অগস্ত্য যাত্রা থেকে ফিরতে হবে by এ কে এম শাহনাওয়াজ

ক্ষমতা দখলের রাজনীতি থাকলে সেখানে গণতন্ত্র নির্বাসনে যায়। আর গণসমর্থনে ক্ষমতা প্রাপ্তির পথ খুঁজলে গণতন্ত্র তার প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে পায়। আমাদের দুর্ভাগ্য, এদেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে সরকার পক্ষ পেশিশক্তি ব্যবহার করছে আর বিরোধীশক্তি ক্ষমতা পাওয়ার জন্য জিম্মি করছে গণমানুষকে। জনগণের ওপর নিবর্তনমূলক কর্মসূচি চাপিয়ে দিয়ে সরকারকে দুর্বল করতে চাইছে। জনগণের ঘাড়ে পা রেখে প্রতারকের মতো জনগণের দোহাই দিয়ে মসনদের কাছে পৌঁছার জন্য নানা কসরত করছে। এসব আচরণে জনগণের সমর্থন আছে কি-না তা বিবেচনা করার কোনো দায় বোধ করছে না। ২০ দলীয় জোট তথা বিএনপি ক্ষমতা হাতড়ে বেড়াতে গিয়ে এতই মরিয়া যে, প্রতি মুহূর্তে স্ববিরোধিতায় তারা নিজেদের দুর্বল করে ফেলছে।
গত বছর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচন বর্জন করেছিল। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের জোট নির্বাচনের ময়দানে অনেকটা ওয়াকওভার পেয়ে যায়। ১৫৩ প্রার্থী কোনো প্রতিপক্ষ না পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আবার যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল, সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা দুর্বল থাকায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় জোট সরকার গঠন করে। তাই শুরু থেকেই বিএনপি ও এর জোট বন্ধুরা এ সরকারকে ‘অবৈধ সরকার’ বলে আসছে। যে সরকার বিএনপির কাছে অবৈধ, সেই সরকারের কাছে চাইবার কিছু থাকে না। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের ভাষায় অবৈধ সরকারের কাছে প্রতিনিয়ত নানা দাবি জানিয়ে আসছে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি করছে, সংলাপ করতে চাইছে, আর অতিসম্প্রতি অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার তথা ‘অবৈধ সরকারে’র কাছে বিএনপি নেত্রী সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। অবৈধ সরকার বলে পরিত্যাজ্য সরকারের কাছে দাবি উত্থাপন করলে তার কি কোনো বৈধতা থাকে?
প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে বিএনপির কী করার রয়েছে? আসলে অবৈধ বলে ফেলার পর একটিই অবকাশ থাকে তা হচ্ছে- প্রবল গণআন্দোলন তৈরি করে ‘অবৈধ সরকারে’র পতন ঘটানো। সেরকম এক-আধটা চেষ্টা হয়েছিল। জনগণের মধ্যে এর পক্ষে তেমন সাড়া পড়েনি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব এ সময়টিতে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া চালু করেছিল। মুক্তিযুদ্ধøাত দেশপ্রেমিক মানুষের প্রাণের দাবি এ বিচার প্রক্রিয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিএনপির। যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত জামায়াতের সঙ্গে দলটি বন্ধুত্ব ত্যাগ করতে পারেনি। বিচারকে দুর্বল করার জন্য জামায়াত নানাভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করতে থাকে। তৈরি করতে থাকে অরাজকতা। আর এর ভাগীদার হয়ে গণমানুষের আস্থা থেকে ক্রমাগত দূরে চলে যেতে থাকে বিএনপি। এ বিষয়টিকে মোটেও বিবেচনায় আনতে চাননি বিএনপি নেতৃত্ব। তার ওপর বিএনপি রাজপথের আন্দোলনে শক্তি ও উন্মত্ততার দায়িত্ব জামায়াত-শিবিরের হাতে দিয়ে মনোবল নষ্ট করে দেয় নিজ কর্মী-সমর্থকদের। ফলে আন্দোলনে রাজপথ গুলজার করার অভ্যাস প্রায় নষ্ট হয়ে যেতে থাকে বিএনপি নেতাকর্মীদের।
বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগও যে দলতন্ত্র ও ক্ষমতাতন্ত্রের মোহ ছেড়ে জনগণের রাজনীতি করে গণতন্ত্রকে উজ্জীবিত করছে, তেমনটি বলা যাবে না। কিন্তু ব্যাকফুটে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোটের জন্য দুর্ভাগ্য, সরকারে থাকাকালে বিএনপির অতীত এতটা উজ্জ্বল ছিল না যে, এ দুঃসময়ে মানুষ বিএনপিকে মন্দের ভালো বিবেচনা করবে। তাই বিএনপির ডাকে সাধারণ মানুষের রাজপথে নামার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া অর্থনৈতিক বাস্তবতায় মানুষ এখন এতটা
সংকটে নেই যে, সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে তাদের ভাবতে হবে। বরঞ্চ রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন বাধাগ্রস্ত হলে তারা ক্ষুব্ধ হয়।
