আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কামারুজ্জামানের রায়

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতাদের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে বেশ ক’দিন  ধরে গুরুত্বের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমগুলোতে। এক সপ্তাহের ব্যবধানেই জামায়াতে ইসলামীর প্রধান তিন নেতার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। রায় নিয়ে ধারবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বিবিসি, আল-জাজিরা, গার্ডিয়ান, রয়টার্স, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডনসহ বিশ্বের সবগুলো প্রভাবশালী গণমাধ্যম। সোমবারও গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে ছিল বাংলাদেশের আদালতের দেয়া রায়। মানবতাবিরোধী অপরাধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। ‘বাংলাদেশ আপহোলডস ইসলামিস্ট কামারুজ্জামান ডেথ সেন্টেন্স’ শিরোনামে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশের বৃহৎ ইসলামিক রাজনৈতিক দলের এক নেতাকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট।’’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘গত সপ্তাহেই যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া গতকাল রোববার জামায়াতের অপর নেতা মীর কাসেম আলীকেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।’’ এতে বলা হয়, ‘‘জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে দেয়া রায়ে বিক্ষোভ করছে দলটির নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের প্রতিবাদে দেশটিতে তিন দিনের হরতাল চলছে।’’ ‘বাংলাদেশ পার্টি চিফ টু হ্যাং ফর ওয়ার ক্রাইমস’ শিরোনামে আল-জাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিরুদ্ধে দেয়া অব্যাহত রায়ে দলটির এক নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।’’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘আদালতের দেয়া শেষ রায়ে বিক্ষোভ আরো নতুন করে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।’’ এতে বলা হয়, ‘‘গত বছরও ট্রাইবুনালের দেয়া রায়কে কেন্দ্র করে দেশটির মারাত্মক ধরনের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। জামায়াতে ইসলামীর হাজার-হাজার নেতা-কর্মী পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। আর সংঘর্ষে অন্তত ৫০০ লোক নিহত হয়।’’ ‘বাংলাদেশ কোর্ট আপহোলডস ডেথ সেন্টেন্স ফর কনবিকটেড ওয়ার ক্রিমিনাল’ শিরোনামে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘চার দশক আগের মানবতাবিরোধী অপরাধে ইসলামপন্থী এক নেতাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট।’’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ট্রাইবুনাল গঠনের পর এর প্রতিবাদে গড়ে উঠা সহিংস বিক্ষোভই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’’ এতে বলা হয়, ‘‘ট্রাইবুনালে দেয়া রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশটির ইসলামপন্থীরা। তারা এ আদালতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিরোধী দলকে দুর্বল করার হাতিয়ার বলে দাবি করছে।’’ ‘বাংলাদেশ আপহোল্ডস কামারুজ্জামান ওয়ার ক্রাইমস ডেথ সেন্টেন্স’ শিরোনামে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের এক সিনিয়র নেতার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে।’’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘২০০৯ সালে ক্ষমতায় বসার পর শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল গঠন করেন। যদিও হাসিনা বলছেন ট্রাইবুনালে নির্যাতিতরা বিচার পাবে কিন্তু এটি দেশের রাজনৈতিক বিভক্তিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।’’ ‘বাংলাদেশ এসসি আপহোল্ডস ডেথ সেন্টেন্সড অব জামায়াত স্টলওয়ার্ট’ শিরোনামে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের প্রভাবশালী এক নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট।’’ এতে বলা হয়, ‘‘এক সপ্তাহের ব্যবধানে জামায়াতে ইসলামীর প্রধান মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও অপর আরেক নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরপরই এ রায় ঘোষণা করলো আদালত।’’ ‘বাংলাদেশ কোর্ট আপহোল্ডস টপ জেআই লিডার ডেথ সেন্টেন্স’ শিরোনামে জিওটিভির অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশের বৃহৎ ইসলামীর রাজনৈতিক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।’’ এতে বলা হয়, ‘‘গত বছর জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালের দেয়া রায়ের পর ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।’’

No comments

Powered by Blogger.