অতি দ্রুত শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হবে-চিকিৎসকের ছুটি বনাম ময়নাতদন্ত

গত বৃহস্পতি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে কয়েকটি মৃতদেহ পড়ে ছিল। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আর এ কাজটি করে কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। সেই বিভাগের একমাত্র চিকিৎসক ছুটিতে থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এ বিভাগের বেশ কয়েকটি পদ শূন্য।


দুর্ঘটনা, অপঘাত, খুন বা অপমৃত্যুজনিত কারণে মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহের পুলিশি তদন্ত এবং সৎকারের ব্যাপারও থাকে। ময়নাতদন্তে দেরি হলে মৃতের আত্মীয়স্বজনের ওপর এর মর্মান্তিক প্রভাব পড়ে। এ জন্য সময়মতো ময়নাতদন্ত সম্পাদন করা জরুরি। ফরিদপুরে যে চিত্র দেখা গেছে, তা সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণের হতাশাই কেবল বাড়ায়।
এমন অবস্থা শুধু ফরিদপুরের নয়, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের সংবাদ প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আমাদের দেশে চাকরিপ্রত্যাশী চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক। তা সত্ত্বেও চিকিৎসক সংকট সৃষ্টি হওয়ার পেছনে কর্তৃপক্ষের অবহেলাই প্রধানত দায়ী। এ জন্য স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে সরকারের একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা দরকার।
দেশব্যাপী সরকারি স্বাস্থ্যসেবার একটি মোটামুটি অবকাঠামো আমাদের আছে। কিন্তু চিকিৎসকদের ঢাকার বাইরে না যেতে চাওয়া এবং কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির কারণে জনগণ তাঁদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ জন্য চিকিৎসকদের মানসিকতারও পরিবর্তন জরুরি।
চিকিৎসক নিজেও একজন মানুষ। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিভিন্ন কারণে তাঁর ছুটির প্রয়োজন হতে পারে, ছুটি নেওয়া তাঁর অধিকারও। তাই ভবিষ্যতে যাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের মতো পরিস্থিতি আর কোথাও সৃষ্টি না হয়, সে জন্য কর্তৃপক্ষের এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.