১০ লাখ বিক্ষোভকারী ব্রাজিলের রাস্তায়

বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক আয়োজনে বিপুল অর্থ বরাদ্দের প্রতিবাদে এবং নাগরিক সেবা বাড়ানোর দাবিতে ব্রাজিলে গণবিক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার প্রায় ১০০টি শহরে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ রাস্তায় নামে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রেসিডেন্ট দিউমা হুসেফ। এ সপ্তাহের জাপান সফরও বাতিল করেছেন তিনি। সাও পাওলোতে এক বিক্ষোভকারী মারা গেছেন।
ব্রাজিলের চলমান বিক্ষোভকে গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় গণ-অসন্তোষ বিবেচনা করা হচ্ছে। ২ জুন সাওপাওলো নগরের গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভের শুরু। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল ও ২০১৬ সালের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের পেছনে প্রায় দুই হাজার ৬০০ কোটি ডলার বরাদ্দের প্রতিবাদ জানায় জনতা। করের উচ্চহার, মুদ্রাস্ফীতি, সরকারের দুর্নীতি, হাসপাতাল, স্কুল ও পুলিশ থেকে শুরু করে পরিবহনব্যবস্থা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে নাজুক সরকারি সেবার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আবাসন খাতে আরো অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তোলে। গত মঙ্গলবার ব্রাজিলজুড়ে আড়াই লাখের মতো মানুষ রাস্তায় নামে। দুই দিনের মধ্যেই এই সংখ্যা ১০ লাখেরও ওপরে চলে গেছে। আটটি দেশের অংশগ্রহণে চলমান কনফেডারেশন কাপকে নির্বিঘ্ন রাখতে প্রধান পাঁচটি শহরে বিশেষ পুলিশ মোতায়েন করেছে সরকার। গত বুধবার সরকার গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার পরও বিক্ষোভ চলতে থাকে।
গত বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রধান শহরগুলোয় বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে। আমাজনাস প্রদেশের রাজধানী মানাউস ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফ্লোরিয়ানোপলিসে কনফেডারেশন্স কাপের খেলা লক্ষ্য করে মিছিল হয়। রিও ডি জেনিরোতে প্রায় তিন লাখ মানুষের মিছিল হয়। শহরের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভকারীদের একদল দাঙ্গা ও লুটপাটের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
সাও পাওলোতে প্রায় সোয়া লাখ মানুষের সমাবেশ হয়। এক লোক গাড়ি নিয়ে সমাবেশের ভেতর ঢুকে পড়লে ২০ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী মারা যান। পুলিশ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। হাজার হাজার মানুষ পার্লামেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্টের দিকে মিছিল করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে আগুন দিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। সারা দেশে কয়েক শ মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রেসিডেন্ট হুসেফ। ২৬ থেকে ২৮ জুন জাপানে রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল করেন তিনি। আগামী ৩০ জুন কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনাল খেলার দিন রিও'র মারাকানা স্টেডিয়ামে সব ধরনের সমাবেশ ডেকেছে বিক্ষোভকারীরা। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.