আমরা একটু পেছনে তাকাতে পারি। আমরা নিশ্চয়ই ভুলে যাইনি, ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল বিএনপি। অল্প কয়েক দিনেই দেশের ইতিহাসে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির ইমেজ নামতে নামতে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। নেতা-নেত্রীদের এতদিনকার মাঠ কাঁপানো বক্তৃতা তখন চরম মিথ্যাচার ছিল বলে মানুষের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। দেশটি বারবার দুর্নীতির ধারণা সূচকে বিশ্বসেরা হওয়ার কলংক গায়ে মেখেছে প্রধানত কাদের জন্য, তা আর কাউকে বলে বোঝাতে হয়নি। বাঘা বাঘা বিএনপি নেতা দুর্নীতির দায়ে একে একে অন্তরীণ হচ্ছিলেন জেলে। এখন যেমন বিএনপি নেতাকর্মীরা নিদানে খালেদা জিয়ার জন্য মাঠে নামার সাহস দেখাচ্ছেন না, তখনও এমন দশাই ছিল। পাঠক হয়তো মনে করতে পারবেন, খালেদা জিয়াকে সে সময় একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রায় ‘অনুচর-সহচরশূন্য’ অবস্থায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে হয়েছিল। এটাই বোধহ ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম। ক্ষমতা ছাড়ার আগ পর্যন্ত বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া ক্রমাগত ‘উন্নয়ন’ আর ‘উন্নয়নের জোয়ার’ বলে বলে কান ঝালাপালা করে দিয়েছিলেন, পাশাপাশি গোলক ধাঁধায় পড়েছিল দেশবাসী। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি, ভেঙে পড়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, সন্ত্রাসের বাড়বাড়ন্ত, শিল্প খাতে অবক্ষয়, বিমানের খুঁড়িয়ে চলা অবস্থা, চট্টগ্রাম বন্দরের রুগ্নদশা, পিএসির প্রশ্নপত্র বারবার ফাঁস হওয়াসহ নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে দেশকে ডুবিয়ে দেয়ার পরও বিএনপি নেত্রী উন্নয়নের জোয়ার বলতে আসলে কী বোঝাতে চাচ্ছিলেন, তা এক গভীর রহস্য ছিল দেশবাসীর কাছে। এরপর রহস্যের জট ক্রমে খুলেছিল। সরকারে থাকাকালে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল বিএনপি। জনগণের সম্পদ ও ভাগ্য খুবলে খেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা-নেত্রীরা এক-একজন ফুলে ঢোল হয়েছিলেন। যে কারণে এখন সরকারে দুর্নীতি-সন্ত্রাস প্রবলভাবে চালু থাকলেও তাদের বিকল্প হিসেবে বিএনপিকে ভাবা সাধারণ মানুষের পক্ষে সহজ নয়।
২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপির ভূমিধস পরাজয়ের কারণ বোঝার জন্য খুব বড় বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার ছিল না। সে সময়ের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বাস্তবতা, বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের ক্ষত, শ্রমজীবী মানুষের কর্মচ্যুতি, অনিয়ন্ত্রিত বাজার, যুদ্ধাপরাধ ইস্যু, বিএনপির প্রার্থী নির্বাচনে দুর্বলতা, নির্বাচন ইস্যুতে ভুল পথে হাঁটা, সময়ের পরিবর্তিত রূপকে বিবেচনায় না রেখে বিএনপি নেত্রীর গৎবাঁধা বক্তৃতা দিয়ে বেড়ানো, ভুয়া ভোটার তালিকা ছেঁটে নির্বাচন কমিশনের সহি ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সীমানা পুনর্নিধারণ, আওয়ামী লীগের অপেক্ষাকৃত সুবিবেচনাপ্রসূত প্রার্থী নির্বাচন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার- যাদের ওপর দলীয় আঁচড় তখনও রেখাপাত করেনি এবং যারা দুর্নীতিবাজ আর যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তাদের ভোট জামায়াত নিয়ন্ত্রিত এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপি নেতৃত্বের জোটের বাক্সে পড়ার সম্ভাবনা ছিল প্রায় শূন্যের কোটায়। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা- এসব কিছু মিলিয়ে যে কোনো সচেতন মানুষ অংকের যোগফল টানলে ফল অভিন্ন হওয়ারই কথা। তাই সে সময় নির্বাচনের ফলাফলটি প্রত্যাশিতই ছিল।
তবে মানতে হবে, সে সময়ের গণরায়ের পুরোটাই আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের পক্ষে ছিল না; বরঞ্চ বলা ভালো, এ ছিল বিএনপির যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া এবং পাঁচ বছরের অপশাসনসহ নানা দুষ্কর্মের বিরুদ্ধে গণরায়। আমরা বহুবার বলেছি, লিখেছি- জামায়াত-নির্ভরতা বিএনপিকে অন্তঃসারশূন্য করে দিচ্ছে। সময় অনেক গড়িয়েছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের এ সময়টিকে যথাযথ অনুধাবন করলে বিএনপির নেতৃত্ব বুঝতে পারতেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ভুলিয়ে দেয়ার প্রকল্পটি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। অপেশাদার যোদ্ধাই ভোঁতা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে যায়। জামায়াত-বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে এ অস্ত্র নিয়েই বিএনপি মাঠ কাঁপাতে চেয়েছিল।
