষঙ্গও ধরা পড়েছে তাঁর ক্যামেরায়। এসব ছবি নিয়েই একটি প্রদর্শনী চলছে ধানমন্ডির গ্যেটে ইনস্টিটিউটে।
জার্মান মসজিদের পাশাপাশি এ প্রদর্শনীতে আমাদের দেশের ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যও তুলে ধরে আলাদা প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হাসান সাইফুদ্দিন ও বাবু আহমেদ এসব ছবি তুলেছেন। প্রদর্শনী চলবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

অগ্রযাত্রার ৫৮ বছর
ঢাকার মোগল নায়েব নাজিমদের ব্যবহূত নিমতলীর বিলুপ্ত প্রাসাদের একমাত্র টিকে থাকা জরাজীর্ণ দেউড়ির ছোট্ট খুপরিতে যে সংগঠনটির জন্ম হয়েছিল ১৯৫২ সালে, তা আজ কর্মে যেমন বিপুল, তেমনি খ্যাতিতেও ছাড়িয়ে গেছে দেশের সীমানা। এ বছর ৫৮ বছরে পদার্পণ করল দেশের বিজ্ঞজনদের এই সংগঠন—বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। এশিয়াটিক সোসাইটির জন্ম উপমহাদেশেই। কলকাতায় ওয়ারেন হেস্টিংসের নির্দেশে প্রথম এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৭৮৪ সালে।
মানুষ ও প্রকৃতিবিষয়ক জ্ঞানের চর্চা বিকাশে ঢাকায় এশিয়াটিক সোসাইটি গঠনের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক এ এইচ দানী, ড. হাবিবুল্লাহ, ড. সিরাজুল হকসহ অনেকে। প্রথম সভাপতি ছিলেন তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী আবদুল হামিদ। এর পর থেকে দেশের ইতিহাস, বিজ্ঞান, কলাবিদ্যার চর্চায় সোসাইটি বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। গত শতকের আশির দশকে নিমতলী প্রাসাদ এলাকার সাত একর জায়গা কিনে গড়ে তোলা হয় সোসাইটির বহুতল নিজস্ব ভবন। সোসাইটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বললেন, ‘সরকারি সাহায্য, বিদ্যোত্সাহী ব্যক্তিদের অনুদান, নিজস্ব প্রকাশনা বিক্রি থেকে আয়ের অর্থ দিয়েই সোসাইটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি ও সোসাইটির নিজস্ব অর্থায়নে ২৮টি ট্রাস্ট ফান্ড থেকে গবেষণা কার্যক্রম চলছে। প্রতিবছর আট থেকে ১০ জন তরুণ গবেষককে এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ের গবেষণার বৃত্তি দেওয়া হয় সোসাইটি থেকে।’ সোসাইটির সাবেক সহসভাপতি ও ঢাকা প্রকল্পের পরিচালক শরিফউদ্দিন আহমেদ জানালেন, সোসাইটি থেকে বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও শিল্পকলা বিষয়ে তিনটি ইংরেজি ও একটি বাংলা ভাষার সাময়িকী প্রকাশিত হচ্ছে। এ ছাড়া সোসাইটি থেকে এযাবত্ অর্ধশতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১০ খণ্ডে দ্বিভাষিক বাংলা পিডিয়া, তিন খণ্ডে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ২৮ খণ্ডে ফ্লোরা এন্ড ফনা অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা, ঢাকা পাস্ট প্রেজেন্ট ফিউচার ইত্যাদি।
প্রতি মাসে বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ডের পক্ষ থেকে বিষয়ভিত্তিক বক্তৃতা ও বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান পণ্ডিতদের আমন্ত্রণ করে বিশেষ বক্তৃতারও আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাকার ৪০০ বছর নিয়ে চলছে বিপুল কর্মকাণ্ড, ঐতিহাসিক নিমতলীর প্রাসাদ দেউড়িটিও সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। এক হাজার ৪০০ সদস্যের এই সংগঠন এখন এগিয়ে চলেছে ছয় দশক পূর্তির দিকে।

