বুয়েটে শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাল্টা কর্মসূচি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিন্ডিকেট কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে শিক্ষকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল বুধবার সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। তবে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা বুয়েটের স্বার্থে আন্দোলন করছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।


শিক্ষক সমিতি দাবি-দাওয়া নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে তিনি আজ কথা বলবেন।
চলমান শিক্ষক কর্মবিরতির ফলে বুয়েট অচলাবস্থার মুখে পড়ায় গতকাল সিন্ডিকেট জরুরি সভা আহ্বান করে। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভূতাপেক্ষ নিয়োগ, পদোন্নতির বিষয়টি বিশদভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে সিন্ডিকেট মনে করে। এ বিষয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলেও মত দেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
৭ এপ্রিল থেকে বুয়েটের উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগ এবং সহ-উপাচার্যের পদ বিলুপ্তির দাবিতে বুয়েট শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতি চলছে। শিক্ষকেরা বলছেন, একজন কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের জন্য অনিয়ম করে তাঁকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পরীক্ষার ফল পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দলীয়করণে বুয়েটের সুনাম ম্লান হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ জন্য তাঁরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে দায়ী করে তাঁদের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এদিকে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পক্ষ নিয়ে শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। গতকাল ঐক্য পরিষদ ক্যাম্পাসে মিছিল শেষে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। পরিষদের আহ্বায়ক কামাল আহম্মদসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নেতারা এতে বক্তৃতা করেন। তাঁরা বলেন, ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি নিয়ে শিক্ষক সমিতির বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে শিক্ষকদের ফাইলের যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ করা থেকে তাঁরা বিরত থাকবেন।
শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে বুয়েটের উপাচার্য এস এম নজরুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। তাহলে পদত্যাগ করব কেন? আর উপাচার্য, সহ-উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার। সরকার না চাইলে থাকব না।’
এদিকে শিক্ষকদের কর্মবিরতির ফলে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেমিস্টারে ভর্তির নিবন্ধন-প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটছে। ১৫ এপ্রিল থেকে বুয়েটে ক্লাস শুরু হওয়ার বিষয়টি নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

No comments

Powered by Blogger.