জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সরকার -সংবাদ সম্মেলনে ড্যাব

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পেপার স্প্রে ছুড়ে সরকার জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এতে জাতিসংঘের সনদও লঙ্ঘিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন ড্যাবের নেতা এম এ মান্নান। বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনস অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, পেপার স্প্রে এক ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র। এটির প্রয়োগে মানব চোখে প্রচণ্ড জ্বালা, ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হয়। নাক দিয়ে পানি পড়ে ও প্রচণ্ড কাশি হয়। বয়স্কদের ওপর এটির প্রয়োগে মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া হৃদরোগ ও ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৯৩ সালের ১৩ জানুয়ারি কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন (সিডব্লিউসি) স্বাক্ষর হয়। ওই বছরের ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। ১৯৯৭ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে ওই চুক্তি কার্যকর রয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী পেপার স্প্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯০টি রাস্ট্র ইতিমধ্যে এতে সই করেছে।
এম এ মান্নানের দাবি, জাতির পক্ষে সরকার যেহেতু ওই চুক্তিতে সই করেছে, তাই তারা এটি ব্যবহার করতে পারে না। কিন্তু সরকার দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি খালেদা জিয়ার ওপর পেপার স্প্রে নিক্ষেপ করে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও জাতিসংঘের সনদ লঙ্ঘন করেছে। লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, একটি বিশেষ খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এই রাসায়নিক অস্ত্র খালেদা জিয়ার ওপর অমানবিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। পেপার স্প্রে ব্যবহারের জন্য তাঁরা দেশবাসীর কাছে এর বিচার প্রার্থনা করেন। একই সঙ্গে এটি প্রয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজউদ্দিন আহমেদ, রুস্তম রানা, শাহবুদ্দিন আহমেদ, জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
অবরোধে পণ্য পরিবহণের কাজ ব্যাহত
২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের কারণে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য পরিবহণ। পুলিশি পাহারায় পণ্য পরিবহণ শুরু হলেও পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।   এদিকে ঝুঁকি নিয়েই বন্দরে পণ্য আনা-নেয়া করছেন পরিবহণ মালিকরা।   পুলিশি নিরাপত্তায় রাত নয়টায় ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান  যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে। ২০ দলীয় জোটের অবরোধের কারণে পুলিশের এই বিশেষ ব্যবস্থা। দিনে দুবার এই নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে আমদানি-রফতানি কার্য্যক্রম।   ২০১৩ সালের শেষের দিকে রাজনৈতিক সহিংসতায় আমদানী-রফতানি বাণিজ্যে  প্রতিদিন গড়ে ক্ষতি হয়েছে দেড়শো কোটি টাকারও বেশি। তাই এবারের অবরোধ কর্মসূচিতেও শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।   ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের সহিংসতায় মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রায় সাতশোর মতো ট্রাক ও লরিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। আহত এবং নিহত হয় বেশ কিছু সংখ্যাক চালক ও সহকারী। তাই এবারও ঝুঁকির মধ্যেই পণ্য আনা-নেয়া করছেন পরিবহণ মালিকরা।   পুলিশি পাহারায় পণ্য পরিবহণে কিছুটা স্বস্থি আসলেও স্বাভাবিক পরিস্থিতির অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা।

No comments

Powered by Blogger.