ইটভাটায় ফসল ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আবদুলপুর ইউনিয়নের সুকদেবপুর গ্রামে ইটভাটার গরম বাতাস ও কালো ধোঁয়ায় বোরো ধান ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গ্রামের মণ্ডলপাড়ার কৃষক আছর উদ্দিন জানান, তিনি বিএডিসির একজন চুক্তিবদ্ধ চাষি। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে তিনি বোরো চাষ করেছেন। কিন্তু ইটভাটা থেকে নির্গত গরম বাতাস ও কালো ধোঁয়ায় কিছু অংশের ধানগাছ জ্বলে গেছে। আর কিছু অংশের ধান চিটা হয়ে গেছে। বীজ তো দূরের কথা, মাড়াই করে চিটা বা খোসা ছাড়া কিছু পাওয়া যাবে না।
কৃষক মমিনুল ইসলাম জানান, ইটভাটার গরম বাতাস ও কালো ধোঁয়ার কারণে গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের মানুষের বাড়িতে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। গাছপালাগুলো মরে যেতে বসেছে। গাছের আম-লিচু পাকার আগেই পচে গেছে।
আবদুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মজিবর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক কৃষক ইটভাটা বন্ধ এবং ক্ষতিপূরণের দাবি করে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ৩০ মে লিখিত আবেদন করেছেন।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, সুকদেবপুর গ্রামের মণ্ডলপাড়া, প্রামাণিকপাড়া, সর্দারপাড়া ও তেলিপাড়া এই চারটি মহল্লার মাঝে রাস্তার পাশে বিশাল ইটভাটা। ভাটার প্রায় এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে খেতের বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বেশ কিছু খেতের ধান চিটা হয়ে গেছে। বাঁশঝাড়, আম ও লিচুগাছের পাতা তাপে পুড়ে গেছে। গাছের আম ও লিচুর বেশির ভাগের নিচের অংশ পচে গেছে। এ সময় গ্রামের ২৫-৩০ জন কৃষক ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন নমুনা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, এক মাস আগে শিলাবৃষ্টির কারণে এলাকার বোরো ফসল, গাছপালা ও বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাঁর ইটভাটার কারণে কোনো ক্ষতি হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
চিরিরবন্দরের ইউএনও মিজানুর রহমান জানান, তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মহন্ত জানান, ঘটনা তদন্ত করতে ইউএনওর কাছ থেকে কোনো চিঠি তিনি পাননি। তবে ঘটনার কথা শোনার পর তিনি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে ওই এলাকায় পাঠিয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিজে ঘটনাস্থলে যাবেন।

No comments

Powered by Blogger.