বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের নামে ৩২টি গাছ কর্তন

বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের নামে অবৈধভাবে কেটে ফেলা হয়েছে ৩২টি বনজ গাছ। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মহান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের স্থান, সীমানা ও পুরোনো ভবনের সামনে থেকে ওই সব গাছ কাটা হয়েছে।
নিয়মানুযায়ী, কোনো সরকারি গাছ কাটতে হলে বন বিভাগের ছাড়পত্রের পাশাপাশি দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে গাছগুলো কেটে নিয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মহান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ প্রস্থের চারতলা ভিত্তির একতলা ভবন নির্মাণের জন্য ৫৬ লাখ ৫১ হাজার ৪২৭ টাকা ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় সাতক্ষীরার মেসার্স বসু ট্রেডার্স।
গত ২৭ অক্টোবর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে কাজ চলছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সফিউল্লাহ জানান, তিনি ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যালয়ের ৪০টি গাছ কাটার জন্য ইউএনওর কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় অনুমতি দেওয়া হয়। সভায় উপজেলা প্রকৌশলী, শিক্ষা কর্মকর্তা ও খলিলনগর ইউপির চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষকে গাছ কাটার বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁদের তত্ত্বাবধানে গাছ কাটা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, বর্তমানে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের স্থানে ১২টি গাছ ছিল। অন্য গাছগুলো ছিল সীমানাপ্রাচীর ও পুরোনো ভবনের সামনে। কিন্তু ভবন নির্মাণের নামে ৩২টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এসব গাছের অংশবিশেষ ইতিমধ্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সেকেন্দার আকুঞ্জি জানান, কাটা গাছগুলো প্রণব ঘোষের জিম্মায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রণব ঘোষ জানান, গাছগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। গাছের অংশ নয়, ডাল জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। গাছ কাটার কাজে ওই টাকা ব্যয় হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশিষ কুমার নন্দী জানান, গাছ কাটার আবেদনের কপি তাঁর দপ্তরে দেওয়া হয়নি। এমনকি অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাঁকে জানাননি। এ বিষয় প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ইউএনও মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ভবন নির্মাণের জায়গা ছাড়া অন্য স্থানের গাছ কাটার কথা নয়। যদি কেটে থাকে, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.