সাংবাদিকরা আক্রান্ত-সাড়ে তিন বছরে ১৩ খুন পাঁচ শতাধিক আহত by পারভেজ খান

হঠাৎ করেই সাংবাদিকদের ওপর মারমুখী হয়ে উঠেছে পুলিশ। সংবাদ বা ছবি সংগ্রহের পেশাগত কাজ করতে গিয়ে অযথাই মার খাচ্ছেন সাংবাদিকরা। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে, যেন কোনো ঘটনাস্থলে সাংবাদিক পেলেই পেটানোর জন্য হাত নিশপিশ করে পুলিশের। বসে নেই সন্ত্রাসীরাও।


অসাধু মহলের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলেই আক্রোশের শিকার হতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। হামলা-নির্যাতনের পাশাপাশি বেড়েছে হত্যাকাণ্ডও। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে এ পর্যন্ত দেশে ১৩ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, আর হামলার শিকার হয়েছেন পাঁচ শতাধিক সাংবাদিক। অথচ এসব ঘটনার কোনোটিরই বিচার হয়নি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে সংঘটিত সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর এখন পর্যন্ত কোনো খুনি গ্রেপ্তার না হওয়ায় এমনিতেই সাংবাদিকরা শঙ্কিত ও হতাশাগ্রস্ত। এর ওপর শুরু হয়েছে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের হামলা। যে সাংবাদিকরা সব দল-মত-শ্রেণী-পেশার মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের খবর ও ছবি তুলে ধরেন প্রচারমাধ্যমে, তাঁরাই আজ নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজপথে নেমেছেন ব্যানার-ফেস্টুন হাতে।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে গত শনিবার পুলিশের হামলায় দৈনিক প্রথম আলোর তিন ফটোসাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার আদালতে পুলিশের নির্মম লাঠিপেটার শিকার হলেন আরো তিন সাংবাদিক।
গতকাল প্রেসক্লাবের সামনে চলছিল নির্যাতনের প্রতিবাদে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ। একই সময় কোতোয়ালি থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদের নির্দেশে পুলিশ পেটাল আরো তিনজন সাংবাদিককে। নির্যাতনের শিকার এই তিন সাংবাদিক হচ্ছেন দৈনিক কালের কণ্ঠের এম এ উজ্জ্বল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের তুহিন হাওলাদার এবং প্রথম আলোর প্রশান্ত কর্মকার। এ সময় দুজন আইনজীবীও হামলার শিকার হন। উপস্থিত কয়েকজনের অভিযোগ, লাঠিপেটা চলাকালে ওসি সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের উদ্দেশে উচ্চ স্বরে বলছিলেন, 'আমাকে এসি শহীদ পাওনি। আমার বাড়ি গোপালগঞ্জে। আন্দোলন কাকে বলে আজ শিখিয়ে দিচ্ছি।' এই এসি শহীদ হলেন আগারগাঁওয়ে সাংবাদিক পেটানোর ঘটনার মূল নায়ক, পরে সাময়িক বরখাস্ত।
কেন পুলিশ হঠাৎ খেপা : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁদের কাছে মনে হচ্ছে, সরকার ও পুলিশকে বেকায়দায় ফেলার জন্য একটি চক্র উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর পুলিশে কিছু সদস্য রয়েছেন, যাঁদের আচরণ অতি উগ্র ও বেপরোয়া। বিশেষ এক এলাকার লোক হওয়ার কারণে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও তোয়াক্কা করেন না। এ কারণেই ধানমণ্ডি থানার ওসি প্রকাশ্যে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর তাণ্ডব ঘটিয়েছেন থানার সামনে। সাংবাদিকরা তাঁর শাস্তির দাবিতে মিছিল মিটিং করছেন। অথচ তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন।
কর্মকর্তারা আরো জানান, আরো একটি বড় কারণ হচ্ছে, এসব ঘটনার পর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় কখনো প্রচলিত আইনে মামলা হয় না। যেটা হয় সেটা হচ্ছে বিভাগীয় তদন্ত, বিভাগীয় মামলা, প্রত্যাহার, সতর্কীকরণ; বড়জোর সাময়িক বরখাস্ত। আজ পর্যন্ত সাংবাদিককে মারধর করার কারণে ফৌজদারি আইনের আওতায় সাজা হয়েছে- এ রকম একটি নজিরও নেই। বরং অভিযুক্তরা কয়েক দিন পর নানা তদবিরে আবার বহাল তবিয়তে কাজ শুরু করে দেন। আর সাম্প্রতিককালের ঘটনাবলি দেখে ওই কর্মকর্তাদের কাছে মনে হচ্ছে, পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার কারণেই পুলিশের একটি মহল সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত এবং এসব ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। এর পেছনে কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও ইন্ধন আছে বলে তাঁরা মনে করেন।
নির্যাতনের চালচিত্র : পুলিশ, সংবাদমাধ্যম ও হাসপাতাল সূত্র মতে, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গত রবিবার পর্যন্ত সারা দেশে ১৩ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন আর পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩৭০ জন। এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন আরো ১৫০ জন। সাগর-রুনি দম্পতিসহ রাজধানীতেই খুন হয়েছেন ১০ জন সাংবাদিক। হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে ২০৭ জনকে।
সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের (সিপিজে) গত বছরের মে মাসের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিচারবিহীন হত্যার কারণে সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ব্যাহত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। প্রতিবেদনে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন বলেন, অনেক সাংবাদিককে হত্যার আগে হুমকি দেওয়া হলেও তাঁদের নিরাপত্তায় সরকার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আইনের দুর্বলতা এবং সরকারের গাফিলতির কারণে হত্যার শিকার সাংবাদিকদের কোনো বিচার বাংলাদেশে হয় না বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশীয় বেসরকারি সংস্থা 'অধিকার'-এর এক জরিপে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে সাংবাদিক খুন হয়েছেন দুজন, আহত ৪৬ জন, প্রহৃত ২৩ জন, হামলার শিকার চারজন এবং হুমকির শিকার হয়েছেন ৩৬ জন। সব মিলিয়ে হত্যাসহ নানাভাবে মৃত্যু ও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এ বছরের প্রথম চার মাসে ১১৭ জন সাংবাদিক। আর এই হিসাব ২০০১ সাল থেকে ধরলে পরিসংখ্যান দাঁড়ায় তিন হাজার ৭৮২ জন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জরিপ মতে, চলতি বছরে দেশে দুজন সাংবাদিক খুন এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। গত বছর খুন হয়েছেন চারজন। একই সময়কালে আহত হয়েছেন ৫৫ জন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের জরিপ মতে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে সারা দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১২৬টি।
১৩ হত্যা : সূত্র মতে, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গলা কেটে হত্যা করা হয় দৈনিক ভোরের ডাক প্রতিনিধি ফরিদুল ইসলাম রঞ্জুকে। গত বছরের ৭ এপ্রিল এক দিনেই ঢাকার উত্তরায় সাপ্তাহিক বজ্রকণ্ঠের সাংবাদিক আলতাফ হোসেন ও চট্টগ্রামের পোর্ট কলোনিতে খুন হন দৈনিক আজকের প্রত্যাশা, সাপ্তাহিক সংবাদচিত্র ও আজকের সূর্যোদয় পত্রিকার সাংবাদিক মাহবুব টুটুল।
২০১০ সালের ৯ মে খুন হন এটিএন বাংলার আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম টুটুল। ২০১০ সালের ২৮ এপ্রিল খুন হন সাপ্তাহিক ২০০০-এর সিলেট প্রতিনিধি ফতেহ ওসমানী। একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর খুন হন বরিশালের মুলাদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন। ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এনটিভির ভিডিও এডিটর আতিকুল ইসলাম আতিককে রাজধানীর মগবাজারে ছিনতাইকারীরা হত্যা করে তাঁর মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়। একই বছর জুলাই মাসে ঢাকার পাক্ষিক মুক্তমনের স্টাফ রিপোর্টার নুরুল ইসলাম ওরফে রানা, আগস্ট মাসে গাজীপুরে সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক সময়-এর নির্বাহী সম্পাদক এম এম আহসান হাবিব বারী, ডিসেম্বরে রূপগঞ্জে দৈনিক ইনকিলাবের সংবাদদাতা ও রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি আবুল হাসান আসিফ খুন হন। গত বছরের ২৮ জানুয়ারি পল্টনের নিজ বাসায় খুন হন সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী রহিমা খাতুন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিক সাগর সারোয়ার ও তাঁর স্ত্রী এটিএন বাংলার সাংবাদিক মেহেরুন রুনি।
হামলা-হুমকি : এ ছাড়া গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবিরকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এর আগে দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও বিশেষ প্রতিনিধি এম আবদুল্লাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। সম্প্রতি রাজধানীর পান্থপথে কালের কণ্ঠের অপরাধ বিভাগীয় প্রধান পারভেজ খানের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী সবুজ ও সেলিমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে পর দিনই তারা জামিন পেয়ে যায়।
গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের ওপর বার বার হামলা করে আওয়ামী লীগসমর্থিত ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মীরা কারওয়ান বাজার মোড়ে কালের কণ্ঠ ও মানবজমিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জসিম রেজা ও সোলাইমান সালমানের ওপর হামলা চালায়।
গত বছর ৮ অক্টোবর নাটোরে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিএনপিদলীয় উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে। ওই ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে হামলার শিকার হন চার সাংবাদিক। তাঁদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে হাত-পা ভেঙে, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়।
