সম্পাদক সমীপে- দেশ ও গণতন্ত্র বাঁচাতে এখনই...

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাই ১৯ জুন দৈনিক জনকণ্ঠের চতুরঙ্গে প্রকাশিত তাঁর লেখা ‘বিএনপির ভ্রান্তি এবং আওয়ামী লীগের করণীয়’ শীর্ষক লেখার জন্য। দেশের দুই বৃহৎ গণতান্ত্রিক দলের প্রতি তাঁর এই দিকনির্দেশনা যে দলই উপেক্ষা করবে আখেরে সে দলই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আমিও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
দেশ ও গণতন্ত্রকে বাঁচাতে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে নাগরিক দায়বদ্ধতায় তাড়িত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে এবং বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ২০০৬ সাল থেকে নিরলসভাবে মাঝে মধ্যেই লিখছি এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বিভিন্নভাবে পরামর্শমূলক লেখা লিখছি যার প্রায় আশি থেকে নব্বইভাগই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে মনে করছি।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর উল্লেখিত লেখায় বর্তমান সরকারের কিছু ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে এক নম্বরেই স্থান পেয়েছে শেয়ার বাজারে ধস। তাছাড়া হেফাজতের সঙ্গে আপোসনীতি এবং গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি আস্থা দেখিয়েও পরবর্তীতে অনাস্থা প্রকাশ করা উল্লেখ করার মতো। কেননা তারুণ্যের প্রতীক গণজাগরণ মঞ্চের তরুণরাই কিন্তু সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। তাদের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন মোটেও শুভ হতে পারে না। গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদেরও উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষ শক্তির প্রতি আন্তরিক ও দৃঢ়ভাবে কাজ করা। তা না হলে তাদের এ আন্দোলন হিতেবিপরীত হতে বাধ্য। শেয়ার বাজারের সঙ্গে ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী দেশের উন্নয়নে সরাসরি যুক্ত, যার সঙ্গে স¤পৃক্ত রয়েছে দেড় থেকে দুই কোটি ভোটার। এই বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কাজেই এ সেক্টরের প্রতি অবহেলা আত্মহননের শামিল। প্রধানমন্ত্রী শেয়ার বাজার এবং দেশের উন্নয়নে একান্তই আন্তরিক বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু কেন যে তিনি বর্তমানে এ ব্যাপারে মুখছেন না তা বোঝা যাচ্ছে না। না কি তাঁর চাটুকারেরা তাঁকে এ ব্যাপারে অন্যভাবে বোঝাচ্ছেন। এই মুহূর্তে শেয়ার বাজার সম্বন্ধে প্রধানমন্ত্রী একটু মুখ খুলে দিকনির্দেশনা দিলেই শেয়ার বাজারের উন্নয়ন হবেই হবে।
শামছুল ইসলাম (সুমন) শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা।

শিক্ষকদের বাঁচান
বর্তমানে বাংলাদেশে বেসরকারী স্কুল (মাধ্যমিক) ও কলেজ শাখার প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক ও কর্মচারী চাকরিরত। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে ওই শিক্ষকদের বিশেষ স্কেল, জাতীয়করণসহ অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়। শিক্ষক-কর্মচারীরা বিভিন্নভাবে তাদের আন্দোলন করে আসছে এবং সরকারের শেষ বছরের বাজেটের মুখাপেক্ষী হয়ে অধীর আগ্রহে ছিল সরকার কিছু একটা করবে। কিন্তু সব আশায় গুড়েবালি। তাই স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা সরকারের ওপর খুবই বীতশ্রদ্ধ। যার প্রতিক্রিয়া তারা নীরবে দেখাবে। তাই সরকারের এখনও সময় আছে শিক্ষকদের জন্য বিশেষ স্কেল অথবা জাতীয়করণ করা।
আবুল হোসেন, উলিপুর, কুড়িগ্রাম।

লুপ্ত খেলার পুনর্জাগরণ
২২ মে, ২০১৩ তারিখে প্রকাশিত পত্রিকান্তরে জানতে পারলাম বাংলাদেশের লুপ্ত প্রায় দেশীয় খেলাগুলোকে পুনর্জাগরণের এক মহতী উদ্যোগে গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। তাদের যৌথ উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী ৩৬টি খেলার পরিচিতি ও কৌশল বিষয়ে একটি কার্ড-বই বেরিয়েছে। যেগুলো দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রদান করা হবে। সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ প্রসঙ্গে আমার একটি আহ্বান যে, এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বছরের একটি নির্ধারিত সময়ে এসব দেশীয় খেলার ওপর প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং নিত্যনৈমিত্তিকভাবে যেন খেলাসমূহ চলমান থাকে।
উদ্যোক্তাগণের প্রতি একটি অনুরোধ, দেশে অনেক কিন্তার গার্টেনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেখানেও অনেক ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে। এসব কার্ড-বই কিন্ডার গার্টেনগুলোতেও প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। উদ্যোক্তাবৃন্দকে বিষয়টি আন্তরিকভাবে ভেবে দেখতে অনুরোধ জানাচ্ছি।
কংকন কুমার সরকার , গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা।

