স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় নানা ছাড়

কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে দেশীয় শিল্পকে সহায়তা দেওয়ার প্রচেষ্টা এবারের বাজেটে পরিলক্ষিত হয়েছে।
স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ও সুরক্ষায় এসব নীতিসহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন।
এবার বড় ধরনের সুবিধা পেল দেশীয় দুগ্ধশিল্প। দুগ্ধ উৎপাদনকারীরা এখন থেকে মাত্র ২ শতাংশ শুল্কেই মিল্ক ট্যাংকার আমদানি করতে পারবেন। বর্তমানে এ খাতের উদ্যোক্তাদের ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূসকসহ মোট ৩১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শুল্ককর দিতে হয়।
আবার দেশীয় শিল্পের স্বার্থে বাণিজ্যিকভাবে বাল্কে আমদানি করা গুঁড়া দুধের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে এ ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হয়।
ফ্লোট গ্লাসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া সিরামিক ও গ্লাসশিল্পের উপকরণ কোবাল্ট অক্সাইডের আমদানি শুল্ক ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাঁচ হাজার লিটারের কম ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের জন্য আমদানি পর্যায়ে মাত্র ৩ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। অথচ দেশেই এ ধরনের সিলিন্ডার তৈরি হচ্ছে। তাই পাঁচ হাজার লিটারের কম ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এলপি গ্যাস সিলিন্ডার আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আবার দেশে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
বর্তমানে সম্পূর্ণ তৈরি মিনিবাস আমদানিতে শুল্কহার ১২ শতাংশ। অন্যদিকে এসব মিনিবাসের চেসিস আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় ২৫ শতাংশ। সে কারণে বাজেটে মিনিবাসের চেসিস আমদানির শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেটে পর্যটন খাতের বিকাশে এ খাতের কয়েকটি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। পর্যটনসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করছে সরকার।
স্থানীয় চামড়াশিল্পের জন্যও এবার কিছু সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রিপারেশনস ফর ট্রিটমেন্ট অব লেদার, সালফেটস অব ক্রোনিয়াম, ক্যাসেইন, প্রিপেয়ার্ড বিল্ডার্স ফর ফাউন্ড্রি মোলসের মতো চামড়াশিল্পের উপকরণ আমদানিতে এখন থেকে ৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। বর্তমান অর্থবছরে এসব উপকরণ আমদানিতে উদ্যোক্তাদের ১২ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়।
কৃষকের কষ্টে উৎপাদিত আলু থেকে তৈরি করা পটেটো চিপস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ না থাকায় সম্ভাবনাময় এ খাতের উদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছেন। সে কারণে প্রস্তুতকৃত পটেটো চিপস আমদানিতে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.