গাবতলীর বাগবাড়ী রাস্তা দখল করে যানজট

বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলা’সহ ধুনট ও শাজাহানপুর সিমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হিসাবে গড়ে উঠেছে বাগবাড়ী হাট-বাজার। এ বন্দরের পাকা রাস্তার দুপার্শে¦ ফাঁকা জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে স্থায়ী ও ভাসমান দোকানপাট। ফলে প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। জানা যায়, বাগবাড়ী ফাজিল মাদ্রাসা হইতে শহীদ জিয়া কলেজ পর্যন্ত রাস্তা দু’পার্শ্বে ফাঁকা অধিকাংশ জায়গা জবর দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে চা-বিস্কুট, ফল, কাঁঠ, বাঁশ, কাপড়, ধান ও চারাগাছ’সহ নানা প্রকারের ভাসমান দোকানপাট। বাগবাড়ী বাজার ৫৮শতাংশ জমির উপর অবস্থিত হলেও রাস্তা, ইমারত নির্মাণ, মসজিদ ও ভূমি অফিস হওয়ায় তুলনামূলক ভাবে বাজারের জায়গা কমে যায়। ফলে হাট-বাজার ইজাদারগন তাদের আয় বাড়ানোর জন্য ঐ সব লোকালয় রাস্তা পাশে অবৈধভাবে বসা দোনকানদার দের নিকট থেকে খাজনা আদায় করে আসছে। ফলে একদিকে যেমন বাড়ছে যানজট তেমনি অপরদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে খাজনা জমার হার। এতে করে পথচারী, ভ্যান-রিক্সা, সিএনজি ও সাধারন পরিবহনের যাত্রী’সহ সকল মানুষকে চরমভুগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি জেন দেখারও কেউ নেই। বগুড়ার বাইপাস নিচুতলা হতে মাদলা হয়ে বাগবাড়ী রাস্তার উপর দিয়ে এ পথে ধুনট উপজেলা, সিরাজগঞ্জ জেলা ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশের্^ থেকে একমাত্র সিএনজি চালিত গাড়ী’র পথ। মহাসড়কে তিন চাকা গাড়ী নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে এ পথে দিয়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। এমনকি যানজট কারনে প্রতিদিন বাগবাড়ী এলাকায় স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল-মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীদের কে যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে চরম ভাবে ভোগোন্তি পোহাতে হচ্ছে। এমনকি নশিপুর ইউনিয়নের বাগবাড়ীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গ্রামের বাড়ী (জন্ম ভূমি) হওয়ায় সেখানে নানা কর্মসূচী পালন করার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থীগন ছুটে এসে তাদেরকে অনেক সময় যানজটে পড়তে হয়। বাগবাড়ী বাজার এলাকায় নিত্যদ্রব্য সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পন্যে’র ব্যাপক কদর রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ট্রাক বুঝায় করে রাজধানী’সহ সারা দেশে কাঁচামাল রপ্তানী করে আসছে। ধুনট নিমগাছি ইউনিয়ন থেকে ইটভাটা’র মাটি ও বালি ব্যবসায়ীগণ বগুড়ার বিভিন্ন প্রান্তে ট্রাক যোগে এ পথ দিয়ে মাটি ও বালি নিয়ে যায়। সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন বাগবাড়ীতে ব্যাটারী চালিত অটোভ্যান, ভটভটি ও সিএনজি রাখার জন্য আলাদা কোন ষ্ট্যান্ড নেই। ফলে রাস্তার দু’পার্শ্বে ফুটপাত জবর দখল করে সে ফাঁকা জায়গায় ভ্যান-রিকসা, ভটভটি ও সিএনজির ষ্ট্যান্ড হওয়ায় গাড়ীগুলো যত্রতত্র ভাবে রাস্তা উপর রাখা হয়।
বাগবাড়ী বাজারে প্রতিসপ্তাহে শনিবার ও সোমবার এবং বৃহস্পতিবার হাট বসে। এ দিন গুলোতে বাগবাড়ী হাইস্কুল থেকে ধুনট রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা উপর শতাধিক দোকানপাট বসে তাদের পন্য বেচা কেনা করা হয়। ফলে রেজা ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে মাজবাড়ী রাস্তা পর্যন্ত সারাক্ষণ যানযট লেগেই থাকে। এতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীদের চরম দুভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে বাগবাড়ী বণিক সমিতি সাধারন সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, জানজটের ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাগন নির্বিগ্নে সময়মত আসতে পারে না। ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে’র চরম ক্ষতি হচ্ছে। ‘বাগবাড়ী মটর শ্রমিক বিশ্রামাগার’ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম রাজু জানান, আমাদের ভ্যান ও ভটভটি-সিএনজি রাখার জন্য নির্দিষ্ট কোন ষ্ট্যান্ড নেই। ফলে ফুটপাত জবরদখল হওয়ায় গাড়ীগুলো বাঁধ্য হয়ে রাস্তা উপর রাখতে হচ্ছে। এতে করে যানযট সৃষ্টি হয়। বাগবাড়ী বন্দরে একটি ভ্যান ও ভটভটি-সিএনজি রাখার ষ্ট্যান্ড খুব প্রয়োজন। বাগবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী মোতাহার হোসেন জানান, প্রতিহাটে ৬০টাকা ও প্রতিদিন ১০টাকা খাজনা দিতে হয়। ফলে গতবছরের চেয়ে এবছরে খাজনার পরিমান বেড়েছে। বাগবাড়ী বাজার কাঁচা বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, প্রতিদিন বাগবাড়ী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ট্রাক বুঝায় তরে কাঁচা মাল সরবরাহ করে আসছি। কিন্তু বাগবাড়ী বাজারে যানজটের কারণে সঠিক সময়ে মালামাল পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না। নশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিন্টু জানান, আমাদের বাগবাড়ী বাজার এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। আমি বাজার মার্কেট মালিকদের রাস্তার জায়গা বাদ দিয়ে দোকানপাট বাসাতে বলেছি। কিন্তু এতে কোন কাজ হচ্ছে না। বাগবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সোহেল রানা জানান, রাস্তায় যানজট মুক্ত রাখার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও সচেতন এলাকাবাসী যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.