কার্বাইডযুক্ত কলা
দ্রুত পাকাতে কলায় বিষাক্ত কার্বাইড মেশানো হচ্ছে। সব সময় পাওয়া যায় এবং কিছুটা সহজলভ্য হওয়ায় কলা সবার কাছে পছন্দের ফল। এ কারণে সবাই কমবেশি ফলটি কিনে থাকে। কিন্তু কলায় বিষাক্ত কার্বাইড মেশানোর ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের বগুড়া ও জয়পুরহাট কলারহাটের জন্য বিখ্যাত। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ ট্রাক কলা সারাদেশে যায়। কিন্তু দ্রুত পাকাতে এই দুই জেলার ব্যবসায়ীরা কলায় বিষাক্ত কার্বাইড ছিটাচ্ছে। এতে ১২ ঘণ্টার মধ্যে কলার রং সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায় এবং ঐ কলা ২ থেকে ৩ দিন শক্ত থাকে। হলুদ রংয়ের কারণে ক্রেতারা সহজেই আকৃষ্ট হয়। কার্বাইড মেশানো এই কলা মানবদেহের কিডনি ও যকৃতের জন্য ক্ষতিকর। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এই কার্বাইড মেশানো বন্ধ করতে হবে। কার্বাইড মেশানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিতে হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। সর্বোপরি সাধারণ মানুষরকে সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি আশা করছি।
জাহিদ, বাগমারা, রাজশাহী।

বৃক্ষরোপণ অপরিহার্য
বৃক্ষরোপণ সবার জন্য অপরিহার্য। বেঁচে থাকতে হলে প্রয়োজন অক্সিজেন। গাছ মানুষকে অক্সিজেন দেয়। গাছ অক্সিজেন দিতে কার্পণ্য করে না কিন্তু মানুষ বৃক্ষরোপণে অলসতা করে। তাছাড়া গাছ ছায়া দান করে। গাছ হতে নানা রকমের ফল ও ফুল পাওয়া যায়। গাছ হতে পাওয়া কাঠ দিয়ে বসতঘর, আসবাবপত্র, যানবাহনের বডি প্রভৃতি তৈরি করা হয়। গাছ মাটির ক্ষয়রোধ করে। নদী ভাঙ্গনরোধে সাহায্য করে। গাছ ছাড়া মানুষের জীবন-যাপন প্রায় অচল। গাছ লাগাতে হবে খালি জায়গায় যেখানে গাছ নেই। অথচ লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেসব অঞ্চলে বা এলাকায় গাছ প্রায় নেই বললেই চলে সে সব এলাকায় গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেই বললেই চলে। উত্তরবঙ্গের যমুনা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের দুই তীরে, ওই অঞ্চলে স্থায়ী চরে অসংখ্য গাছ লাগাতে হবে দেশ বাঁচাবার প্রয়োজনে। বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তরে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, সৈয়দপুর প্রভৃতি এলাকায় গাছ নিতান্তই কম পরিলক্ষিত হচ্ছে।
আবদুল হাকিম, শ্রীপুর, গাজীপুর।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ
অপদখলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ তিন দশক দেওয়ানি মামলা লড়ার পর এক বছর পূর্বে দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশন পুরনো ঢাকার চাঁনখারপুলের প্রবেশমুখে ৩৮ দশমিক ৪০ শতাংশ জমির মালিকানা লাভ করে। স্থানীয় জনগণের অভিমত, বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এই জমির মূল্য প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। কারও কারও মতে, নিলামে উঠলে এই জমির মূল্য থেকে পাওয়া যাবে ১০০ কোটি টাকা। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এ রকম একটি মহামূল্যবান জমি কোনরূপ টেন্ডার আহ্বান ছাড়াই একটি তথাকথিত বহুমুখী সমবায় সমিতিকে লিজ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, রাতারাতি গজিয়ে ওঠা এই সমিতির পেছনে কিছু অর্থলোলুপ ভুঁইফোড় ব্যবসায়ী, স্থানীয় রাজনৈতিক অপশক্তি এবং সিটি করপোরেশনের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত প্রভাবশালী কর্মকর্তার গভীর যোগসাজশ রয়েছে।
সমিতির নামে সেখানে একটি কাঁচা মার্কেট নির্মিত এবং এর দোকানগুলো সদস্যদের নামে বরাদ্দ দেয়া হলে স্থানীয় জনগণ এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। তাদের লাগাতার বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মিছিলের মুখে দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশন সমিতির নামে কাঁচা মার্কেটটি ভেঙ্গে ফেলতে বাধ্য হয়। এলাকাবাসীর দাবির মুখে আশ্বাস দেয়া হয়, এলাকার পানি সঙ্কট নিরসনে একটি ওয়াসার বৃহদাকার পানির পাম্প হাউস নির্মাণ, যানজট নিরসন এবং পুরান ঢাকার স্বার্থে একটি কারিগরি স্কুল নির্মাণ করার জন্য ওই জমি ব্যবহার করা হবে। কিন্তু অত্যাশ্চর্যের বিষয়, কয়েক মাস চুপচাপ থাকার পর সেখানে সমিতির নামে আবারও একটি কাঁচা মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। বোঝা গেল, তাদের খুঁটির জোর খুবই শক্ত।
এমতাবস্থায়, স্থানীয় জনগণের দৃঢ় বিশ্বাস ওই বহুমুখী সমিতির নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও এর সদস্যদের ইতিবৃত্ত এবং সিটি করপোরেশনের লিজ প্রদানের পদ্ধতিগত বিষয়ে অনুসন্ধান করলে একটি বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনা উদঘাটিত হবে। তাই, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিকট আমাদের অনুরোধ জনস্বার্থে চাঁনখারপুলের প্রবেশমুখে অবস্থিত মহামূল্যবান জায়গাটির (মৌজা-লালবাগ, থানা-চকবাজার, খতিয়ান-১১, জেএল নং-৮, সিট নং-১৬, দাগ নং-৮১৬১, জমির পরিমাণ-৩৮ দশমিক ৪০ শতাংশ), দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশন কর্তৃক লিজ দেয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান ও তদন্ত করে দেখা হোক।
এ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, বেগমবাজার, ঢাকা।

