সব দলের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকা চাই-রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়

রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিধি অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আয় ও ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে দাখিল করার কথা। সে অনুযায়ী কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিঠিও পাঠিয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে কয়েকটি দল নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি বা দিতে পারেনি, তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি


দলের হিসাব দাখিলকে আমরা ইতিবাচক মনে করি। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আসবে।
নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের দেওয়া হিসাবে দেখা গেছে, ২০১০ সালে দলটি প্রায় পাঁচ কোটি টাকা আয় করেছে এবং তাদের ব্যয়ের পরিমাণ তিন কোটি টাকার কাছাকাছি। আয়ের উ ৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে দলীয় নেতা ও সাংসদদের চাঁদা, নতুন সদস্যদের চাঁদা এবং বাড়িভাড়া ও অন্যান্য সম্পদ। ব্যয়ের খাত হিসেবে দেখানো হয়েছে কর্মীদের বেতন-বোনাস, আবাস ও প্রশাসনিক খরচ, বিদ্যু ৎ, টেলিফোনসহ সেবা খাতের বিল পরিশোধ, দলের পোস্টার-লিফলেট মুদ্রণ ইত্যাদি। দলটির আয়-ব্যয়ের এ হিসাব নিরীক্ষণ করানো হয়েছে একটি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে হিসাব দেওয়ার জন্য আরও দুই মাস সময় চাওয়া হয়েছে। আশা করি, নির্বাচন কমিশন সেই সময় দেবে। কিন্তু বিএনপির নেতারা সময়স্বল্পতার যে অজুহাত দেখিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি তাঁদের অজানা ছিল না। রাজনৈতিক দলের আয় ও ব্যয়ের হিসাব দাখিল হয় গত বছর থেকে এবং এর তারিখও নির্দিষ্ট। ২০১০ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব ২০১১ সালের জুলাইয়ের মধ্যে না দিতে পারার যুক্তি নেই। এই সময়ে দলীয় নেতারা তাঁদের ব্যক্তিগত আয়-ব্যয়ের হিসাব কি রাজস্ব বিভাগে জমা দেননি? নিশ্চয় দিয়েছেন।
আমরা আশা করব, বিএনপিসহ যেসব দল এখনো আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয়নি, বিলম্বে হলেও তারা সেটি জমা দেবে। কেননা, এ হিসাব জমা দেওয়ার মধ্যে তাদের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রশ্নটি জড়িত। আর প্রতিবছর এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের তাগাদাই বা দিতে হবে কেন? নিজেদের উদ্যোগেই রাজনৈতিক দলগুলোর এ হিসাব দেওয়া উচিত এবং সেটি যাতে জনগণ দেখতে পায়, সে জন্য দলীয় ওয়েবসাইটেও উন্মুক্ত করে দিতে হবে। যাঁরা দেশ ও জনগণের জন্য রাজনীতি করেন, তাঁদের কাছে এ দাবি মোটেই অযৌক্তিক নয়।

No comments

Powered by Blogger.