আরিফ-গউছ সাময়িক বরখাস্ত

গ্রেপ্তারের ৮ দিন পর সাময়িক বরখাস্ত হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল বিকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মঙ্গলবার একই মামলায় হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জিকে গউছকেও বরখাস্ত করা হয়। তবে কারাবন্দি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বরখাস্ত সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনে এসে পৌঁছেনি। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব জানিয়েছেন, এ বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জানতে পেরেছেন। দু’একদিনের মধ্যে আদেশের চিঠি সিলেটে এসে পৌঁছতে পারে বলে জানান তিনি। সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আইন (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ এর ধারা ১২ এর ১ উপধারায় বলা হয়েছে- কোন সিটি করপোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র গৃহীত হলে সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে লিখিত আদেশের মাধ্যমে ওই মেয়র বা কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে। এই আইনেই আরিফকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার তৃতীয় দফা চার্জশিটে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন্নেছা সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আসামি করে হবিগঞ্জের মুখ্য হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছিলেন। চার্জশিট দাখিলের পর নাম-ঠিকানায় ভুল থাকায় আদালত তা সংশোধন করতে সিআইডিকে নির্দেশনা দেন। পরে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা নাম-ঠিকানা সঠিক করে গত ২১শে ডিসেম্বর আদালতে সম্পূরক চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিট জমা দেয়ার পরপরই আদালত সেটি আমলে নিয়ে পলাতক থাকা সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকে অনেকটা আত্মগোপনে চলে যান আরিফুল হক চৌধুরী। তবে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর গত ২৬শে ডিসেম্বর হবিগঞ্জের পৌর মেয়র গউছ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ৩০শে ডিসেম্বর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তাকেও কারাগারে পাঠান। হবিগঞ্জের কারাগারে বন্দি থাকা আরিফুল হক চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবার সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কারাবন্দি থাকায় জিকে গউছকে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়। আদেশে বলা হয়, যেহেতু মেয়র জিকে গউছকে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে এবং তিনি জামিন আবেদন করার পর তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে সেজন্য বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। অপর এক আদেশে হবিগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও মহিলা কাউন্সিলর পিয়ারা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আদেশে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদ শূন্য হওয়ায় পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ স্থানীয় সরকার (পৌরসভা)-এর কার্য বিধিমালা অনুসরণ করে মেয়রের আর্থিক ও দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্যানেল মেয়র পিয়ারা বেগমকে দায়িত্ব প্রদান করা হলো। আদেশের অনুলিপি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সচিবকে প্রদান করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.