নিরাপত্তা জোরদার করুন
ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডাকাতি করতে গিয়ে অসহায় যাত্রীকে ছুরিরাঘাত করে ঘাতকরা ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে তিন যাত্রীকে এবং গুরুতর আহত হয়েছেন দুই যাত্রী যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। যে তা-বলীলা চালিয়েছে ডাকাত দল তাতে হতবাগ গোটা জাতি। মানুষ চিন্তিত রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। এর আগে গত একুশে জানুয়ারি একই কায়দায় গাজীপুরের শ্রীপুরে হত্যা করেছিল দুই যাত্রীকে। সড়ক থেকে নিরাপদ এবং ঝুঁকিমুক্ত বিবেচনা করেই মানুষ রেল ভ্রমণকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এবং ভ্রমণ করে। নানা রকম বিড়ম্বনা তথা ছিনতাই, গামছাপার্টি, রুমাল পার্টি, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, পকেটমার, মাদক চোরাকারবারি ইত্যাদি ঝামেলা সত্ত্বেও মানুষ রেল ভ্রমণে অনাগ্রহী হন না, কিন্তু বর্তমানে রেলওয়ের নিরাপত্তা নিয়ে মানুষ শঙ্কিত এবং আতঙ্কিত। রেলওয়ের নিরাপত্তাজনিত কারণে রেল ভ্রমণ মুখথুবড়ে পড়তে পারে। বর্তমান এ রেলওয়ের জনবল সঙ্কট এবং সীমিত রেলওয়ের নিরাপত্তাবাহিনী দিয়ে এবং আনসার বাহিনী দিয়ে রেল পরিচালনা করা কতটা নিরাপদ তা জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ? কাজেই পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য জরুরী আহ্বান জানাই।
হরিপদ সাহা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা।

শিশু অপহরণ ও মুক্তিপণ
নারী পাচারের পর এবার শিশু অপহরণের মাত্রা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপহরণকারীদের টার্গেট বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, প্রায় প্রতিদিন অসংখ্য অপহরণ ও মুক্তিপণের ঘটনা পত্রিকায় চোখে পড়ছে। অভিভাবকরা তাদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। ইদানীং বিত্তবানদের ছেলেমেয়ে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে এবং সন্ত্রাসীদের নির্ধারিত স্থানে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করছে। খোদ রাজধানীতে অসংখ্য অপহরণকারী গ্রুপ স্কুল ও কলেজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ছেলেমেয়েকে অপহরণ করছে, পূর্ব থেকে টার্গেট করা ছাত্রদের সুকৌশলে দামী প্রাইভেট গাড়িতে তুলে অজ্ঞান করে তাদের আস্তানায় আটক রেখে ভয় ভীতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করে নিচ্ছে। এই অবস্থার অবসান চাই।
মেছের আলী, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ।

