সুন্দর সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে-স্কাউটদের শপথ

ভবিষ্যতে সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখা ও শপথ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো অষ্টম জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি। এবারে জাম্বুরির প্রতিপাদ্য ছিল ‘দিনবদলে স্কাউট’। এ ধরনের মহামিলনকে দেখা হয় জীবনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে। মৌচাক গজারিবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে স্কাউটদের মহা আয়োজন শুধু আনন্দ-উচ্ছলতায় সীমিত ছিল না।

তারা সেখানে স্বাবলম্বী হওয়ার পাঠ নিয়েছে, অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছে, হাতেকলমে অনেক কিছু শিখেছে; যা তাদের পরবর্তী জীবনে কাজে লাগবে।
দেশে ১০ লাখ স্কাউট থাকলেও জাতীয় জাম্বুরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ১৫ হাজার। অর্থাত্ তারা ১০ লাখ স্কাউটের প্রতিনিধিত্ব করেছে। জাম্বুরিতে যোগদানকারী স্কাউটরা বাড়ি ফিরে গিয়ে যেমন সহ-স্কাউটদের কাছে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও শপথের কথা বলবে, তেমনি দিনবদলেও তাদের উদ্বুদ্ধ করবে। অষ্টম জাম্বুরিতে আসা স্কাউটরা মাদককে ‘না’ বলার দৃঢ় শপথ নিয়েছে। তারা ঘোষণা দিয়েছে, নিজেরা মাদক সেবন করবে না, অন্যদেরও মাদক সেবন করতে দেবে না। শুধু মাদক নয়, নানা অনাচারে তরুণদের একাংশ আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকে বিভিন্ন অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। যেকোনো মূল্যে এই বেপথু কিশোর-তরুণদের সঠিক পথে নিয়ে আসতে হবে। আর এ কাজে যে স্কাউটরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
জাম্বুরিতে যোগদানকারী স্কাউটরা দিনবদলের জন্য কাজ করার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে তা আমাদের আশান্বিত করে। অস্বীকার করার উপায় নেই, সমাজবদলে তরুণদের ভূমিকাই প্রধান। তারাই পারে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে। আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রনেতাদের দায়িত্ব তরুণদের স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।
আমরা বিশ্বাস করি, সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ১০ লাখ স্কাউট একযোগে কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে। সমাজ অনাচারমুক্ত হবে। প্রথম আলো এ উদ্যোগে যুক্ত হতে পেরে আনন্দিত। এভাবে সুন্দর জীবনের স্বপ্ন ছড়িয়ে দিতে হবে দিকে দিকে, সারা দেশে। তা হলে তরুণেরা যে মাদকমুক্ত, অপরাধমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখছে, তার বাস্তবায়নও অসম্ভব হবে না।

No comments

Powered by Blogger.