দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন-দেশ টিভির কার্যালয়ে হামলা

গত বৃহস্পতিবার দেশ টিভির কার্যালয়ে ককটেল হামলার যে ঘটনা দুর্বৃত্তরা ঘটিয়েছে, তা যেমন উদ্বেগজনক তেমনি নিন্দনীয়। একটি মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা টিভির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ভবনের মূল ফটকের কাচের দরজা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।


এই ভবনে টিভি চ্যানেল ছাড়াও দৈনিক ভোরের কাগজ ও সান্ধ্য দৈনিক দিনের শেষের কার্যালয় রয়েছে। স্বভাবতই তিন গণমাধ্যমের কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এই হামলা শুধু একটি ভবন বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নয়, স্বাধীন গণমাধ্যম তথা মত প্রকাশের ওপর নগ্ন হামলা। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের ওপর দেশ টিভি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রচার করলে একটি মহল ক্ষুব্ধ হয়। তারা টেলিফোনে টিভির সংবাদকর্মীদের হুমকি দিয়েছে। এ ছাড়া মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী দেশ টিভির বিরুদ্ধে অব্যাহত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ বিবৃতি দিয়ে এর সম্প্রচার বন্ধ করারও দাবি জানিয়েছেন। এই মহলের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের হামলাকারীদের কোনো যোগসাজশ আছে কি না, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত তা খতিয়ে দেখা। কোনো অনুষ্ঠান বা সংবাদের ব্যাপারে কারও বক্তব্য থাকলে তা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনেই প্রকাশ করতে হবে। এ ব্যাপারে তারা আইনেরও আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু সেসব না করে কার্যালয়ে বোমা বা ককটেল নিক্ষেপ করা গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করারই শামিল। শুধু দেশ টিভিতে নয়, বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, কোনো সংবাদ বা অনুষ্ঠান কারও বিপক্ষে গেলেই নানা রকম ঘৃণ্য তৎপরতা শুরু হয়। এগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
ঢাকার একটি ব্যস্ততম এলাকায় গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা নির্বিঘ্নে কীভাবে পালিয়ে গেল? সেখানে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই বা কী করেছেন? গণমাধ্যম কার্যালয় যদি দুর্বৃত্তদের থাবা থেকে মুক্ত না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? সরকারের দায়িত্ব দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। কেবল আইন করেই গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। তাঁরা যাতে নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্ন পরিবেশে কাজ করতে পারেন, সেই নিশ্চয়তাও সরকারকে দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.