যক্ষ্মার পুনরাবির্ভাব রাজরোগ নিয়ে নতুন উদ্বেগ

যক্ষ্মা পুরোপুরি নির্মূল করা যায় কি-না সে ব্যাপারে চিকিৎসাবিজ্ঞান এখনও শেষ কথা বলেনি। কিছুদিন আগে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল হয়েছে বলে ধরা হয়েছিল, সেখানেও এ 'রাজরোগের' পুনরাবির্ভাব ঘটেছে।
প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে নতুন আবিষ্কৃত এসব যক্ষ্মা জীবাণু ধরা পড়ে না বলেও এতদিন এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এখন নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে এই নবআবিষ্কৃত যক্ষ্মা জীবাণু শনাক্ত করা এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে। তবে এটা ঠিক যে, যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও নিরাময়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এখনও বিকল্পহীন। এ রোগের লক্ষণগুলো কী, রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে কী করতে হয় এবং এর বিস্তার কীভাবে রোধ করা যায়, সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা যায়। এতে প্রত্যেক মানুষ এই ঘাতক ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে নিজেই নিজের চারপাশে রোগ প্রতিরোধের দেয়াল তৈরি করতে পারে এবং অন্যকেও একই প্রচেষ্টায় শামিল হতে উৎসাহ জোগাতে পারে। যক্ষ্মা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর মঙ্গলবার 'জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি :ডটস-এর কার্যকারিতা' শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। আলোচনা অনুষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে সমকালে বুধবার 'যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে দরকার সচেতনতা' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, জরিপের মাধ্যমে এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা এখনও নির্ণিত হয়নি। এতেই স্পষ্ট যে, যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কতজনের সংক্রমণ গুরুতর অবস্থায় পেঁৗছেছে, সে সম্পর্কেও সংশ্লিষ্টদের হাতে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত নেই। আলোচনায় রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশি সূত্র থেকে অর্থ সংগ্রহের প্রসঙ্গ এসেছে। জনস্বাস্থ্যের প্রতি মারাত্মক হুমকি বিবেচনায় এ রোগের বিরুদ্ধে নিজেদেরও প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা উচিত। রোগীর সংখ্যা কত, কোন কোন এলাকায় রোগটি বেশি বিস্তার লাভ করেছে এবং আক্রান্তদের জন্য কী ধরনের চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক প্রতিরোধ, প্রতিষধক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, কাজ জরুরি ভিত্তিতে করা চাই। সময় এসেছে যক্ষ্মা প্রতিরোধে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারে না।

No comments

Powered by Blogger.