তুরস্কে ৩২২ সেনা কর্মকর্তার কারাদণ্ড

সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার দায়ে তিন শতাধিক সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন তুরস্কের একটি বেসামরিক আদালত। ২০০৩ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়িপ


এরদোগানের সরকারকে উৎখাতের চেষ্টার অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার ইস্তাম্বুলের পশ্চিমের শহর সিলিভরির একটি আদালত এই রায় দেন।
সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত মামলাটির বিচার শুরু হয় ২০১০ সালের ডিসেম্বরে। অভিযুক্ত ৩৬৫ জনের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিরত সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। ২০০৩ সালে সরকার উৎখাতের যে ষড়যন্ত্রে তাঁদের যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে, তা 'স্লেজহ্যামার' নামেও পরিচিত ছিল। সরকার আদালতের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধীদের শায়েস্তা করার চেষ্টা করছে, যে কয়টি মামলার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে, স্লেজহ্যামার তার একটি। তুরস্কে বেসামরিক আদালতে সেনা অভ্যুত্থানের প্রথম মামলাও এটি।
সিলিভরির আদালত অভিযুক্ত ৩৬৫ জনের মধ্যে ৩২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। ৩৪ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল সেতিন দোগান, হালিল ইব্রাহিম ফিরতিনা ও অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল ওজদেন ওরনেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তবে সেনা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের সাজা কমিয়ে ২০ বছর করা হয়। দোষী সাব্যস্ত ৭৮ কর্মকর্তাকে ১৮ বছরের জেল এবং ২৪৬ জনকে ১৬ বছরের জেল দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ২৮ কর্মকর্তার সাজা কমিয়ে ১২ বছর করা হয়। রায় ঘোষণার পরই আদালতে উপস্থিত আসামিদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। তবে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের সুযোগ আছে।
১৯৬০, ৭১ ও ৮০ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনটি সরকার উৎখাত করেছে তুরস্কের সেনাবাহিনী। ১৯৯৭ সালে অভ্যুত্থান না ঘটলেও সেনাবাহিনীর চাপে ইসলামপন্থী প্রধানমন্ত্রী নেকমেত্তিন এরবাকান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরবাকান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এরদোগানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০০২ সালে ক্ষমতায় আসার পর এরদোগানের ইসলামপন্থী জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সেনাবাহিনীর প্রভাব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। গত শুক্রবারের রায়ের মাধ্যমে এক সময়কার শক্তিশালী সেনাবাহিনীর ওপর বেসামরিক সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.