মাদারীপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর

(মাদারীপুরের সদর থানা ঘেরাও করে গতকাল ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন পরিবহনশ্রমিকেরা। এতে থানার কক্ষের জানালার কাচ ভেঙে যায় l প্রথম আলো) মাদারীপুর সদর উপজেলায় পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে আটক করা নিয়ে পরিবহনশ্রমিকেরা থানা ঘেরাও করে ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রমিকেরা মাদারীপুর-শরীয়তপুর ও ঢাকা-বরিশাল সড়ক প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ, পরিবহন শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকার একটি হত্যা মামলার সাক্ষী ছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার ছয়না গ্রামের মঙ্গল তালুকদার (৫২) নামের এক পরিবহন শ্রমিক। সাক্ষ্য না দেওয়ায় উচ্চ আদালত থেকে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় মঙ্গলকে গ্রেপ্তার করে সদর থানায় নেওয়া হয়। খবর পেয়ে শ্রমিক নেতারা তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। একপর্যায়ে র্যাব-৮-এর একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে র্যাবের সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় র্যাবের সদস্যরা মাদারীপুর সদর থানায় ঢুকে পড়েন। তিন শতাধিক শ্রমিক চারদিক দিয়ে থানা ঘেরাও করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে পুলিশ, র্যাব ও শ্রমিকদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। শ্রমিকেরা মাদারীপুর সদর থানার দরজা ও জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। সংঘর্ষে আট শ্রমিক আহত হন। সংঘর্ষের সময় র্যাব চারটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলকে পুলিশ ছেড়ে দেয়।
মাদারীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘আমরা পরিবহন নেতারা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছিলাম। এমন পরিস্থিতিতে র্যাবের সদস্যরা আমাদের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকেরা পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়েন। কারা থানা ভাঙচুর করেছে তা আমাদের জানা নেই।’
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, ‘মঙ্গল তালুকদার সাক্ষ্য দিতে আদালতে যাচ্ছিলেন না। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি নিয়ে থানার সামনে পুলিশের একজন উপপরিদর্শকের সঙ্গে তাঁর (মঙ্গল) কথা হয়। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারের আগেই তিনি পালিয়ে যান। ঘটনাটি নিয়ে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হলে র্যাবের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।’
র্যাব-৮-এর কর্মকর্তা এএসপি সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলা তৈরি হলে র্যাবের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হস্তক্ষেপ করেন। তখন উত্তেজিত শ্রমিকেরা র্যাব ও পুলিশের ওপর হামলা চালান। পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.