ভোলায় স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ

ভোলার চরফ্যাশনে জুয়ার আখড়ায় ধরে নিয়ে গিয়ে স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ধর্ষিতা ও তার স্বামীকে রাত ১২টার দিকে ওই আখড়া থেকে উদ্ধার করে। ধর্ষিতাকে প্রথমে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুপুরে ধর্ষিতার স্বামী বাদী হয়ে চরফ্যাশন থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। গতকাল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্ষিতার স্বামীর বাড়ি লালমোহন উপজেলার চর উমেদ গ্রামে। তার পৈতৃক বাড়ি বরিশাল সিটির ৬নং ওয়ার্ডের শিশুপার্ক কলোনিতে। প্রায় দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষিতার স্বামী নিজেও একজন পেশাদার জুয়াড়ি এবং মাদকাসক্ত। ধর্ষিত তার তৃতীয় স্ত্রী। সোমবার সন্ধ্যার পর কেনাকাটা শেষে স্বামী-স্ত্রী মোটরসাইকেলে করে চরফ্যাশন বাজার থেকে চর উমেদ গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। চরফ্যাশন-ভোলা সড়ক সংলগ্ন আলীগাঁও গ্রামের কাছে পৌঁছলে দুটি মোটরসাইকেলে করে ৬ দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে। তারা গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে সড়ক থেকে ১৫-২০ গজ দূরে জনৈক শিমুলের নির্মাণাধীন পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে নিয়মিত নেশা ও জুয়ার আসর বসে।
ধর্ষিতা, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্বৃত্তরা জুয়ার আখড়া সংলগ্ন একটি রেইন্ট্র্রি গাছের সঙ্গে স্ত্রীর ওড়না দিয়েই স্বামীকে পিঠমোড়া দিয়ে মুখসহ বেঁধে রাখে। এর পর তারা ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে প্রতিবেশী আবদুল খালেক ঘটনাস্থলের পাশের জলাশয়ে পেতে রাখা মাছ ধরার চাঁই তুলতে এসে আর্তনাদ শুনতে পান। খালেক চিৎকার করে লোকজনকে ডাকাডাকি করতে শুরু করলে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে।
চরফ্যাশন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তন্ময়কর ধর বলেছেন, ভিক্টিমের দেহে অসংখ্য ক্ষত রয়েছে। তিনি আহত, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত এবং আতংকিত ছিলেন। ধর্ষণের বিষয়ে পরীক্ষা ছাড়া কিছু বলা যাবে না। পরীক্ষা এবং উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য ভিক্টিমকে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চরফ্যাশন থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, ভিক্টিমের স্বামীর বক্তব্যে বিস্তর গড়মিল দেখা যাচ্ছে। জুয়াড়ি এবং মাদকাসক্ত স্বামীর জানা মতেই তার জুয়া আর নেশার সঙ্গীরা মিলে এ অপকর্ম করে থাকতে পারে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার স্বামী অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন বলে ওসি (তদন্ত) সাইদুর রহমান জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.