লালমোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়- দোকান বরাদ্দ দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ by নেয়ামতউল্যাহ



ভোলার লালমোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা বিপণিবিতানের ১৯৮টি দোকানঘর বরাদ্দের প্রায় চার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কমিটি প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দোকানপ্রতি তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। এর মধ্যে দোকান নির্মাণের আগেই বরাদ্দের আবেদনের সময় নগদ এক লাখ টাকা করে দিতে হয়েছে। তবে তাঁদের শুধু ভাড়ার চুক্তির একটি কাগজ দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা তুলেছেন উপজেলা যুবলীগ নেতা ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জহির হাওলাদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব আবু তৈয়ব এবং সদস্য জহির হাওলাদার দাবি করেন, বিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর জন্য বর্তমান কমিটি বিপণিবিতান নির্মাণ করেছে। তবে ব্যবসায়ীদের দোকানের জন্য জমি বরাদ্দ দিলেও তাঁদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ খরচে দোকানঘর তৈরি করেছেন। তাঁরা প্রতি মাসে ওই জমির ভাড়া পরিশোধ করবেন। একটি সুবিধাবাদী মহল এই কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরভবনের সামনের রাস্তার অপর পাশেই ওই জমিতে ২৭১টি আধা পাকা দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি দোকানের আয়তন ৩৫-৪০ বর্গফুট থেকে ১৫০ বর্গফুট। ইতিমধ্যে ১৯৮টি ঘর নির্মাণ শেষে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দোকানঘরে সাজসজ্জার কাজ করাচ্ছেন। সব ঘর একই নকশায় তৈরি। লম্বা সারিবদ্ধ দোকানের সামনে পাকা সড়ক। টয়লেট ও গোসলখানার ব্যবস্থা রয়েছে।
রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জহির হাওলাদার বিপণিবিতানের দোকানঘর নির্মাণের দায়িত্বে আছেন। সব মিলিয়ে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী আনিছুল হক বলেন, ‘এত বড় মার্কেট নির্মাণে কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। মার্কেটের ঘর বরাদ্দ দিয়ে প্রতি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এভাবে ছয়-সাত কোটি টাকা উঠালেও বিদ্যালয়ের তহবিলে কোনো টাকা জমা হয়নি। বর্তমান কমিটি এসব টাকা লুটপাট করছে।’
ব্যবস্থাপনা কমিটি সূত্রে জানা যায়, লালমোহন পৌরসভার মেহেরগঞ্জ মৌজায় বিভিন্ন দাগে লালমোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নয় একর ২৮ শতাংশ জমি আছে। বিদ্যালয়ের পশ্চিম-উত্তরে প্রায় চার একরজুড়ে বিপণিবিতান নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কমিটির সভাপতি হলেন ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী।

No comments

Powered by Blogger.