যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু

কোরীয় উপদ্বীপে বিরাজমান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল শুক্রবার থেকে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। আট দিনের এই মহড়ায় দুই দেশের হাজার হাজার সেনা, শত শত বিমান ও ৬০টি যুদ্ধজাহাজ অংশ নিচ্ছে। দুই দেশের যৌথ সামরিক মহড়ার ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় বলে জানা গেছে।
উত্তর কোরিয়া আবার দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা চালালে বিমান হামলা চালিয়ে এর পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম কান জিন গতকাল শুক্রবার এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গত ২৩ নভেম্বর দুই কোরিয়ার মধ্যে গোলাবিনিময়ের ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নপিয়ং দ্বীপে দুই মেরিন সেনাসহ অন্তত চারজন নিহত হন। বিষয়টি নিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই গত বুধবার পীতসাগরে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চার দিনব্যাপী যৌথ সামরিক মহড়া শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর এক দিন পর যুক্তরাষ্ট্র গতকাল জাপানের সঙ্গে যৌথ মহড়া শুরু করে। এই মহড়া যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার চার দিনের ওই মহড়ার চেয়েও বড় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-জাপানের যৌথ মহড়ায় এবারই প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে এই যৌথ মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলের কাছে পূর্ব সাগরে ওই যৌথ মহড়ায় দুই দেশের ৪৪ হাজার সেনা, ৪০০ বিমান ও ৬০টি যুদ্ধজাহাজ অংশ নিচ্ছে। মহড়ার প্রথম দিনে গতকাল ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের মধ্যেও পরমাণু শক্তিসমৃদ্ধ মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন অংশ নেয়। জর্জ ওয়াশিংটন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়ায়ও অংশ নেয়। ওই জাহাজে ৭৫টি যুদ্ধবিমান ও ছয় হাজার ক্রু রয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম কান জিন উত্তর কোরিয়ার প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘এবার পিয়ংইয়ং যেকোনো ধরনের হামলা চালালে আমরা অবশ্যই বিমান হামলা চালিয়ে এর কঠোর জবাব দেব।’ তবে তিনি সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ওই অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। দেশটি চীনের জন্যও হুমকি বটে।
কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনা কমাতে ছয় জাতির আলোচনার আহ্বান জানানোয় চীনের সমালোচনা করা হয়। ওয়াশিংটন, সিউল ও টোকিও এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এর জবাবে চীন বলেছে, সামরিক মহড়ার চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে কোরীয়-সংকট সমাধানের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া অনেক বেশি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
আগামী সোমবার হিলারি ক্লিনটনের রাশিয়া, জাপান ও কোরিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। ওই বৈঠক প্রসঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়াং ইউ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বৈঠকের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

No comments

Powered by Blogger.