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ
কোন অজুহাত ছাড়াই বাড়ছে ঢাকা শহরের বাড়ি ভাড়া। বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির যেন কোন লাগাম নেই। এই শহরের নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তরা প্রচ- কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। খোঁয়ারের মতো ঘর তুলে ইচ্ছেমতো বাড়ির মালিকরা বছর পার না হতেই ভাড়া বাড়িয়ে চলেছেন। তার ওপর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়ার রসিদ পর্যন্ত দিতে চান না। দেশের বাড়ি ভাড়া বিষয়ক প্রচলিত আইনে বাড়ি ভাড়া দেবার সময় চুক্তি সম্পাদন করা বাধ্যতামূলক হলেও অনেকে তা মেনে চলেন না। এই চুক্তিনামা না থাকার ফলে ঘন-ঘন বাড়ি-ভাড়া বাড়ছে, যা নিয়ে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হচ্ছে। ঢাকা শহরে গত ১০ থেকে ১৫ বছরে প্রায় আড়াইশ’ গুণ বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। অবিলম্বে ভাড়াটিয়াদের স্বার্থ সংরক্ষণে সরকারের আন্তরিক হওয়া দরকার। বিদ্যমান আইন মেনে চলার ব্যবস্থা নেয়া, বর্গফুট অনুসারে ভাড়া নির্ধারণ, ভাড়ার রসিদ প্রদান, অতিরিক্ত অগ্রিম গ্রহণ না করা বা আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা প্রয়োগের কার্যকর অবস্থা গ্রহণে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া প্রভৃতি অবস্থার মাধ্যমে এই সঙ্কট নিরসনে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
জাহিদুর রহমান ইকবাল, পুরানা পল্টন, ঢাকা।

পোশাক শিল্পে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
প্রতিনিয়ত হরতাল নৈরাজ্য অর্থনীতিতে রক্তক্ষরণের প্রভাব পড়ছে। পোশাক শিল্পে মালিকদের দুটি সংগঠনের কক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ঘন ঘন হরতালের কারণে পোশাক শিল্পের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক শিল্পের ছোট বড় কারখানা রুগ্ন শিল্পে পরিণত হচ্ছে। একই সঙ্গে আমদানি রফতানিতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা সব সময় দেশের স্বার্থের কথা বলেন এবং উন্নয়নের কথা চিন্তা করেন, তাহলে সপ্তাহে দুই দিন হরতাল আহ্বান করে তারা কার স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন? আমরা স্বীকার করি হরতাল রাজনৈতিক অধিকার। কিন্তু রাজনৈতিক অধিকারের কথা বলে দানবীয় হরতালের নামে প্রতিনিয়ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, ডাক্তারের গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারা, সংবাদপত্রের গাড়িতে আগুন, বাড়িতে আগুন, দোকান লুট, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আক্রমণ, জরুরী রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স ভাংচুর করে নিরীহ রোগী হত্যা করা, গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে কি-না?
দেশের বিশিষ্ট আইন প্রণেতা, বাঘা বাঘা ব্যারিস্টার এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের কাছে সাধারণ মানুষ উত্তর জানতে চায়। দেশের রফতানি আয়ের আশি শতাংশ আসে পোশাক শিল্প রফতানি খাত থেকে। ৩৫ লাখ নারী শ্রমিক সরাসরি এই পোশাক শিল্পে চাকরিরত এবং তাদের সঙ্গে পরিবারের প্রায় ১ কোটি মানুষ এই ব্যবসা এবং চাকরিরত। কাজেই এই শিল্প ধ্বংস করার জন্য যারা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি মানুষের প্রাণহানির ধ্বংসলীলায় অবতীর্ণ হচ্ছে, তারা কোনদিন দেশের ভাল চায় না। এখন বিরোধী দলের উচিত হরতাল না দিয়ে বিকল্প কর্মসূচী গ্রহণ করা এবং পোশাক শিল্প বিকশিত হয় সেই জন্য সবারই সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরী।

দীলিপ, সোনাগাজী, ফেনী।

No comments

Powered by Blogger.