কালের পুরাণ-গলাবাজির রাজনীতি এবং ‘আগুন নিয়ে খেলা’ by সোহরাব হাসান

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে চালকবিহীন বিমান থেকে বোমা মেরে আমেরিকা তালেবানকে প্রতিহত করতে না পারলেও আমাদের রাজনীতিকেরা তার চেয়েও কয়েক শ গুণ শক্তিশালী বাক্যবোমা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চাইছেন। এ কাজে তাঁরা কতটা সফল বা ব্যর্থ, সেই বিতর্কে না গিয়েও যে বলা যায়, তাঁরা দলীয় স্বার্থ উদ্ধার করতে গিয়ে দেশ ও জনগণের সর্বনাশ করছেন। প্রতিদিন টনকে টন শব্দদূষণ ছড়াচ্ছেন।


বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পুরস্কার-পদক পাচ্ছে। অসার ও অর্থহীন কথার ওপর যদি কোনো পুরস্কার ঘোষিত হতো, আমরা হলফ করে বলতে পারি, আমাদের রাজনীতিকেরা প্রথম পুরস্কারটি বাগিয়ে নিতেন। যাঁরা দেশবরেণ্য নেতা, রাষ্ট্রের কর্ণধার, তাঁদের কাছ থেকেই সাধারণ মানুষ শিক্ষা ও সেবা নেয়। নিজেদের শিক্ষিত করে তোলে। কিন্তু রাজনীতিকেরা কী শিক্ষা দিচ্ছেন? শিক্ষা দিচ্ছেন গালাগাল, খিস্তিখেউড়। পত্রিকায় লেখা যায় না, এমন শব্দগুচ্ছ তাঁরা হররোজ উগরে দিচ্ছেন জাতিকে।
আগে এ ব্যাপারে বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে, সরকারি ও বিরোধী দলের অনেক নেতাই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। একসময় চীনের মানুষকে আফিম খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হতো, যাতে তারা জীবন-জগৎ সম্পর্কে উদাসীন থাকত। এ সুযোগে বিদেশি শাসকেরা চীনের সম্পদ লুটপাট করে নিয়েছেন এবং তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশ এখন আর বিদেশিরা শাসন করছে না, দেশীয় শাসকেরাই শাসন করছেন। যদিও তাঁদের আচার-আচরণ বিদেশিদের মতো। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম দরদ ও ভালোবাসা থাকলে তাঁরা এমন আচরণ করতে পারতেন না (অবশ্য ব্যতিক্রম সব জায়গায়ই আছে, তাঁদের প্রতি ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক)।
গত এক সপ্তাহে নেতা-নেত্রীদের বক্তৃতা-বিবৃতি বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাব, মনে তাঁরা কী প্রচণ্ড ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ করেন। তাঁরা একে অপরকে সম্বোধন করেন দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, ষড়যন্ত্রকারী, বিদেশি ক্রীড়নক, গোয়েন্দা সংস্থার দালাল বলে।
এখানে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি: আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ১৯ অক্টোবর এক আলোচনা সভায় বলেছেন, ‘সিরাজগঞ্জের ট্রেন দুর্ঘটনা, নাটোরে উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা এবং চট্টগ্রাম বন্দরে সংঘর্ষ—এসব ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা হওয়া উচিত।’
আইন প্রতিমন্ত্রী যখন জানেন, বিএনপির নেতারা দেশে নাশকতা করছেন, নাটোরে আওয়ামী লীগকে দিয়ে নিজ দলের নেতাকে খুন করিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছেন, তখন তাঁর দায়িত্ব তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, বক্তৃতা দেওয়া নয়। যে সরকার জেনেশুনে এ রকম ভয়ংকর নাশকতাকারীদের ছাড় দেয়, সেই সরকারে থাকাও বোধহয় তাঁর ঠিক হচ্ছে না।
২০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে দিতেই হবে। সাকা চৌধুরী সেনাবাহিনীকে এ বিষয়ে জড়ানো এবং সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগের আরও একাধিক নেতা সাকা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তাঁর বাড়িতে নাকি পুলিশও গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি গ্রেপ্তার হননি। মাজেজাটি কী, দেশবাসী জানতে চায়।
একই সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়তেই হবে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বলে গেলাম, হাইকোর্টের রায় না মানলে কীভাবে তিনি দেশে থাকবেন?’ (প্রথম আলো, ২১ অক্টোবর)
