মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করার অধিকার কারো নেই by রাশেদা কে চৌধুরী

রাজনৈতিক সহিংসতা নয়, প্রয়োজন সহিষ্ণুতার। সে সহনশীলতা ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব বেশি মাত্রায় প্রয়োজন। যত দিন সহনশীলতা না আসবে, তত দিন আমাদের এমন দুর্বিষহ দুর্বিপাকে ঘুরপাক খেতে হবে। এখন একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায়। এ সরকার দেশ চালাচ্ছে।

নিশ্চয়ই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকার আছে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার। কিন্তু কর্মসূচির নামে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করে তোলার অধিকার কারো নেই। এ কথা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য প্রযোজ্য।
আমি সত্যিই অবাক হই। আমরা ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন দেখেছি, ৭ মার্চের ভাষণ দেখেছি। পরবর্তীকালে নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন দেখেছি। সেসব ক্ষেত্রে জনগণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। সেসব রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে। জনগণ এমন আতঙ্কিত ছিল না। এগুলো রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে থাকতে হবে। এখনকার এ রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বা জনগণের সত্যিকার সম্পৃক্ততা কতটা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
অন্যদিকে বর্তমান সরকার যে আচরণ করল; সরকার বিরোধী দলের কর্মসূচিকে ঘিরে পুরো আবহটা হরতালেরর মতো করে ফেলল। বাস চলাচল বন্ধ, নৌরুট বন্ধ- এটা কেমন কথা? এটা সম্পূর্ণ অনুচিত কাজ হলো। সরকারের এত ভয় কেন? আমি শিক্ষা নিয়ে কাজ করি। আমি দেখলাম বিরোধী দলের ডাকা সমাবেশ ঘিরে শেষ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলো অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে থাকল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার ক্ষতির পাশাপাশি একটি অস্থির পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। রাষ্ট্রের এই যে পরিবেশ, এ থেকে উত্তরণ এখন খুবই জরুরি।
পাশের দেশ ভারতে বহু রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। ভারত বিশাল লোকসংখ্যার ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। সেখানে তো এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের কর্মসূচি ঘোষণার বেলায় অনেক দিকে নজর রাখা। যেমন- তারা কর্মসূচি দিতে পারেন ছুটির দিনগুলোতে। দেশের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে কি না সেদিকে লক্ষ রেখে।

No comments

Powered by Blogger.