আত্মশুদ্ধির মাস by মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব

আল্লাহতায়ালা রোজার বিধান ফরজ করে আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং ধৈর্য ধরার শক্তি অর্জন করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিত হবে এই রমজানে আত্মশুদ্ধিমূলক কয়েকটি আমল অতি গুরুত্ব সহকারে পালন করা। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'রোজা মানুষের ঢালস্বরূপ; যতক্ষণ তা ফেড়ে না ফেলা হয়।'


এর অর্থ হলো, মানুষ যেভাবে ঢাল দ্বারা নিজেকে রক্ষা করে, ঠিক তেমনি রোজার দ্বারাও নিজের দুশমন অর্থাৎ শয়তান থেকে আত্মরক্ষা করবে। অন্য এক বর্ণনায় আছে, রোজা আল্লাহর আজাব থেকে বান্দাকে রক্ষা করে। অপর বর্ণনায় আছে, জাহান্নাম হতে বাঁচায়। কেউ একজন জিজ্ঞেস করল যে, রোজা কোন জিনিসের দ্বারা ফেড়ে যায়? নবী (সা.) বললেন, মিথ্যা ও গিবতের দ্বারা। এরূপ আরও অনেক রেওয়ায়েত আছে হাদিসের কিতাবে। রোজা অবস্থায় মিথ্যা বলা এবং গিবত থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। রমজান মাসে আমরা একটু অবসর থাকি বলে গিবতের আসর জমিয়ে বসি; এটা অনুচিত। কোনো মানুষের দোষ থাকুক বা না-ই থাকুক, যদি তার পেছনে বা আড়ালে এমন আলোচনা করা হয়, যা শুনলে সে মনে কষ্ট পাবে, তাই গিবত বা পরনিন্দা। আরেকটা সূক্ষ্ম বিষয় যা নিয়ে মানুষ তেমন একটা ভাবে না। তা হলো, কারও প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা। এটা মারাত্মক গোনাহের কাজ। আমাদের উচিত হলো মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি সবসময় সুধারণা পোষণ করা। মানুষের গোপনীয় বিষয়গুলো খোঁজে না বেড়ানো। অন্যের গোপন বিষয় খোঁজা, গিবত এবং খারাপ ধারণা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা সূরা হুজুরাতের ১২নং আয়াতে বলেন, 'মুমিনগণ! তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গুনাহ। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।'
রোজা রেখে মানুষ শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে কোনো কোনো মানুষের মেজাজে উগ্রতা ভাব প্রকাশ পায়। সে তখন কথাবার্তায় গালাগাল করে। এ জন্যই হাদিছে এসেছে, যদি কোনো রোজাদারকে কেউ গালি দেয়, তাহলে রোজাদারের উচিত সে যেন বলে ভাই আমি রোজাদার। অর্থাৎ কোনোক্রমেই রমজানের মাসে ঝগড়া না হয় সেদিকে কঠোরভাবে খেয়াল রাখা।
 

No comments

Powered by Blogger.