নগর সরকার-নাগরিক সেবা বাড়াতেই হবে

কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশনে নগর সরকার বা সিটি গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রোববার সমকালে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদে দেখা যায়, সরকার উলি্লখিত দুটি সিটি করপোরেশনে উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজগুলোকে এর আওতায় এনে সমন্বিত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।


ফলে নগর উন্নয়ন ও সেবা ক্ষেত্রে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ, নাগরিকদের ভোগান্তি হ্রাস ও পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার স্বপ্ন পূরণ সহজ হবে। নগর-মহানগরের নির্বাচিত মেয়র ও কমিশনারদের তাদের নির্বাচক জনতার প্রতি দায়বদ্ধতাও বেড়ে যাবে। স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান উলি্লখিত দুটি পৌর এলাকায় আধুনিক বিশ্বের নগরগুলোর আদলে নগর সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানালেও প্রাথমিকভাবে এগুলোর আওতায় নগর পুলিশ থাকবে না বলেও স্বীকার করেছেন। নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টিও নগর সরকারের আওতায় আনা হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে নাটকীয় উন্নতি সম্ভব। অবশ্য এ মুহূর্তে এটা কার্যকর করতে গেলে পুলিশ প্রশাসনে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় কি-না সে ব্যাপারে সরকারের মনে দোলাচল কাজ করে থাকতে পারে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব আধুনিক রাষ্ট্রের কাউন্টি বা সিটি করপোরেশনগুলোর মতো আমাদেরও নগর সরকারের হাতেই অর্পণ করা উচিত। এতে পুলিশ প্রশাসনও জনগণের নিরাপত্তা-সেবা প্রদানে আরও দায়িত্বশীল হবে। ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং সাদেক হোসেন খোকাসহ অনেকেই নগর সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার উল্লেখ করেছেন। বিশেষজ্ঞরাও এ ধরনের সরকারের পক্ষে যুক্তি উত্থাপন করেছেন। তারপরও এত দিন বিষয়টি নানা কারণে ঝুলে ছিল। বিলম্ব হলেও এবার সব বাধা অতিক্রম করে সেটা রংপুর ও কুমিল্লায় প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এটাই আশার কথা। রংপুর ও কুমিল্লায় নগর সরকার প্রতিষ্ঠার সরকারি সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। পর্যায়ক্রমে যেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সবক'টি সিটি করপোরেশনে এ ব্যবস্থা চালু করা যায় সে জন্য সরকারকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। ভবিষ্যতে নগর সরকারের আওতায় নগর পুলিশকে ন্যস্ত করার বিষয়টিও জননিরাপত্তা ক্ষেত্রে উন্নতির স্বার্থেই বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.