দাক্ষিণাত্য থেকে এসে প্রাচীন বাংলার শাসনক্ষমতায় জেঁকে বসা সেন রাজারা জনবিক্ষোভ এড়াতে সাধারণ শূদ্র বাঙালির ওপর নিবর্তনমূলক নানা রকম বিধি চাপিয়ে দিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি ছিল, কালাপানি পাড়ি দেয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অর্থাৎ সমুদ্র পাড়ি দেয়া যাবে না। কেন? পাছে ভয়, অন্য দেশের মানুষের সংস্পর্শে এসে যদি চোখ খুলে যায় শূদ্র বাঙালির। তখন ধর্মের দোহাই দিয়ে যা বলবে মানুষ তা নির্বিচারে মানবে না। বর্তমান সময়ে এ দেশের মানুষের কিন্তু ‘কালাপানি’ পাড়ি দেয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সরল সাধারণ ধর্মভীরু অশিক্ষিত বা স্বল্পশিক্ষিত মানুষও এখন কিন্তু আর অতটা অন্ধকারে নেই। রাস্তাঘাট পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বিজলি বাতি পৌঁছে গেছে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। রেডিও-টেলিভিশনের সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে। এনজিও কর্মীরা পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও নানা কর্মপ্রয়াসে যুক্ত করেছেন। অনেক পরিবারেই কমবেশি শিক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যুক্তিবুদ্ধি তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে ডিজিটাল যুগের তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তথ্যসূত্রবহির্ভূত রাজনৈতিক প্রচারণা চালালে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।
আজ বিএনপি জোট যখন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে অবৈধ বলে মানুষকে মাঠে নামাতে চাইবে, তখন কিন্তু মানুষ সহজে তাতে সাড়া দেবে না। কারণ তারা ভাবতে পারে, নির্বাচনের আয়োজনটা তো নিয়ম মাফিকই হয়েছিল। নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপিকেও অংশ নিতে বলা হয়েছিল। সাংবিধানিক শক্তি বলে আওয়ামী লীগ যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মানে, তাতে বিএনপির গোঁ ধরে বসাটা ঠিক হয়নি। এত সবের পরও বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রতিহত করার হুমকিকে মানুষ অগণতান্ত্রিক আচরণ বলেই মনে করেছে। শুধু হুমকি নয়, সরকারকে শাস্তি দিতে বা চাপে ফেলতে সাধারণ মানুষের ওপর যে নিবর্তন চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল, তা কি মানুষ ভুলতে পেরেছে! পেট্রল বোমা মেরে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারা হয়েছে। একের পর এক গুলি-বোমার সন্ত্রাস ছড়ানো হয়েছে। যা ১১০ জন মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। অসংখ্য মানুষকে আহত করেছে। গাড়ি পুড়িয়েছে। লাইন উপড়ে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। গাছ কেটে, রাস্তা কেটে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। তারা নির্বাচন বর্জন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জায়গাটি শূন্য করে দিয়ে ১৫৩ প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন জয় পেতে সাহায্য করেছে। আর ভীতি ছড়িয়ে, শতাধিক ভোট কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়ে, নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষককে খুন করে অনেক ভোটারকে জবরদস্তি ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে। এ বাস্তবতায় বিএনপি জোট যেভাবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করছে, সাধারণ মানুষ বিষয়টিকে সেভাবে দেখছে না। এসব বিচারে সাধারণ মানুষকে রাজপথে নামানোর মতো কোনো পরিবেশ বিএনপি জোট তৈরি করতে পারেনি।
যখন বিএনপি নেতাদের উচিত ছিল জামায়াত সংশ্রব ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে মানুষের আস্থা অর্জন করা, তখন তারা বরাবরের মতো রাজপথে নামতে না পেরে লাগাতার অবরোধ ঘোষণা দিয়ে গণমানুষকে আবার নিপীড়নের ভেতর ফেলে দিল। এভাবে বিএনপি একদিকে নিজেকে দুর্বল করে আওয়ামী লীগ নেতাদের স্বৈরাচারী হওয়ার পথ তৈরি করে দিচ্ছে, অন্যদিকে আরও কঠিন করে দিচ্ছে গণতন্ত্রে পৌঁছার পথ। এ সত্য বিএনপি নেতারা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন, তত দ্রুত দেশে স্বস্তি ফিরবে। আর রাজনৈতিকভাবে যে দুর্দশায় পড়েছে বিএনপি, তাতে মনে হয় ক্ষমতায় যাওয়ার দূরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করেই আপাতত অগস্ত্য যাত্রার হাত থেকে নিজেকে ফেরাতে পারবে তারা।
ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.