তুরাগ সেতুতে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন by মুসলিমা জাহান

ঢাকার সাভার উপজেলার আমিনবাজার ও ভাকুর্তা ইউনিয়নের মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের তুরাগ সেতু। ইস্পাতের তৈরি সেতুটির বিভিন্ন অংশের সংযোগ খুলে যাতায়াতের অনুপযোগী হওয়ায় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

কিন্তু যোগাযোগের অন্য কোনো সহজ পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই সেতু দিয়ে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর বিভিন্ন অংশের সংযোগকারী পাতের ঢালাই ও স্ক্রু খুলে গেছে। কয়েকটি স্থানের পাত ভেঙে পড়েছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে চলাচলকারীরাই মনে করছেন।
আমিনবাজার ও ভাকুর্তা ইউনিয়নবাসীকে প্রতিদিন নানা কাজে রাজধানী ঢাকায় যেতে হয়। তুরাগ সেতু ছাড়া রাজধানীতে যেতে হলে সাভারের হেমায়েতপুর হয়ে অথবা বসিলা সেতু হয়ে যেতে হয়। এই পথে যাতায়াতে সময় ও খরচ অনেক বেশি হওয়ায় এলাকাবাসী ও গাড়িচালকেরা ঝুঁকি নিয়েই এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করছেন। সেতু পার হওয়ার সময় বাসের এক যাত্রী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সেতুর যে অবস্থা, বেঁচে ঘরে ফিরব কি না, জানি না। তাই কাজে বের হওয়ার আগে মা-বউয়ের কাছে মাফ চেয়ে বের হই।’
ভাকুর্তার বাসচালক বাবুল বলেন, ‘জানটা (জীবন) হাতে নিয়ে চলি। যাতায়াত না করে উপায় নেই। কাজ না করলে কী খাব?’
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সেতুর আশপাশে ৪০টির বেশি ইটভাটা রয়েছে। সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও ভাটার মাটি, ইটসহ বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ট্রাক চলাচল করে। তাই সেতুটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভাকুর্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিজ উদ্যোগে সেতুর ওপর অ্যাঙ্গেল (লোহার রড দিয়ে অস্থায়ী বাঁধা) দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু ইটভাটার মালিকেরা তো প্রভাবশালী।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য বসানো লোহার পাত বাঁকিয়ে ট্রাকসহ সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল করছে।
চেয়ারম্যান জানান, মাস দেড়েক আগে কয়েকবার এলজিইডির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সেতু মেরামতের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে ১৫ দিন আগে ‘ক্ষতিগ্রস্ত সেতু যানবাহন চলাচল নিষেধ’-সংবলিত সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে এলজিইডির সাভার উপজেলার প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। শিগগিরই সেতুটি পর্যবেক্ষণ করে মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

No comments

Powered by Blogger.