ইরান সফর শুরু করেছেন আইএইএর পর্যবেক্ষকেরা

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষকেরা গতকাল রোববার তিন দিনের সফরে ইরানে গেছেন। তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির আসল উদ্দেশ্য জানার জন্য তাঁরা এ সফর করছেন। পরমাণু ইস্যুতে তেহরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যখন উত্তেজনা চলছে, তখনই আইএইএর পর্যবেক্ষকেরা ইরান সফর করছেন।


আইএইএর মহাসচিব ইউকিয়া আমানো বলেন, ইরানের উচিত নিজেদের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়া এবং কর্মসূচির বিষয়ে সংস্থার প্রশ্নের জবাব দেওয়া। তবে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে—পশ্চিমাদের এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করছে তেহরান।
ইরানের উদ্দেশে ভিয়েনা ত্যাগের আগে আইএইএর উপমহাসচিব হারম্যান ন্যাকায়ের্টস বলেন, ‘সামরিক উদ্দেশ্যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ব্যবহূত হতে পারে, আমাদের এমন উদ্বেগ প্রশমনে তেহরান সহযোগিতা করবে বলে আমরা আশাবাদী।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সংলাপ শুরুর জন্য অপেক্ষা করছি।’
ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার আলী লারিজানি আইএইএর পর্যবেক্ষকদের এই সফরকে ‘পরীক্ষা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, যদি পর্যবেক্ষকেরা ‘পেশাদারির’ পরিচয় দেন, তাহলে তেহরান তাঁদের জন্য ‘সহায়তার পথ’ খুলে দেবে।
আইএইএতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আলী আসগর সুলতানিয়েহ বলেন, শত্রুদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে পর্যবেক্ষকদের সফরের এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং এতে প্রমাণিত হবে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহূত হতে পারে মর্মে গত নভেম্বরে আইএইএ এক প্রতিবেদনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। এরপর তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে। আইএইএ বলেছে, ‘পরমাণু অস্ত্র তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট’ বিষয়ে ইরান পরীক্ষা চালিয়েছে, তাদের কাছে এমন জোরালো তথ্য রয়েছে।
এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের তেলশিল্প ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে এসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতে দেশটির বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছে তেহরান। একই সঙ্গে তেহরান শিয়া সম্প্রদায়ের পবিত্র শহর কোমের কাছে ফোর্দোতে নতুন একটি বোমানিরোধী বাংকারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ অব্যাহত রেখেছে।
ইরানের পার্লামেন্টেও গতকাল একটি খসড়া বিলের বিষয়ে বিতর্ক হওয়ার কথা। ইইউর নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে ইউরোপে শিপমেন্ট কমিয়ে অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করার পদক্ষেপ হিসেবে এই খসড়া আনা হয়েছে। ইরানের রাজনীতিক ও ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁরা হরমুজ প্রণালি বন্ধের নির্দেশও দিতে পারেন। হরমুজ প্রণালি পারস্য উপসাগরে তেলবাহী জাহাজ চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রবেশপথ। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.