মাত্র পৌনে ২ কিলোমিটার রাস্তার জন্য-

মাত্র পৌনে দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য হা-পিত্যেস আর দীর্ঘশ্বাস ফেলছে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ১৫ গ্রামের নারী-পুরুষ। সামান্য দূরত্বের এ রাস্তাটুকু না থাকায় জেলা সদরে আসতে তাদের বাড়তি অস্তত ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর হালতি বিল অধ্যুষিত নলডাঙ্গার দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকাও পাকা সড়কের মাধ্যমে এসেছে যোগাযোগের আওতায়। অথচ কুচামারিয়া থেকে দুর্লভপুর পর্যন্ত মাত্র পৌনে দুই কিলোমিটার রাস্তা কার রোষানলের কারণে নির্মাণের খাতায় যোগ হয়নি, সে প্রশ্নে ১৫ গ্রামের নারী-পুরুষকে করেছে বিস্মিত-হতবাক। নাটোর জেলা সদর থেকে পাকা সড়ক বেয়ে মাধনগর হয়ে এখন অনায়াসে যাওয়া যায় নলডাঙ্গা উপজেলার নিভৃত জনপদ ভট্টপাড়া গ্রাম পর্যন্ত। আবার ভট্টপাড়া থেকে জেলা পরিষদের ২০ ফুট চওড়া রাস্তা সাপের মতো এঁকেবেঁকে গিয়ে মিশেছে কুচামারিয়া গ্রামে বটতলার নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের সীমানায়। এখন শুকনো মৌসুম। খাল শুকিয়ে তাই খটখটে। খালের কোন কোন নিচু স্থানে জমে রয়েছে পানি। সে পানির আঁধারে বসে বর্ষার অপেক্ষায় দিন গুনছে ছোট ছোট ডিঙি নৌকা। হয়ত ওই খালের কারণেই ভট্টপাড়া থেকে আসা রাস্তাটি বটতলায় এসে থেমে-থমকে গেছে। খালের ওপর ব্রিজসহ দুর্লভপুর পর্যন্ত পৌনে দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করলে দুর্লভপুর, সাদনগর, বীরকুৎসা, কাতিলা ও মাধাইমুড়িসহ ১৫ গ্রামের নারী-পুরুষকে আর ৫০ কিলোমিটার পথ ঘুরে জেলা সদরে আসতে হয় না। অন্যদিকে কুচামারিয়ার নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের কাজে লাগালে শুকনো মৌসুমেও খালে থৈ থৈ করবে পানি। এতে একই সঙ্গে মিলবে মাছের আবাদ ও সেচের বাড়তি সুবিধা। স্থানীয়রা জানায়, জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ট্রেন। সকাল ৭টার সে ট্রেন ধরতে না পারলে সেদিনের মতো সরাসরি সদরে যাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই। মাত্র পৌনে দুই কিলোমিটার রাস্তা নেই বলে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, রোগী-প্রসূতির হাসপাতালে আনা-নেয়া, বিয়ে-শাদী, বাজার-সদাই, সরকারী অফিস-আদালতে যোগাযোগ- সব ক্ষেত্রেই পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। এলাকার সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী উত্তম কুমার অপু জানান, ঝড়-বাতাসের আঘাতে যদি কখনও বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। শুধু রাস্তার কারণে বিদ্যুত অফিসের লোকজন এলাকায় আসতে চায় না। মাঝে মাঝে এমনও হয়, টানা সাত/আটদিন থাকতে হয় অন্ধকারে। তখন রাস্তার জন্য জোগাতে হয় বাড়তি খরচ। তবেই মেলে বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যান। স্থানীয়রা এ দুর্ভোগের অবসান চায়।

-জিএম ইকবাল হাসান, নাটোর

No comments

Powered by Blogger.