গোয়েন্দা ফ্লাইট পরিচালনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বিরোধ ছিল

সাইপ্রাসে একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থেকে গোয়েন্দা ফ্লাইট পরিচালনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। উইকিলিকস ওয়েবসাইটে ফাঁস করা গোপন মার্কিন বার্তা থেকে গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা গেছে। যুক্তরাজ্যের আপত্তির জায়গাটি ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন-সম্পর্কিত।
প্রভাবশালী ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত ওই বার্তা থেকে জানা গেছে, তুরস্ক, লেবানন ও উত্তর ইরাকে জঙ্গিদের অনুসন্ধান ও তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারির জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষ ইউ টু বিমানের মাধ্যমে যে গুপ্তচরবৃত্তি করেছে, তা নিয়ে যুক্তরাজ্য সুনির্দিষ্টভাবে আপত্তি করে। অবশ্য ওই গোয়েন্দা ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র যে তথ্য সংগ্রহ করেছে, তা তুরস্ক ও লেবাননের কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছে।
উইকিলিকসের এই বার্তা ফাঁসের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ দুই মিত্র দেশের মধ্যে বিরোধের সাম্প্রতিক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। গত সপ্তাহে আড়াই লাখ মার্কিন গোপন কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে বিশ্বে হইচই ফেলে দেয় উইকিলিকস।
২০০৮ সালের ওই বার্তা থেকে আরও জানা গেছে, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সাইপ্রাসের আক্রোতিরি বিমান ঘাঁটি থেকে পরিচালিত গোয়েন্দা ফ্লাইট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানানোর দাবি করে। তারা জানতে চায়, এই কার্যক্রম সম্পর্কে অন্য কোনো দেশের সরকার অবহিত কি না। কারণ ব্রিটিশরা নিশ্চিত হতে চাইছিল, এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে কোনো ধরনের আইনি ঝামেলা বা অন্য কোনো ঝুঁকি দেখা দেবে কি না।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় লেখা ওই বার্তায় মার্কিন কূটনীতিক লেখেন, ঐতিহ্যগতভাবে মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ দুই দেশের সম্পর্কে অনাস্থার মেঘ জমছে। ব্রিটেনের ওই ধরনের অনুরোধ মার্কিন প্রশাসনকে ক্ষুব্ধ করে। মার্কিন কর্তৃপক্ষের বার্তায় বলা হয়, মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে ব্রিটিশদের উদ্বেগকে যুক্তরাষ্ট্রও গুরুত্ব দেয়। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়ে লেবাননে সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটতে দিতে পারি না আমরা।
ব্রাউনকে অযোগ্য ভাবত যুক্তরাষ্ট্র: ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন সম্পর্কে মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা ছিল, তাঁর ‘ট্র্যাক রেকর্ড খুব বাজে’ এবং তিনি রাজনীতিতে ভুলের পর ভুল করে যাচ্ছেন। উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন কূটনৈতিক বার্তা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার গার্ডিয়ান-এ ওই বার্তার খবর প্রকাশ করা হয়। ওই বার্তায় দেখা গেছে, মার্কিন কর্মকর্তারা ব্রিটেনের লেবার পার্টির দিশেহারা অবস্থায় ব্রাউনের নেতৃত্বে পথ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন।
২০০৮ সালের ৩১ জুলাই ব্রিটেনে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত রবার্ট টিউটেলের লেখা ওই বার্তায় ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, ব্রাউনকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিতে বিদ্রোহ করতে পারেন লেবার নেতারা। সেখানে আরও বলা হয়, লেবার পার্টির ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ডের সম্ভাবনা সবচেয়ে উজ্জ্বল। যদিও এ বছর লেবার পার্টির নেতা নির্বাচনে ছোট ভাই এড মিলিব্যান্ডের কাছে পরাজিত হন ডেভিড।

No comments

Powered by Blogger.