জঙ্গিদের উপযুক্ত শাস্তি হোক

দীর্ঘদিন পর রমনা বটমূলে বোমা হামলার প্রধান আসামি শেখ ফরিদ গ্রেপ্তার হয়েছে। তার আগেই শেখ ফরিদের দুই সহযোগী যথাক্রমে মাওলানা সাবি্বর ও আইনুল হককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এই গ্রেপ্তার কাজ সম্পন্ন হওয়ার ফলে আশা করা যায় রমনা বটমূলে সংঘটিত বোমা হামলার মামলাটি এগিয়ে নিতে প্রামাণিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে।


স্থবির হয়ে থাকা বিচারকাজও এগিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদ নেতা এবং তাদের মধ্যে শেখ ফরিদ হরকাতুল জিহাদের বর্তমান আমির। আর সাবি্বর পুনর্গঠিত হরকাতুল জিহাদের নায়েবে আমির। জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে হুজি ও জেএমবি নেটওয়ার্ক অনেক আগে থেকেই বেশ জোরালো। কয়েক বছর আগে যখন সারা দেশে বোমা হামলা চালানো হয়েছিল, তখনই তাদের শক্তি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই সময় মাত্র দুটি জেলা ছাড়া বাংলাদেশের সব জেলাতেই একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা তাদের শক্তি সম্পর্কে জানান দিয়েছিল। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা আজও সম্ভব হয়নি। এখন জানা যায়, দুটি সংগঠনই ওই হামলায় অংশ নিয়েছিল। এ ছাড়াও ছোটখাটো অনেক জঙ্গি সংগঠন রয়েছে এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রয়েছে। শুধু দেশের ভেতরেরই নয়, বিদেশি_বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গেও এদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে সেসব দেশের কয়েকজন জঙ্গি বাংলাদেশে ধরাও পড়েছে। তবে এটা ঠিক, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গিদের সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেশ সক্রিয় রেখেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন জঙ্গি নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। সর্বশেষ শেখ ফরিদ ও সাবি্বরসহ তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে হয়তো তাদের তৎপরতা কিছুটা হলেও স্তিমিত হয়ে পড়বে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বক্ষণিক সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। কারণ তাদের অনেক সদস্যই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
সম্প্রতি রাজশাহী এলাকায় মাদ্রাসার নামে জঙ্গি প্রশিক্ষণ চালানোর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। রাজশাহীর উপশহরে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে আইনুল হক। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণ চলার পরও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখের আড়ালেই ছিল এই কার্যক্রম। এর আগেও এমন বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। বিশেষ করে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় মাদ্রাসার নামে জঙ্গি প্রশিক্ষণ প্রদানের খবর আমরা বিভিন্ন সময় জানতে পেরেছি। রমনা বটমূলে বোমা হামলা এবং কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা দুটি সম্পর্কে আরো নতুন তথ্য হয়তো জানতে পারবেন আদালত। দুটি মামলারই বিচার সম্পন্ন করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হবে_এমনটা প্রত্যাশা করা যায়।

No comments

Powered by Blogger.