উৎসবে মাতোয়ারা ফিলিস্তিনিরা

সাধারণ পরিষদে তখনো ভোট শেষ হয়নি। টেলিভিশনের পর্দায় আটকে আছে হাজারো উৎসুক জনতার চোখ। একটাই জিজ্ঞাসা- শেষ পর্যন্ত পাব তো? তাদের চাওয়া একটাই- সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের প্রতীক্ষা স্বার্থক হয়েছে। ফল ঘোষণার পরই জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় নামে সবাই।
মেতে ওঠে আনন্দ-উৎসবে।
জাতিসংঘে ভোটের বেশ আগে থেকেই ফিলিস্তিনে উৎসবের আমেজ চলছিল। কারণ সবদিক বিবেচনা করে এবার ধরেই নেওয়া হয়েছিল ফিলিস্তিন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা পাবে। ফল ঘোষণার পরপরই গতকাল শুক্রবার সকালে রামাল্লায় ইয়াসির আরাফাত চত্বরে ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে নেচে-গেয়ে হাজারো মানুষ উৎসবে মেতে ওঠে। এ সময় তারা 'সৃষ্টিকর্তা মহান', 'আল্লাহু আকবর' বলে স্লোগান দেয়।
ইহাব ইউনুস নামে এক ব্যক্তি বলেন, 'ফিলিস্তিন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ায় আমরা উৎসব করছি। এটা পুরোপুরিভাবেই ফিলিস্তিনিদের উৎসব। এ প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। আজ পুরো দেশের মানুষ খুশি।' আরেকজন বলেন, '৬৪ বছরের দখলদারিত্বের মধ্যে এ প্রথম আমরা ঠিক কূটনীতিক পদক্ষেপটি নিতে পারলাম। আমরা আবু মাজেনকে (মাহমুদ আব্বাস) সমর্থন করি। তবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।'
১৫ বছরের খালৌদ বলে, 'আজকের দিনটি সারা বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিস্তিন আসলে মর্যাদা পাওয়ার উপযুক্ত।' কিছু কিছু ফিলিস্তিনি বলে, 'আমরা ইসরায়েলের বিপক্ষে নই, আমরা তাদের দখলদারিত্বের বিপক্ষে। ইসরায়েলি জনগণের এ বিষয়টি বোঝা উচিত।'
দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। সব স্কুল-কলেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।
রামাল্লা ছাড়াও পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে শোভাযাত্রা বের হয়। এমনকি সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় ক্ষত-বিক্ষত গাজা উপত্যকায় একই সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস করেছে ফাতাহ, হামাস ও ইসলামিক জিহাদ।
পতাকা হাতে উৎসবে যোগ দেয় ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক লাইলা জামান। তিনি বলেন, 'আমার খুব ভালো লাগছে। কতটা ভালো তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমরা একটি কালো অধ্যায়ের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি।' সূত্র : বিবিসি, টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.