টে লি ফো নে না গ রি ক ম ন্ত ব্য-রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া দুর্নীতি না কমার কারণ

প্রিয় পাঠক, আপনাদের সরাসরি মন্তব্য নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে এবার দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত: আপনার মন্তব্য কী? প্রশ্নে টেলিফোনে পাওয়া মন্তব্যগুলোর বাকি অংশ ছাপা হলো আজ।
মণি অরণ্য, কৃষক, নবীনগর, সাভার


দুর্নীতি অপরিবর্তিত। তাহলে কর্ণধারদের প্রতিশ্রুতি-করণীয় সবই কি অপরিবর্তিত? আমরা একে অপরের নিন্দা করি, করণীয়টুকু করি না। আইন সবার জন্য সমান, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ থাকবে না। আর বিচার বিভাগ যাতে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে না পড়ে, বিকৃত না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকা এবং আশ্রয়-প্রশ্রয়, স্বজনপ্রীতি ও ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।
জসীমউদ্দিন মোল্লা, শিক্ষার্থী, মানিকগঞ্জ
বর্তমান সরকারের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাদের যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং মুজিব কোটের বেড়াজালে দুর্নীতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই। শুধু টেন্ডারবাজির মাধ্যমেই দেশ দুর্নীতির আখরা হিসেবে সামনে অগ্রসর হচ্ছে।
শ্যামল তালুকদার, শিক্ষার্থী
কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, সিলেট
দেখা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০১০ সময়কালের মধ্যে দুর্নীতির হার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে কম। কারণ, তারা সব দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করেছিল এবং কঠোর হাতে দমন করেছিল। কথায় বলে, ‘বাঙালি শক্তের ভক্ত নরমের যম।’
এস এম ছাইফুল্লাহ খালেদ
কুতুবদিয়া, কক্সবাজার
বাংলাদেশের দুর্নীতি ব্লাড ক্যানসারের মতো। কারণ, যাঁরা দেশ পরিচালনা করেন, তাঁরা দুর্নীতিবাজ হওয়ায় অধস্তন সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ হচ্ছে না। বাংলাদেশের দুর্নীতির জোয়ার সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর দিকে। দুর্নীতিবাজ দ্বারা দুর্নীতি দমন কখনো সম্ভব হবে না।
তারিক-উল-ইসলাম, শিক্ষার্থী
সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, বরিশাল
দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকারের তাচ্ছিল্যের মনোভাবকে দায়ী করব। আর সরকার কীভাবে দুর্নীতি দূর করবে, যেখানে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা দলীয় সব অঙ্গসংগঠনের দুর্নীতি চাপা দিয়ে তা বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এতে দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে আরও উৎসাহিত হচ্ছে।
সঞ্জয় বিশ্বাস, চাকরিজীবী, তেজগাঁও, ঢাকা
টিআইয়ের এই ধারণার সঙ্গে আমি পুরোপুরি এক মত। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্যবসায়ী-আমলাসহ বিভিন্ন লোকজন রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় দুর্নীতি করছে। তার প্রমাণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে ব্যক্তিদের আটক করেছিল, এ সরকার রাজনৈতিক হয়রানি বলে তাদের মুক্ত করে দিয়েছে। এতে সবাই দুর্নীতিতে উৎসাহ পাচ্ছে। আমার ধারণা, আগামী বছর আমরা দুর্নীতিতে আরও এগিয়ে যাব।
সিরাজুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, রিকাবীবাজার, মুন্সিগঞ্জ
যেভাবে সরকারদলীয় নেতা-কর্মী ও কর্মকর্তারা দখলবাণিজ্য ও লুটপাট করে প্রতিটি অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করছে, ঠিক সেই মুহূর্তে টিআইয়ের ধারণাসূচকের মূল্যায়নটি সঠিক হয়নি। আমরা এর পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানাই।
কাজী মুক্ত, নির্বাহী প্রধান, পথিকৃত
মন্ত্রীদের পরস্পরের সমন্বয়হীনতা হলো দুর্নীতির প্রধান কারণ। বর্তমান সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ভুলে গিয়ে শুধু বিরোধী দল নিয়ে ব্যস্ত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে মন্ত্রী ও সচিবদের অগ্রাহ্য করাও একটি কারণ।
মজিফুর চৌধুরী
পরিচালক, হলিসিটি হসপিটাল
