ইয়েমেনে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত প্রেসিডেন্ট ও আদিবাসী নেতা

ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ ও বিরোধী উপজাতি নেতা শেখ সাদিক আল আহমার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। গত রোববার সকাল থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
সালেহ ও আহমারের অনুগত বাহিনীর মধ্যে একটানা পাঁচ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষ গত শনিবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১২৪ জন নিহত হয়েছে। এদিকে সন্দেহভাজন আল-কায়েদা জঙ্গিরা ইয়েমেনের জিনজিবার শহর দখল করে নিয়েছে।
সালেহ ও শেখ আহমার অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর বন্দুকযুদ্ধ থেমে যায়। এরপর শহরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসতে শুরু করে। বন্দুকযুদ্ধ দেশটিকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট সালেহর নিরাপত্তা বাহিনী সানার উপকণ্ঠ হাসাবায় শেখ আহমারের বাড়িতে হামলা চালানোর পর উভয় পক্ষের মধ্যে এ লড়াই শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পর সশস্ত্র আদিবাসীরা পাল্টা আঘাত হানে। আদিবাসীরা বেশ কয়েকটি সরকারি ভবন দখলে নেয়।
আদিবাসী একজন মধ্যস্থতাকারী জানান, উভয় পক্ষই হাসাবা থেকে নিজ নিজ বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে সম্মত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে প্রত্যাহারের কাজ শুরু হয়।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কারণে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট সালেহ।
ইয়েমেনের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, গত শনিবার তিন ফরাসি সাহায্যকর্মী নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মুঠোফোন হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেছে।
এই নিরাপত্তাকর্মী আরও জানান, নিখোঁজ সাহায্যকর্মীদের সন্ধানে তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ইয়েমেনের আবইয়ান প্রদেশের রাজধানী জিনজিবার দখল করে নিয়েছে আল-কায়েদার জঙ্গিরা। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দুই দিনের তুমুল লড়াইয়ের পর জঙ্গিরা শহরটি দখলে নেয়। লড়াইয়ে ১৬ জন নিহত হয়। গতকাল একজন সরকারি কর্মকর্তা এ কথা জানান।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট সালেহ জঙ্গিদের জিনজিবার শহর দখল করতে দিয়েছেন। আল-কায়েদা সম্পর্কে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নিজের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ানোর জন্য সালেহ এ কাজ করছেন বলে তাদের অভিযোগ।
একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, সন্দেহভাজন আল-কায়েদা জঙ্গিরা জিনজিবার শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে। তারা প্রায় সব সরকারি স্থাপনা দখল করে নিয়েছে।
শহরের বাসিন্দারা জানান, গত শুক্র ও শনিবার শহরে তুমুল লড়াই হয়েছে। তাঁরা আরও জানান, বন্দুকধারীরা শহরের প্রধান জেলখানা থেকে অনেক বন্দীকে ছেড়ে দিয়েছে।
লড়াইয়ের কারণে অনেক পরিবার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান শহর এডেনের দিকে পালিয়ে গেছে। নাজির আহমেদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, শহরটি বন্দুকধারীদের দখলে চলে যাওয়ায় তিনি শহর ছেড়ে চলে এসেছেন। তিনি বলেন, বন্দুকধারীরা নিজেদের আল-কায়েদার সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে।
নাজির আহমেদ বলেন, শনিবার সকালে বন্দুকধারীরা লাউডস্পিকারের মাধ্যমে বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে আসার আহ্বান জানায়। তারা দোকানিদের দোকান খোলারও আহ্বান জানায়। তবে খুব কম মানুষই তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। কারণ, মানুষ খুব ভয়ের মধ্যে আছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ধারণা, ২০০ জনেরও বেশি জঙ্গি শহরে হামলা চালিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.