বিসর্জন
রবীন্দ্রনাথ ঠকুরের বিসর্জন আজ শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালা মঞ্চে। বিসর্জন-এর মঞ্চায়নে অভিনবত্ব আছে। বিভিন্ন নাটকের দল থেকে অংশ নেওয়া শিল্পীদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ‘দশরূপক’ নামের একটি পেশাদারি প্রযোজনা সংস্থা। বিসর্জন তাদের প্রথম উদ্যোগ। প্রাচ্যনাট, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়, পদাতিক নাট্যসংসদ, বটতলা, ঢাকা পদাতিক, পালাকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন বিসর্জন-এ। নির্দেশনা দিয়েছেন লায়লা আফরোজ। তিনি জানালেন, দশরূপকের এ ধরনের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
দা হোমকামিং: প্রখ্যাত ব্রিটিশ নাট্যকার নোবেলজয়ী হ্যারল্ড পিন্টারের নাটক দ্য হোমকামিং-এর ছয় দিনব্যাপী মঞ্চায়ন চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের এই নাটকের মঞ্চায়ন শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। নাটকটি অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম, নির্দেশনা দিয়েছেন জিয়াউল হক। আগামী সোমবার পর্যন্ত মঞ্চায়ন চলবে।

সাহিত্য সমালোচনা
জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর সাম্প্রতিক গ্রন্থ সাহিত্যের স্বদেশ বিদেশ। ছোট-বড় মোট ১৪টি প্রবন্ধ। এ প্রবন্ধগুলো প্রকাশিত হয়েছিল বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। গ্রন্থাকারে এগুলো একত্র করা হয়েছে। গ্রন্থের নাম প্রবন্ধটি রচিত হয়েছিল অজিত গুহ স্মারক বক্তৃতা হিসেবে। সব কটি প্রবন্ধই সাহিত্যবিষয়ক। কবি, কবিতা, উপন্যাস বা আত্মজীবনীমূলক বিভিন্ন গ্রন্থের সমালোচনা। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী কবিতা দিয়েই শুরু করেছিলেন তাঁর লেখালেখি। ইংরেজি সাহিত্যের কৃতী ছাত্র ও অধ্যাপক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। কবিতায় বাংলা একাডেমী পুরস্কার, প্রবন্ধ এবং অনুবাদেও খ্যাতিমান। আত্মজীবনী আমার চলার পথ। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে আছে বাংলা প্রবন্ধ পরিচয়, কবিতা সংগ্রহ। সাহিত্যের স্বদেশ বিদেশ প্রকাশ করছে অনন্যা প্রকাশনী, প্রচ্ছদ এঁকেছেন কাইয়ুম চৌধুরী।

বসনে-ভূষণে
সামনেই মহান ভাষা আন্দোলনের মাস। এ মাসের অমর একুশের গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করেই আমাদের দেশে বাংলা ভাষার সৃজনশীল প্রকাশনার বিকাশ। সেই সূত্রে বছরের শুরু থেকেই লেখক-প্রকাশকদের ব্যস্ততা বাড়ে। অধুনা দেশি বুটিক হাউসগুলোও আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকজ উত্সব ও জাতীয় দিবসগুলোতে দিবসের তাত্পর্যের সঙ্গে সংগতি রেখে নানা ধরনের পোশাক-আশাক তৈরি করছে উত্সবকে আরও বর্ণাঢ্য করে তুলতে।
ভাষা আন্দোলনের মাস নিয়েও বুটিক হাউসগুলো কর্মতত্পর হয়ে উঠেছে। কে ক্রাফটের স্বত্বাধিকারী খালিদ মাহমুদ জানালেন, এবারের কে ক্রাফটের পোশাকে বেশ কিছু অভিনবত্ব আছে। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন কেবল আমাদের শহীদ দিবস নয়, এটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও। কাজেই শোকের সঙ্গে বাঙালির এই গৌরবময় অর্জনকে তুলে ধরার বিষয়টিও পোশাকের ডিজাইনে প্রাধান্য পাবে। এ ছাড়া পোশাকের সঙ্গে মানানসই সাজসজ্জার উপকরণও থাকবে। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই আসতে শুরু করবে এসব বসন-ভূষণ।

