সমাজে চাই নারীবান্ধব পরিবেশ by সুচিত্রা সরকার

নারীর লড়াইয়ের ইতিহাস অল্প দিনের নয়। যুগ যুগ ধরে নারী সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। নারীর সেই দীর্ঘ লড়াই আর সংগ্রামের প্রতীক ৮ মার্চ। পাহাড়সমান বাধা পেরিয়ে আমাদের নারীরা ঘরে-বাইরে অবদান রাখছেন। তৈরি পোশাকশিল্প, চিংড়ি চাষ, চাতাল, নির্মাণ, কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীশ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

তার পরও নারী তাঁর ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই সঙ্গে বাড়ছে নারীর প্রতি নির্যাতন-সহিংসতা। নারীকে অধস্তন করে দেখার মানসিকতারও কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ অবস্থায় নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। প্রয়োজন আইএলও, সিডও সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। আর এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ৯ মার্চ শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে জাতীয় নারীশ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের নারীশ্রমিকদের অধিকার, বাস্তব অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। সেলিনা হায়াৎ আলোচনা সভায় বলেন, ‘নারীরা আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আমাকে বলেছেন, এত অসহযোগিতার মধ্যে আমি নির্বাচনে জিতব না। আমি হাল ছাড়িনি। ঘরে ঘরে গিয়ে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেছি। আমি পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে নারীকে অংশীদারির ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনে নয়, সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন জরুরি। একইভাবে দেশের সব আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা পারভীন বলেন, শ্রমজীবী নারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু মজুরিবৈষম্য ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বললেও বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে দেশের অর্ধেক জনশক্তি নারীদের এগিয়ে নিতে হবে।
আয়েশা ইসলামের সভাপতিত্বে ও সুমনা সরকারের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, মহিলা পরিষদের নেতা রেখা চৌধুরী, বিআইডিএসের ড. নাজনীন আহমেদ, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের নাসিমুন আরা মিনু প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.