এটি প্রচ্ছন্ন হুমকি। অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রী সম্পর্কে এ রকম বক্তব্য দিতে পারতেন না। বিরোধীদলীয় নেত্রীর অবস্থান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনেক ওপরে। তাঁকেই বিকল্প প্রধানমন্ত্রী ভাবা হয়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ১৯ অক্টোবর অপর এক সমাবেশে বলেছেন, ‘বিএনপি আন্দোলনে গেলে প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথে তাদের শায়েস্তা করবেন। আমরা আন্দোলন করতে জানি। কীভাবে আন্দোলন প্রতিহত করতে হয়, সেটাও জানি (প্রথম আলো, ২০ অক্টোবর)। বিরোধী দলকে প্রতিহত করেই কি হানিফ সাহেবরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান? সরকারের হাতে পুলিশ আছে, প্রশাসন আছে, তার পরও এভাবে বিরোধী দলকে শায়েস্তা করতে হবে কেন? তাঁরা কি ভয় পেয়ে গেলেন?
এখন দেখা যাক, বিরোধী দল কীভাবে সরকারি নেতাদের হুমকি-ধমকির জবাব দিচ্ছেন। বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন একাই পিটিয়ে চলেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিচ্ছেন। মন্ত্রীদের দিকে পাল্টা তীর ছুড়ে দিচ্ছেন। সরকার পতনের ডাক দিচ্ছেন।
সোমবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে ঢাকা বারে আয়োজিত আলোচনা সভায় খোন্দকার দেলোয়ার বলেন, ‘সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জনগণ ন্যায়বিচারের জন্য আদালতে যায়। কিন্তু বিচার বিভাগকে দলীয়করণের ফলে মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। বর্তমান সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ না করে বিদেশি স্বার্থে কাজ করছে।’ প্রভুদের নির্দেশে সরকার সবকিছু করছে বলে বিএনপির মহাসচিব নালিশ জানাচ্ছেন, কিন্তু প্রভুদের নাম বলছেন না। ভাশুরের নাম নিতে লজ্জা হয়, কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে বোমা মেরে মানুষ মারতে লজ্জা হয় না। এই লজ্জাহীন রাজনীতি কত দিন চলবে?
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ইকবাল হাসান মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, ‘রক্ষীবাহিনীর মতো পুলিশকে ব্যবহার করছে সরকার। এরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের অকারণে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, মামলা-হামলা করছে আর রাতের আঁধারে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে লুটপাট চালাচ্ছে। ফলে পুরো সিরাজগঞ্জে অলিখিত বাকশালীয় শাসন চলছে।’
আওয়ামী লীগ বাকশালী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে কি না, তা তিনি তাঁর নিকটাত্মীয় ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিমকে জিজ্ঞেস করতে পারতেন। তিনি দেশবাসীকে হয়তো এ কথাই বোঝাতে চাইছেন—আওয়ামী লীগারদের সঙ্গে আত্মীয়তা করা যায়, রাজনীতি করা যায় না।
সরকারি ও বিরোধী দলের নেতারা যখন এই ফালতু বিষয় নিয়ে অহেতুক ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত, তখন দেশের অবস্থাটা কী? কয়েক দিন আগে উপকূলে ছোটখাটো ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেল। বহু মানুষের ঘরবাড়ি ও খেতের ফসল ভাসিয়ে নিয়েছে। আবারও নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল। বাজারে আটা-চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। বাড়িতে, রাস্তাঘাটে মানুষ বেঘোরে মারা যাচ্ছে। দেশে ৩৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। তিন কোটি শিশু চরম পুষ্টিহীনতার শিকার। এসব নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। এই যে নাটোরে একজন আদর্শবাদী কলেজশিক্ষক ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় মারা গেলেন, সে ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী দলের কোনো বক্তব্য নেই। সিরাজগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে ছয়জন মারা গেলেন, তাঁরা যে দলেরই হোক—এ দেশের মানুষ। তাঁদের ব্যাপারে কি সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই? কিংবা আগুন লাগিয়ে যেভাবে বিএনপির কর্মীরা ট্রেন পুড়িয়ে ফেলল, সে ব্যাপারে কি নেতাদের কোনো দায় নেই? তাঁরা দেশ নিয়ে, মানুষ নিয়ে ভাবেন না। অঘটন-অপমৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করেন—কীভাবে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সেটি ব্যবহার করা যায়।