গৌরবদীপ্ত স্মৃতি
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজাইন বিভাগে কাজ করেছেন শিল্পী বীরেন সোম। যুদ্ধ দেখেছেন খুব কাছ থেকে। সেই গৌরবময় যুদ্ধের দীপ্তিমান স্মৃতিই তিনি তুলে ধরেছেন ক্যানভাসে। তবে প্রেক্ষাপট আরও বিস্তৃত। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ তাঁর এবারের প্রদর্শনীর বিষয়। প্রদর্শনীর নাম ‘ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা’। ধানমন্ডির শিল্পাঙ্গনে ১০৪টি কাজ নিয়ে চলছে প্রদর্শনী, খোলা থাকবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ উপলক্ষে প্রদর্শনীর আয়োজক চন্দ্রবতী একাডেমি তাঁর জীবন ও কাজের ওপর ভিত্তি করে বীরেন সোম: হিজ টায়ারলেস ওডিসি নামের একটি গ্রন্থও প্রকাশ করেছে।

মহাজাগতিক
এক মহাজাগতিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে এখন উত্সুক বিজ্ঞানমনস্করা। বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ হবে ১৫ জানুয়ারি। সূর্যগ্রহণ নিয়ে গত বছরেও দেশের মানুষের মধ্যে বেশ ঔত্সুক্য সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ছিল পূর্ণগ্রাস গ্রহণ। আমাদের দেশের উত্তর প্রান্ত থেকে এই দুর্লভ মহাজাগতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এবারও এমন একটি দুর্লভ সুযোগ এসেছে, তবে তা দেখা যাবে দক্ষিণ প্রান্ত থেকে।
কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণের দৃশ্য দেখা যাবে সবচেয়ে ভালো। আমাদের দেশ থেকে বলয় গ্রহণের এমন দৃশ্য আবার দেখা যাবে ২০৬৪ সালে। চাঁদের ছায়া পড়বে সূর্যের ঠিক মাঝখানে। তবে পুরো সূর্য ঢাকা পড়বে না। চাঁদের ছায়াটি আকারে একটু ছোট হবে বলে কিনার দিয়ে একটি স্বর্ণবলয়ের মতো দীপ্তিমান বলয় দেখা যাবে। এ জন্যই এর নাম বলয়গ্রাস। সুযোগটি হাতছাড়া না করতে আগ্রহী ব্যক্তিদের অনেকেই যাচ্ছেন দক্ষিণে।
সূর্যগ্রহণ ও সমুদ্র—উভয় দর্শনই সম্পন্ন হবে একসঙ্গে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এসব মহাজাগতিক ঘটনা নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার দূর করে তাদের বিজ্ঞানমনস্ক করতে দেশের বিজ্ঞান ক্লাবগুলো অনেক দিন থেকেই কাজ করছে। তাতে ইতিবাচক ফলও এসেছে। গ্রহণের সময় পানাহার করা যাবে না, এমন অনেক ভ্রান্ত ধারণা মানুষ ত্যাগ করছে।
এবারও বিভিন্ন ক্লাব গ্রহণ দেখার জন্য ক্যাম্প করছে সারা দেশেই। তবে দেখতে হলে সতর্কতাও অবলম্বন করা দরকার। গ্রহণের সময় সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে তাতে ক্ষতি হবে চোখের। এ জন্য এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা যেমন পরামর্শ দিয়েছেন, অবশ্যই সেভাবে নির্দিষ্ট চশমা ব্যবহার করাই হবে সুবিবেচনার পরিচায়ক।
আশীষ-উর-রহমান: সাংবাদিক।

No comments

Powered by Blogger.