গত ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলায় কালের কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার আহসান হাবিব, এনটিভির জেলা প্রতিনিধি লুত্ফর রহমান মিঠু এবং দিগন্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি হারুন আর রশীদ আহত হন। গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি সংবাদ প্রকাশের জের ধরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য বিল্লাল হোসেন রবিনের মাথায় পিস্তল দিয়ে আঘাত করে এবং হত্যার হুমকি দেয়।
গত ১৪ মে পাবনার বেড়ায় কালের কণ্ঠের সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুনের ওপর হামলা চালায় স্থানীয় পেশাদার সন্ত্রাসীরা। এই সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয় এবং তাঁর দলীয় লোক। পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, 'আমার কিছু দুষ্টু আত্মীয় আছে।' এই হামলার পর সন্ত্রাসীরা কেউই গ্রেপ্তার হলো না। উল্টো সাংবাদিক মামুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হলো চাঁদাবাজির মামলা। সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আন্দোলনে নামেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সন্ত্রাসীরা। তারা প্রাণনাশের হুমকি দেয় স্থানীয় আরেক সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ইনকিলাবের আরিফুর রহমান ওরফে আরব আলীকে। এরপর ১৯ মে পাবনায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন এনটিভি ও সমকালের পাবনা জেলা প্রতিনিধি এ বি এম ফজলুর রহমান।
সর্বশেষ গত শনিবার এবং গতকাল আগারগাঁও ও আদালত এলাকায় পুলিশি হামলার শিকার হলেন ছয় সাংবাদিক। আর সোমবার রাতে সন্ত্রাসীদের হামলায় রক্তাক্ত হলেন বিডিনিউজটুয়েন্টিফোরের সাংবাদিকসহ ১০ জন। সন্ত্রাসীরা একটি সংবাদসংস্থার অফিসের ভেতরে ঢুকে এভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে সাংবাদিকদের জখম করতে পারে, তা এত দিন ছিল ধারণার বাইরে।
নির্যাতিতরা আতঙ্কে : এসব ঘটনার পর হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তার অভাব ও আতঙ্কে আছেন আহত সাংবাদিকরা। তাঁদের ধারণা, এর পর যেকোনো সময় তাঁদের ওপর আরো বড় ধরনের হামলা হতে পারে।
পাবনায় আহত সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ফজলুর রহমান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, হামলাকারীরা প্রভাবশালী এবং সন্ত্রাসী প্রকৃতির। পুলিশও তাদের ঘনিষ্ঠ। তাই তারা এখন নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।
একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রথম আলোর তিন ফটোসাংবাদিক। হামলাকারী পুলিশ সদস্যরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন তাঁরাও।
সাংবাদিক নেতাদের ক্ষোভ : ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের নির্যাতন আর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকরা আজ পেশাগত নিরাপত্তার অভাবে আছেন। সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের নিরপেক্ষ বিচার করতে হবে। মুখ দেখে বিচার করলে সাংবাদিকরা সেটা মেনে নেবেন না।
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের আরেক অংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিধানে এই সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। সারা দেশে সাংবাদিক নির্যাতন চলছে। এসব বন্ধ না হলে সারা দেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
জাতীয় পেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের টার্গেট করে হামলা করা হচ্ছে। অচিরেই তা বন্ধ করে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশাহ এবং বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাভলু কালের কণ্ঠকে বলেন, সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত নানা ঝুঁকির মধ্যে তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এখন নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে হত্যা আর নির্যাতন। বিশেষ করে সেই নির্যাতন যদি সরকারের কোনো বাহিনীর দ্বারা ঘটে, তখন আতঙ্কটা আরো বেড়ে যায়। এসব নির্যাতন বন্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর নিরপক্ষে তদন্তসাপেক্ষ সঠিক বিচার দাবি করেন এই দুই সাংবাদিক নেতা।
পুলিশের ভাষ্য : পুলিশের আইজি খন্দকার হাসান মাহমুদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিটি ঘটনাই দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে কেউ বেআইনিভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াবে- সেটা হতে পারে না। আর যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কাউকেই কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হয়নি এবং হবেও না। সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডেরই তদন্ত হচ্ছে এবং হয়েছে।
সাংবাদিক নির্যাতনের কোনো
জবাব নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে

No comments

Powered by Blogger.