এরপর কী বলবেন গ্রন্ডোনা?

হুলিও গ্রন্ডোনার উচিত, তর্কযুদ্ধে হাত তুলে আত্মসমর্পণ করা। ডিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া তাঁর কাজ নয়। আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার (এএফএ) প্রধানের মন্তব্যের আরেকটি পাল্টা জবাব দিলেন ম্যারাডোনা। বললেন, গ্রন্ডোনা নিজেই ড্রাগ নেওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন খেলোয়াড়দের!
‘ম্যাচটার এক সপ্তাহে আগেই গ্রন্ডোনা আমাদের বলেছিলেন, আমরা চাইলে ড্রাগ নিতে পারি। কারণ ম্যাচে কোনো ডোপ টেস্ট থাকবে না’—আর্জেন্টাইন রেডিও স্টেশন ‘মেট্রো’কে বলেছেন ম্যারাডোনা।
তাঁর এই মন্তব্য গ্রন্ডোনার সর্বশেষ মন্তব্যের পাল্টা জবাব। যেখানে গ্রন্ডোনা বলেছিলেন, ম্যারাডোনাকে বাঁচাতেই ১৯৯৩ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিতে কোনো ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাঁর যুক্তি ছিল, ১৯৯১ সালে ডোপ টেস্টে ধরা পড়ার পর ১৫ মাস নিষিদ্ধ ছিলেন ম্যারাডোনা। ভয় ছিল, আবারও ডোপ টেস্ট করা হলে হয়তো ধরা পড়বেন মাত্রই মাস কয়েক আগে নিষেধাজ্ঞা শেষ করে ফেরা দলের মূল ভরসা।
এর পরই ম্যারাডোনার এই সাক্ষাৎকার। যেখানে তিনি এও বলেছেন, ড্রাগের প্রভাব ছিল মারাত্মক, ‘জানি না সেদিন কে কী নিয়েছিল। তবে মনে আছে, সকাল আটটা পর্যন্ত ক্লদিয়াকে (সাবেক স্ত্রী) নিয়ে পুরো অস্ট্রেলিয়া আমি হেঁটে বেড়িয়েছিলাম। দলের অনেকেই ঘুমাতে পারেননি। জানি না, কেন এমনটা হয়েছিল।’
শুধু মুখের কথা দিয়ে নয়, সত্যি সত্যিই আইনি ব্যবস্থা নিতে চলেছেন ম্যারাডোনা। আল ওয়াসল কোচের আইনজীবী জানিয়েছেন, আটঘাট বেঁধেই নামতে চান তাঁরা। এ জন্যই চলছে প্রস্তুতি। শিগগিরই আদালতের দ্বারস্থ হবেন ম্যারাডোনা।
এদিকে হুলিও গ্রন্ডোনাও চুপটি করে বসে নেই। ৭৯ বছর বয়সী এএফএ প্রধান আবারও নতুন করে জানালেন, ম্যারাডোনাকে বাঁচাতেই সমঝোতার ভিত্তিতে ওই ম্যাচে ডোপ টেস্ট করানো হয়নি। আর্জেন্টাইন দৈনিক ক্লারিনকে বলেছেন, ‘ম্যারাডোনা সেবার আমাদের আগের বাছাইপর্বের ম্যাচগুলোয় খেলেনি। এই ম্যাচগুলোয় (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্লে-অফ) ও খেলেছে ড্রাগের ঝামেলা থেকে ফেরার পর। আমার ভয় হচ্ছিল, ও না আবারও ধরা পড়ে। আমি তো আর জানি না, খেলোয়াড়েরা ড্রাগ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে নাকি নিয়েই চলেছে।’
আগের সাক্ষাৎকারে গ্রন্ডোনা দাবি করেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করেই ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা এই ম্যাচে রাখা হয়নি। কিন্তু ফিফার এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার এই দাবি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আগের দিনই অস্বীকার করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ফুটবল সংস্থার তৎকালীন প্রধান নিজের সন্তানের জীবন নিয়ে দিব্যি কেটে বলেন, এ ধরনের কোনো সমঝোতা হয়নি।
কিন্তু ক্লারিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রন্ডোনা আবারও সেই সমঝোতার কথা বলেছেন। এমনটাও বলেছেন, এই কাজের জন্য তিনি অনুতপ্ত নন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো আর্জেন্টিনার মানুষই এটা মেনে নিয়েছে। আমি তাই অনুশোচনায় ভুগছি না। আর্জেন্টিনার মানুষের চাওয়াই ছিল আমার কাছে মূল বিষয়। আমি তাই নিজেকে প্রতারক ভাবছি না। জীবনে আমি একটা জিনিসই চেয়েছি—সাফল্য।

No comments

Powered by Blogger.