২.
সামরিক শাসন থেকে গণতন্ত্রের ফারাকটা হলো: গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা করে জনগণ, তাদের প্রতিনিধিদের দ্বারা। সামরিক শাসনে সেনানায়ক দেশ চালান সামরিক ও বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে। গণতন্ত্রে জনগণই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক। সামরিকতন্ত্রে সিদ্ধান্ত নেন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। তাঁরা যেভাবে বলেন, সেভাবেই সামরিক একনায়ক কর্মসূচি নেন, কাজ করেন। তাঁরা যাঁকে মন্ত্রী করতে বলেন তাঁকে মন্ত্রী করেন, যাঁকে জেলে পুরতে বলেন তাঁকে জেলে পোরেন।
জিয়াউর রহমান সেনানিবাসের বাড়িতে বসে সামরিক গোয়েন্দাদের দিয়ে কীভাবে দল করেছেন, কিছুদিন আগে আমেরিকান দলিলপত্রের বরাতে তার বিবরণ প্রথম আলোয় ছাপা হয়েছে। তাঁর উত্তরসূরি এরশাদও একই পদ্ধতিতে দল করেছেন। সামরিক শাসনামলে গোয়েন্দা সংস্থার অফিসে বসে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষিত হয়, তারপর সেটি তথাকথিত গণভোটে পাস করিয়ে নেওয়া হয়।
গণতান্ত্রিক শাসনামলে সামরিক কিংবা সিভিল গোয়েন্দা সংস্থার রাজনীতিতে নাক গলানোর কথা নয়। তাদের কর্তব্য সরকারের গৃহীত নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ও নাশকতা থেকে দেশকে, দেশের মানুষকে রক্ষা করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশে এ দুটি সংস্থা কোনো নাশকতাই ঠেকাতে পারেনি। পারলে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে, ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমানকে এবং ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ৫৬ জন সেনা কর্মকর্তাকে জীবন দিতে হতো না।
চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান নিয়ে যেসব কাণ্ড এই সংস্থার তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ঘটিয়েছেন, তাতে মনে হয় তাঁদের কাছে দেশের নিরাপত্তা নয়, ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থই বড়। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে সামরিক গোয়েন্দাদের ব্যবহার করলে তাঁরাও নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করবেন সরকারের ঘাড়ে বন্দুক রেখে। সামরিক শাসনামলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমনকি বিএনপির ভেজাল গণতন্ত্রেও সিভিল শাসনেও গোয়েন্দাদের অপচ্ছায়া লক্ষ করা গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শতভাগ নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক শাসনেও কেন সেই ছায়া দৃশ্যমান হবে?
বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া দলের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হুদাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ডিজিএফআইয়ের এজেন্ট হয়ে কাজ করবেন না (সমকাল, ২৩ অক্টোবর)। নাজমুল হুদা দেশের সমস্যা-সংকট নিয়ে শীর্ষ দুই নেত্রীর বৈঠক করার কথা বলেছিলেন। এটি খালেদা জিয়ার ভালো লাগেনি। বিরোধী দলে থাকলে হয়তো শেখ হাসিনাও ভালোভাবে নিতেন না। তাঁরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেত্রী। একত্রে বসলে, কথা বললে তাঁদের মর্যাদা থাকে না।
কোন দলে কতজন ডিজিএফআইয়ের দালাল আছেন, সে বিতর্ক বেশ জমে উঠেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ছিলেন ডিজিএফআইয়ের দালাল। তিনি জিজিএফআইয়ের কাছ থেকে ভাতা নিতেন (আমার দেশ, ১৯ অক্টোবর)। উত্তরে খন্দকার মাহবুব বলেছেন, ডিজিএফআইয়ের সহায়তায় সৈয়দ আশরাফ ১/১১-এর পর দেশ ত্যাগ করেছিলেন। অতএব কারা ডিজিএফআইয়ের ভাতা পেতেন, তাঁরই ভালো জানার কথা (আমার দেশ, ১৯ অক্টোবর)।
খন্দকার মাহবুব আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, ১/১১-এর সরকার নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে তাঁকে নাকি জিতিয়ে এনেছে। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেলের একক প্রার্থী ছিলেন। এখন বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচিত হলে তিনি কি খালেদা জিয়ার বাড়ি রক্ষার আন্দোলনে নামতেন?
আমাদের রাজনীতিক ও আইনজীবী নেতারা শুধু কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত নন, তাঁরা রাজনৈতিক বিতর্কে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকেও টেনে এনেছেন। এ আগুন নিয়ে খেলার পরিণামের কথা তাঁরা কি একবারও ভেবে দেখেছেন? গণতন্ত্রের মূল কথা হলো, আলোচনা ও যুক্তিতর্ক। কিন্তু আমাদের নেতা-নেত্রীরা আলোচনা পছন্দ করেন না, যুক্তিতর্কের ধার ধারেন না। তাঁরা একে অপরকে ঘায়েল করতে মুখিয়ে থাকেন। নেতা-নেত্রীরা ১/১১-এর জন্য একে অপরকে দায়ী করেন, আবার নিজেরাই আরেকটি ১/১১-এর ক্ষেত্র প্রস্তুত করে চলেছেন। এর পরিণাম কী ভয়াবহ হতে পারে, তা কি তাঁরা জানেন? অবশ্য তাতে নেতা-নেত্রীদের কিছু আসে-যায় না। সর্বনাশ হবে জনগণের। নেতা-নেত্রীদের বাড়ি-গাড়ি, সুযোগ-সুবিধা, বিদেশভ্রমণ ঠিকই থাকবে। এক আমলে জেলে গেলে অন্য আমলে মন্ত্রী হয়ে, সাংসদ হয়ে তাঁরা সুদ-আসলে পুষিয়ে নেবেন।
সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।
sohrab03@dhaka.net

No comments

Powered by Blogger.