টিআইয়ের ধারণার সঙ্গে আমিও একমত। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত হলো আইনের শাসন, যা আমাদের সমাজে মুখ থুবড়ে পড়েছে শুধু দলীয়করণের কারণে। প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থাকে দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। সর্বোপরি সিবিএকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রধান দুই দলের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তবেই আমরা দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।
এম এস হাসান, ব্যবসায়ী, নারায়ণগঞ্জ
টিআইয়ের এই সূচক থেকে আমরা বুঝতে পারছি, আমরা খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। এটা খুবই লজ্জাজনক।
শরীফ আহমেদ, শিক্ষক, কুমিল্লা
দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন না করা আসলে বাংলাদেশের প্রতি করুণা করা। দুর্নীতিকে যদি দৈত্য ভাবা হয়, তাহলে ওই দৈত্য বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
ইমরুল মীর, শিক্ষার্থী, কল্যাণপুর, ঢাকা
দুর্নীতিতে যখন আমরা প্রথম ছিলাম, সেটা ছিল খারাপ একটি ব্যাপার। কিন্তু ভালো অবস্থান থেকে পিছিয়ে যাওয়া খুবই খারাপ। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাই।
ওলিউর রহমান
শিক্ষার্থী, দিনাজপুর সরকারি কলেজ
বর্তমানে যে পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে, সেই তুলনায় এই সূচক খুবই কম।
আরিফ, শিক্ষার্থী
ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
এই দুর্নীতি দূর করতে হলে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে।
রাসেল কান্তি দাস, শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
দুর্নীতির এই অবস্থানের তিনটি কারণ উল্লেখ করতে চাই। ১. সরকারের উদাসীনতা, ২. জনসাধারণের দায়িত্ববোধহীনতা, ৩. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।
রফিকুল ইসলাম আকন্দ
ব্যবসায়ী, চৌদ্দগ্রাম, চট্টগ্রাম
টিআইয়ের সঙ্গে আমি একমত। তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকারের সময় দুর্নীতি বেশি হয়।
জাহিদুর রহমান, শিক্ষার্থী
এমএম কলেজ, যশোর
রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ না দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিলে দুর্নীতি অনেক কমবে। পাশাপাশি দলপ্রেম নয়, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
রেদোয়ান করিম, শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
আমার ধারণা, টিআইয়ের জরিপ তৃণমূল পর্যায়ে হয়নি। তাই ২ দশমিক ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বাদশ স্থান দখল করেছে। খতিয়ে দেখা হলে ১ দশমিক ৬ পয়েন্ট নিয়ে ইরাক ও সুদানের মতো তৃতীয় পর্যায়ে থাকত। দুদক হয়ে পড়েছে নখ ও থাবাবিহীন বাঘ।
খন্দকার ইলিয়াস সরোয়ার
শিক্ষার্থী, হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতিবিরোধী দৃঢ় ও সুনির্দিষ্ট প্রত্যয় ব্যক্ত করা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই বাংলাদেশের উন্নতি হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের দুর্নীতিতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সব ধরনের রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে এর প্রতিকার করুন।
মেহেদী হাসান, শিক্ষার্থী, নরসিংদী
এই অবস্থা থেকে উন্নতি করতে হলে এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মোস্তফা কামাল, শিক্ষার্থী, বগুড়া
আমাদের দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি বেড়ে চলেছে। তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে অত্যন্ত বেশি।
আক্কাস আলী, চাকরিজীবী, গাজীপুর
সূচক অপরিবর্তিত থাকলেও দুর্নীতি আগের তুলনায় বেড়েছে অনেক।
মো. শেখ সাদী, শিক্ষার্থী
সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেনি। এই সত্যের প্রতি কারও কোনো দ্বিমত নেই। তবে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের মূল্যবোধের বদল ঘটিয়ে দুর্নীতি কমানো সম্ভব।
রিয়াজ, শিক্ষার্থী, শান্তিবাগ, ঢাকা
আমাদের দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
সৌরভ, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ
এবার অবস্থান ১৩তম হলেও স্কোর আগের তুলনায় অনেক বেশি।
বিভূতিভূষণ মাহাতো, শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
টিআইয়ের রিপোর্টে দেখতে পাই, দুর্নীতি খুব একটা বাড়েনি। কিন্তু আসলে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা।

No comments

Powered by Blogger.